শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

নিজস্ব নিয়ম মেনে শাপলা প্রতীকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক 
প্রকাশিত: ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম

শেয়ার করুন:

শাপলা প্রতীক: নিজস্ব নিয়ম-কানুন মেনে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি

নিজস্ব নিয়ম-কানুন মেনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দাবিকৃত ‘শাপলা’ প্রতীকের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন ইসি আবদুর রহমানেল মাসউদ। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার মন্তব্য ঘিরে আলোচনার মধ্যে ঢাকা মেইলকে এ কথা বলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, শাপলা প্রতীক যদি এনসিপিকে দেওয়া হয়, তবে নাগরিক ঐক্য কোনো মামলা করবে না বা কোনো দাবি রাখবে না।


বিজ্ঞাপন


মান্নার এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিত কমিশন শাপলা প্রতীকের বিষয়ে পুনরায় বিবেচনা করবে কি না- জানতে চাইলে ইসি আবদুর রহমানেল মাসউদ ঢাকা মেইলকে বলেন, কে চাইলো, কে চাইলো না-এটা তো প্রশ্ন না। কেউ যদি বলে দিয়ে দেন বা আমাদের কোনো আপত্তি নেই-এমন বিষয় তো হওয়ার কথা না। কারণ এটা কমিশনের সিদ্ধান্ত। কিন্তু কেউ বলবে দিয়ে দেন, আর কেউ বলবে দিয়েন না, এটা আমার মনে হয় কমিশনের কাছে বিবেচনার বিষয় হবে না। বিবেচনার বিষয়গুলো বিবেচনা করে যদি কমিশন মনে করে দেবে, না হয় দেবে না।’

এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ‘একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য নিজস্ব নিয়ম-কানুনে যে সমস্ত ফ্যাক্টর কাজ করে, সেগুলো নিয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। 

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক পোস্টে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) যদি শাপলা প্রতীক পায়, তাহলে এ নিয়ে কোনো মামলা করব না। 

এর পরপরই জাতীয় নাগরিক পার্টির ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে ওই পোস্ট শেয়ার করে বলা হয়েছে অবশেষ এনসিপির শাপলা প্রতীক পেতে আর কোনো আইনি এবং রাজনৈতিক কোনো বাধাই অবশিষ্ট রইলো না। 


বিজ্ঞাপন


নির্বাচন কমিশন এনসিপিকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দ দিতে প্রথমে যখন আইনি বাধা দেখালো তখন এনসিপির লিগ্যাল উইং হাতে-কলমে ধরে ধরে বুঝিয়েছে যে এনসিপির শাপলা প্রতীক পেতে কোনো আইনি বাধা নেই। তখন নির্বাচন কমিশন হাজির করলো রাজনৈতিক বাধা রয়েছে। এনসিপি বললো কী সেটা? তারা (ইসি) জবাবে বললো শাপলা প্রতীক আপনাদের আগে নাগরিক ঐক্য চেয়েছে। তাই শাপলা দিলে তাদেরকেই দিতে হবে। 

কিন্তু আজ যখন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না জানিয়ে দিলেন যে, এনসিপিকে শাপলা দিলে তাদের দল থেকে কোনো মামলা করা হবে না। তখন নির্বাচন কমিশন যে রাজনৈতিক বাধার কথা বলেছিল সেটিও আর থাকছে না। অর্থাৎ, শাপলা পেতে আইনি এবং রাজনৈতিক কোন প্রতিবন্ধকতাই নেই। এছাড়া মান্নার এ পোস্ট এনসিপির একাধিক নেতা নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে শেয়ার করে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছে।

এর আগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর শাপলা প্রতীক প্রথমে নাগরিক ঐক্য চেয়েছিলো, তাদের দেওয়া হয়নি। পরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চেয়েছে, কাউকেই দেওয়া হয়নি, উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, শাপলা প্রতীক কেন দেওয়া হবে না, তার ব্যাখ্যা দেবে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত বছরের সেপ্টেম্বর রাজনীতিবিদ মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পায়। গণ প্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী নাগরিক ঐক্যকে নিবন্ধন দেওয়ার পাশাপাশি দলীয় প্রতীক দেওয়া হয় কেটলি। নিবন্ধন পাওয়ার নয় মাসের মাথায় গত ১৭ই জুন নির্বাচন কমিশনের কাছে দলীয় প্রতীক পরিবর্তনের জন্য আবেদন জানায় নাগরিক ঐক্য। তারা দলীয় প্রতীক 'কেটলি'র পরিবর্তে শাপলা বা দোয়েল পাখি বরাদ্দের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করে।

ইসিতে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫২টি (আওয়ামী লীগসহ)। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। এ পর্যন্ত ৫৬টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও পরবর্তীতে শর্ত পূরণ, শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়। দলগুলো হলো- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা। সস্প্রতি আদালতের আদেশে জামায়াতে ইসলামী ও জাগপা নিবন্ধন ফিরে পেলেও ইসি কেবল জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ মোট ৫৬টি প্রতীক ৫৬টি দলের জন্য নিবন্ধিত রয়েছে। এক্ষেত্রে নিবন্ধিত দলের বাইরের প্রতীকগুলো নতুন ও সংসদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বরাদ্দ দেওয়া হবে।

ইসি সচিব আখতার আহমেদ ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, এনসিপিসহ দুটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়াও ১৩টি দলের আবেদন পর্যালোচনায় রয়েছে।

এমএইচএইচ/ক.ম 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর