রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ১৮ মাসে ১ কোটি মানুষকে চাকরি দেবে: আমীর খসরু

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১০:৩৩ পিএম

শেয়ার করুন:

১৮ মাসে ১ কোটি চাকরি সৃষ্টির প্রস্তুতি রয়েছে: আমীর খসরু
হোটেল সারিনাতে গোলটেবিল বৈঠকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘ক্ষমতায় গেলে প্রথম ১৮ মাসে এক কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টির যে প্রতিশ্রুতি বিএনপি দিয়েছে, তা কোনো রাজনৈতিক স্লোগান নয়; বরং সুপরিকল্পিত, বাস্তবভিত্তিক ও বাস্তবায়নযোগ্য উদ্যোগ। এ লক্ষ্যে আমাদের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা হোমওয়ার্ক করে, সম্ভাব্যতা বিশ্লেষণ করে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্যোক্তা তৈরি, রেমিট্যান্স বৃদ্ধির জন্য কর্মী প্রস্তুতকরণ এবং সৃজনশীল ও ডিজিটাল খাতকে কাজে লাগানো।’


বিজ্ঞাপন


বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে ঢাকার হোটেল সারিনাতে ‘রাউন্ডটেবল অন স্কিলিং বাংলাদেশ : অ্যাডভান্সিং দ্য স্কিলস অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট ইকোসিস্টেম ফর ন্যাশনাল গ্রোথ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। 

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এই এক কোটি চাকরির একটি বড় অংশ আত্মকর্মসংস্থানভিত্তিক হবে। আমরা চাই দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে তরুণরা যেন নিজ নিজ দক্ষতা দিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে দেশে কিংবা বিদেশে।’

গ্লোবাল এন্ট্রাপ্রেনারশিপ নেটওয়ার্ক আয়োজিত আলোচনায় তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য দক্ষতা উন্নয়নই হবে ভবিষ্যতের প্রধান হাতিয়ার। তরুণদের উপযুক্ত দক্ষতা না থাকার কারণে আজ বিদেশি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে মাঝারি ও উচ্চ পর্যায়ের নিয়োগে বাইরের জনশক্তির ওপর নির্ভর করছে। শুধু প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি করলেই দক্ষতা উন্নয়ন হয় না। এর জন্য প্রয়োজন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পখাতের মধ্যে কার্যকর সংযোগ, বাস্তবভিত্তিক প্রশিক্ষণ মডেল এবং সঠিক মানদণ্ডে সার্টিফিকেশন।’

তিনি বলেন, ‘কর্মসংস্থানের এই রোডম্যাপে আত্মকর্মসংস্থানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন ও মাইক্রোবিজনেসের মাধ্যমে অর্থনীতিতে যুক্ত করাই হবে মূল কৌশল।’


বিজ্ঞাপন


দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, ‘অর্থনীতির গঠনগত দুর্বলতা এবং পরিকল্পনাহীন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি পায়নি। এখন সময় এসেছে দক্ষতা উন্নয়নকে মূলধারায় আনা এবং এটিকে জাতীয় অগ্রাধিকারের জায়গায় স্থান দেওয়ার। প্রযুক্তি এখন বৈশ্বিক বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু। বাংলাদেশ যদি প্রযুক্তি ও মানবসম্পদে বিনিয়োগ না করে, তাহলে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে। গ্রামীণ হস্তশিল্প, লোকসংগীত, থিয়েটার, ফ্যাশন ডিজাইন, শিল্পকলা—এসব খাতে প্রচুর জনশক্তি কাজ করছে, কিন্তু তাদের উপার্জনমুখী কোনো প্ল্যাটফর্ম নেই। যদি দক্ষতা উন্নয়ন, ডিজাইনিং, ব্র্যান্ডিং ও বিপণন সহায়তা দেওয়া যায়, তাহলে এসব খাত বিশাল অর্থনৈতিক রূপান্তর আনতে পারে।’

রাজনৈতিক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের রোডম্যাপ ইতিমধ্যে এসেছে। জনগণ অপেক্ষায় আছে একটি প্রতিনিধিত্বশীল, জবাবদিহিমূলক সরকারের। নির্বাচনের পর একটি বড় ধরনের টার্নঅ্যারাউন্ড আসবে অর্থনীতিতে; দক্ষতা উন্নয়ন হবে এর মূল চালিকাশক্তি।

প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সিনিয়র সহকারী প্রেসসচিব আশিক ইসলাম বলেন, ‘গ্লোবাল ভিলেজের অংশ হিসেবে বিশ্বে কী ঘটছে সেটা আমাদের জানতে হবে। উন্নত দেশগুলো রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করতে যাচ্ছে। তাই এখনই এ বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।’

গোলটেবিল বৈঠকে জাতীয় দক্ষতা ইকোসিস্টেমের দিক, দৃষ্টিভঙ্গি ও চ্যালেঞ্জ এবং দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে ১০০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স সৃষ্টির সম্ভাবনা বিষয়ে কী-নোট উপস্থাপন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার এবং দক্ষতা ও মাইগ্রেশন বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ নুরুজ্জামান।

গ্লোবাল এন্ট্রাপ্রেনারশিপ নেটওয়ার্ক (জিইএন) বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য ও নারী উদ্যোক্তা মাহমুদা হাবিবা, জিইএনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এম হাসান রিপন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ প্রমুখ।

বিইউ/এআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর