জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর তরুণ নেতৃত্বের হাত ধরে গঠিত রাজনৈতিক দল ‘এনসিপি’ সম্পর্কে দেশের ৩৭ শতাংশ নাগরিক কিছুই জানেন না বা নামও শোনেননি। ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) সাম্প্রতিক ‘পালস সার্ভে’র তথ্য অনুযায়ী, রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচিত হলেও এখনও একটি বড় অংশের কাছে দলটি অজানা রয়ে গেছে।
সোমবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় আর্কাইভ মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের মূল্যায়ন, সংস্কার, নির্বাচন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তা নিয়ে’ জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
জরিপে দেখা যায়, ৬৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী এনসিপি সম্পর্কে জানেন বা অন্তত নাম শুনেছেন। তবে তরুণদের দল গঠনকে সমর্থনের প্রশ্নে মতবিরোধ ছিল। ৪৫ শতাংশ সমর্থন জানিয়েছেন, প্রায় সমান ৪৬ শতাংশ সমর্থন করেননি এবং ৯ শতাংশ কোনো মন্তব্য করেননি। দলের টিকে থাকার সম্ভাবনা নিয়েও মতভেদ স্পষ্ট। ৩৮ শতাংশ মনে করেন, দলটি রাজনৈতিক ময়দানে টিকে থাকতে পারবে; ৩৬ শতাংশের মতে, তা সম্ভব নয়; আর ২৬ শতাংশ এ বিষয়ে নিশ্চিত নন বা মন্তব্য করতে চাননি।
বিআইজিডি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, যারা এনসিপি’র সম্ভাবনায় আশাবাদী, তাদের অনেকেই জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্ব, নতুন চিন্তা, ইতিবাচক পরিবর্তনের আশা, সাহস ও সততাকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে, যারা দলটির ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয়ে, তাদের প্রধান যুক্তি অভিজ্ঞতার অভাব, নেতৃত্বের ঘাটতি, ভোটারদের অনাস্থা, রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতার সংস্কৃতি ও সাংগঠনিক দুর্বলতা।
তাদের মতে, এনসিপি নিয়ে জনগণের মনোভাব এখনও মিশ্র। নতুন নেতৃত্ব ও পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা একদিকে ইতিবাচক সাড়া জাগালেও, অভিজ্ঞতা ও সাংগঠনিক সক্ষমতার ঘাটতি পূরণ না হলে রাজনৈতিক বাস্তবতায় দলটির টিকে থাকা কঠিন হতে পারে।

বিজ্ঞাপন
তরুণ নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দলগুলোর ভবিষ্যৎ টিকে থাকা নিয়েও জনমতে স্পষ্ট বিভাজন দেখা গেছে। জরিপে দেখা গেছে, যারা এসব দলকে টিকে থাকতে দেখছেন, তাদের মধ্যে ২৭ শতাংশ মনে করেন- দলগুলোর নতুন ও উদ্ভাবনী চিন্তাশক্তিই তাদের এগিয়ে নেবে। ২৫ শতাংশ বলছেন- জুলাই বিপ্লব থেকে উঠে আসা নেতৃত্ব তাদের দীর্ঘমেয়াদে টিকিয়ে রাখবে। ২৪ শতাংশ বিশ্বাস করেন- ইতিবাচক পরিবর্তনের আশা এই দলগুলোর প্রতি সমর্থন জোগাবে। এছাড়া ২৩ শতাংশ সাহস এবং ২০ শতাংশ সততাকে প্রধান শক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
অন্যদিকে, যারা মনে করছেন এসব দল টিকতে পারবে না, তাদের ৫৩ শতাংশ অভিজ্ঞতার অভাবকে সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ১৮ শতাংশ যোগ্য নেতৃত্বের ঘাটতি এবং ১৫ শতাংশ ভোটারদের আস্থাহীনতা বা জনসমর্থনের অভাবকে প্রধান কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতার সংস্কৃতি ও সাংগঠনিক দুর্বলতাকেও অনেকেই বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এএইচ/এফএ

