এলডিসি গ্রাজুয়েশনের জন্য বাংলাদেশ এখনো প্রস্তুত নয় জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়া এই মুহূর্তে দেশের বর্তমান এবং আগামী দিনের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য সহায়ক হবে না।’
রোববার (২১সেপ্টেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের বৈঠক শেষে আমির খসরু এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
বৈঠকে এলডিসি গ্রাজুয়েশন, শ্রম আইন সংশোধনসহ ব্যবসায় খাতে নানা সমস্যার বিষয়াদি নিয়ে ব্যবসায়ী নেতারা আলোচনা করেন।
বৈঠকে বিজেএমইএ-এর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান তানভিরুর রহমান, সাবেক সভাপতি তপন চৌধুরী ও নাসিম মনজুর, এফবিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি একে আজাদ, প্রাণ গ্রুপের প্রধান আহসান খান চৌধুরী, বিকেএমইএ-এর সভাপতি এম এ হাতেম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন(বিইএফ) সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, বিজেএমইএ-এর মহাসচিব রশিদ আহমেদ হোসাইনী, ঢাকা চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পরে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের বিজনেস কমিউনিটিতে যারা জড়িত আছেন, তাদের প্রায় সকলে আজকে এখানে উপস্থিত। বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসেবে যে বড় বড় ব্যবসায়ীরা আছেন, আজকে তারা সবাই এখানে আছেন। তাদের আসার পেছনে দুটি কারণ আছে। একটা হচ্ছে আমাদের এলডিসি গ্রাজুয়েশন এবং আরেকটা লেবার ইস্যু।’
তিনি বলেন, ‘এটা কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য-বিনিয়োগে আগামী যে সম্ভাবনা আছে সেটাকে প্রটেক্ট করার জন্য, রক্ষা করার জন্য আমাদের কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এ ব্যাপারে আমরা বিস্তারিত ওনাদের কথা শুনেছি, ওনারা সুবিধা-অসুবিধাগুলো বলেছেন।’
বিজ্ঞাপন
বিএনপি নেতা বলেন, ‘এখান থেকে যেটা প্রতীয়মান হয় যে, এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়া এই মুহূর্তে বাংলাদেশের বর্তমান এবং আগামী দিনে ব্যবসা-বাণিজ্য-বিনিয়োগের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে না। কারণ, বাংলাদেশ এখন একটা বড় ধরনের আপরাইজিংয়ের পরে আমরা এখন কিন্তু দেশটার অর্থনীতিকে রক্ষা করার জন্য সকলে মিলে কাজ করছি, এটা সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করছি। বিগত দিনে এলডিসির গ্রাজুয়েশনের পরিপ্রেক্ষিতে যে পরিসংখ্যানগুলো দেওয়া হয়েছিল, এগুলো প্রশ্নবিদ্ধ আছে।’
আমির খসরু বলেন, ‘সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতি, বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্য যদি আমরা অব্যাহতভাবে এগিয়ে যেতে চাই, যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি, তাহলে এই মুহূর্তে এলডিসির গ্রাজুয়েশন স্থগিত রাখার বিষয়ে আমরা সবাই আলোচনা করেছি। এটা স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয়তা আছে। এ ব্যাপারে ওনারা এটাও মতামত দিয়েছেন যে, এই সরকারকে এলডিসিরি বিষয়ে একটা চিঠি দেওয়া দরকার জাতিসংঘকে যে, বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে এখন রেডি আছে কি না? বর্তমান সরকারকে অনুরোধ করা হচ্ছে, তারা যেন একটা চিঠি দেয় এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা এখানে এসে সরজমিনে দেখে বাংলাদেশের প্রস্তুতিটা আাছে কি না। এটা প্রত্যক্ষভাবে দেখার প্রয়োজনীয়তা আছে।’
লেবার ইস্যুতে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে আমির খসরু বলেন, ‘লেবার ইস্যুতে রেটিফিকেশনের ব্যাপারে ওনাদের কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু অন্যান্য ইউনিয়নের নাম্বার নিয়ে যে বিষয়গুলো আছে, সেখানে এই পরিবর্তনটা আনলে সত্যিকার অর্থে শ্রমিকদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে কি না, এটা বিবেচনা করা দরকার কিংবা ইউনিয়নগুলো এফেক্টিভলি কাজ করতে পারবে কিনা এটাও বিবেচনা করা দরকার’
তিনি আরও বলেন, ‘এগুলো বিবেচনা না করে তাড়াহুড়া করে যদি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তাহলে আগামী দিনে একবার যদি একটা ব্যাড মেসেজ যায় দেশের ভেতরে, দেশ বাইরে, এটা থেকে বেরিয়ে আসা খুব কঠিন হবে।’
বিইউ/এএইচ

