সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গানের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশিষ্ট ওলামা মাশায়েখরা। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোতে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন তারা। এ দাবিতে শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজ শেষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম থেকে ‘জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের’ ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
মিছিলপূর্ব সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির ও শায়খে চরমোনাই মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, গানের শিক্ষক নয়, বরং ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ আজ সময়ের দাবি। প্রতিটি মুসলমানের জন্য দ্বীনি ইলম শিক্ষা করা ফরজ। আমাদের দেশে ৯২ শতাংশ মানুষ মুসলমান, অথচ শিক্ষা ব্যবস্থায় সেই ফরজ শিক্ষা নিশ্চিত করা হয়নি। ফরজে আইন বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের, কিন্তু তারা তা পালন করছে না।
বিজ্ঞাপন
মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, আমরা সরকারকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিতে চাই- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গানের শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ করতে হবে। ইসলামি শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতির নৈতিক উন্নতি সম্ভব নয়। যদি সরকার ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগে গড়িমসি করে কিংবা এই দাবি উপেক্ষা করে, তবে আমরা দেশের সর্বস্তরের আলেম-ওলামা ও সাধারণ মুসলিম জনতাকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে নামব। প্রয়োজনে সরকারকে আমরা বাধ্য করবো।
বক্তারা বলেন, আমাদের সন্তানদের ইসলামি আদর্শে গড়ে তুলতে হলে গানের শিক্ষক নয়, দরকার ধর্মীয় শিক্ষক। গানের মাধ্যমে নৈতিকতা আসে না, বরং নষ্ট হয়। কোরআন-হাদিসের আলোকে শিক্ষা দিলে তারা হবে প্রকৃত মানুষ। দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গানের শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ চলছে, যা শিক্ষার্থীদের নৈতিক মূল্যবোধ গঠনের পরিপন্থী। এর পরিবর্তে কোরআন-হাদিসের আলোকে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ করলে শিক্ষার্থীরা সঠিক শিক্ষা ও নৈতিকতা অর্জন করবে বলে তারা মনে করেন।

তারা অভিযোগ করেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গানের শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ দেশের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামকে উপেক্ষা করে বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাব ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা চাই প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে যোগ্য আলেম নিয়োগ করা হোক, যাতে নতুন প্রজন্ম ধর্মীয় জ্ঞান ও নৈতিকতা অর্জন করতে পারে।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণ থেকে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় অংশগ্রহণকারীদের গানের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল, ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিতকরণ এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামি শিক্ষার প্রসার ঘটানোর দাবি জানিয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এসময় জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুফতি রেজাউল করিম আবরার, প্রচার সম্পাদক হামিম আব্দুল আজিজ, কলরবের প্রশাসনিক পরিচালক মুফতি সাঈদ আহমদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ক.ম/

