নারী শিক্ষার্থীকে নিয়ে অনলাইনে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। বরং, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল যে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে ছাত্রশিবির।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম এক যৌথ বিবৃতিতে এ অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।
বিজ্ঞাপন
বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের শীর্ষ নেতারা বলেন, ছাত্রদল নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রশ্নে নিজেদের দায়দায়িত্ব ও অতীত কলঙ্ক ঢাকতেই এখন ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে নোংরামি শুরু করেছে। এটি রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়াত্বেরই প্রকাশ।
তারা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের নানা ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আগে থেকেই নারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সাইবার বুলিং, স্লাট শেমিং, শ্লীলতাহানি এবং এমনকি ধর্ষণের মতো জঘন্য অভিযোগে অভিযুক্ত। তারা এসব ঘটনায় ছাত্রলীগের মতোই সমান অপরাধী। ২০০২ সালে বুয়েটের মেধাবী ছাত্রী সাবেকুন্নাহার সনির হত্যাকাণ্ড কিংবা ঢাবির শামসুন্নাহার হলে নারীদের ওপর হামলার দাগ এখনো ইতিহাসের পাতায় স্পষ্ট।
ছাত্রশিবির নেতারা দাবি করেন, অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং উল্টোভাবে তারা নিজেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির অভিযুক্ত ব্যক্তির অনৈতিক আচরণের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে, যাতে প্রশাসন তার বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
নারী নিরাপত্তার বিষয়ে ছাত্রশিবির বরাবরই স্পষ্ট ও অনড় অবস্থানে রয়েছে বলেও দাবি করা হয় বিবৃতিতে। নেতারা বলেন, নারী শিক্ষার্থীদের মর্যাদা ও নিরাপত্তার প্রশ্নে ছাত্রশিবির কখনোই আপস করেনি, করবেও না। কিন্তু এই সংবেদনশীল ইস্যুকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানিয়ে ছাত্রদল নিজেদের হীন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের অপচেষ্টায় লিপ্ত।
বিজ্ঞাপন
বিবৃতিতে ছাত্রদলকে সরাসরি হুঁশিয়ার করে বলা হয়, ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রচারণা বন্ধ করুন। রাজনীতিতে নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে শিবিরের নাম টেনে সস্তা জনপ্রিয়তা পাওয়ার চেষ্টা করবেন না। ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে শিক্ষার্থীরা খুব ভালোভাবেই বুঝে নিতে পারে—কে আসল অপরাধী, আর কে নির্দোষ।
ছাত্রশিবির বলছে, কোনো ঘটনার পরপরই দায় চাপিয়ে দেওয়ার পুরনো সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা উচিত ছাত্রদলের। বিবৃতির শেষ অংশে বলা হয়, যে রাজনীতি অপপ্রচারকে হাতিয়ার করে, তা টিকে থাকতে পারে না। নারী নির্যাতনের মতো স্পর্শকাতর ইস্যুতে ভুল তথ্য ছড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার অপচেষ্টা ছাত্রদলের মুখোশ খুলে দিয়েছে।
এইউ

