রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনাকে কেন্দ্র করে হঠাৎ দেশের একাধিক জায়গায় আন্দোলন শুরু হয়েছে। যাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পরামর্শ করতে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের নিয়ে বৈঠক করলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বৈঠকে যোগ দেওয়া চার দলের নেতাদের নিজেদের মধ্যে ঐক্যকে আরও দৃশ্যমান করার তাগিদ দিয়েছেন। অন্যদিকে নেতাদের পক্ষ থেকে সরকারকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো, শক্ত হাতে দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে চার রাজনৈতিক দলের বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের এসব তথ্য জানান।
বিজ্ঞাপন
আসিফ নজরুল জানান, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে নেতাদের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে নিজেদের মধ্যে রাজনীতির মাঠে নানা কথাবার্তা থাকলেও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তারা এক। আর প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ তাদের বলা হয়েছে, আপনাদের মধ্যে যে ঐক্য আছে তা আরও দৃশ্যমান হলে মানুষ আশ্বস্ত হবে।
জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, বৈঠকে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে। কোনো একটি মহল থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর চেষ্টা চলছে। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এবং গোয়েন্দা সংস্থার দুর্বলতা আছে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
তিনি জানান, সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন, আমরাও সহযোগিতার কথা বলেছি।
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের আর কোনো স্থান থাকবে না, এটা আমরা পরিষ্কার করে বলেছি। নতুনভাবে যেন আর ফ্যাসিবাদ তৈরি হতে না পারে, সে ব্যাপারে সজাগ থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। যেখানেই ফ্যাসিবাদ সেখানেই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। তাই নির্বাচনের আগে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়াও নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে আরও একটিভ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, ফ্যাসিবাদের যেকোনো চক্রান্ত মোকাবেলায় আগামীকাল থেকে মাঠে নামবে ছাত্র সংগঠনগুলো। প্রয়োজন হলে প্রতিহতের কর্মসূচি দেবে বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলো।
তবে বৈঠক শেষে বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো কথা বলা হয়নি। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, সরকারের পক্ষ থেকে কথা বলা হবে।
এর আগে রাত ৯টায় চারটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম মেম্বার অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন ও যুগ্ম-মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিইউ/জেবি

