গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছে বিএনপি। দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দলটি বলছে, পতিত শেখ হাসিনার সমর্থকরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ধ্বংস করার লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির সভায় এ অভিযোগ করা হয়।
বিজ্ঞাপন

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে অংশ নেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বীর বিক্রম ও অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
বুধবার (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে এনসিপির সভায় আওয়ামী লীগের সমর্থক ও দুর্বৃত্তদের হামলায় চারজন নিহত হওয়ায় গভীর নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি।
তারা বলেন, ‘পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করার জন্য ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনকারী জাতীয় নাগরিক পার্টির সমাবেশে আক্রমণের ঘটনা ঘটায়। ফলশ্রুতিতে সরকারকে ১৪৪ ধারা ও কারফিউ জারি করতে হয়, যা এই মুহূর্তে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার নীলনকশা বলে মনে করা হচ্ছে।’
বিজ্ঞাপন

‘একটি মহল পরিকল্পিতভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ রুদ্ধ করতে চাইছে। স্থায়ী কমিটির ধারণা, তাদের উদ্দেশ্য আগামী ফেব্রুয়ারিতে প্রতিশ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও ব্যাহত করা।’
একইসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটি গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিকে কোনো ধরনের সুযোগ করে না দিতে রাজনৈতিক দলগুলো অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে তাদের কর্মসূচি নির্ধারণ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে ছিল এনসিপির ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচি। এদিন দুপুর ২টার পর পৌর পার্কের উন্মুক্ত মঞ্চে কর্মসূচি শুরু হয়। সভা শুরুর আগে সমাবেশের মঞ্চে এক দফা হামলা চালায় সেখানকার আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ।

এই হামলার পরও সমাবেশে যোগ দেন এনসিপির নেতারা। এরপর সমাবেশ শেষ হলে ফের তাদের ওপর হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ। ভাঙচুর করা হয় নতুন এ দলটির গাড়িবহর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ এগিয়ে গেলে তাদের উপরও হামলা হয়।
পরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন এনসিপির নেতারা। কিছু সময় পর সেনাবাহিনীর পাহারায় গোপালগঞ্জ থেকে খুলনার দিকে যাত্রা করেন তারা।
এই ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গোপালগঞ্জ শহরে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। এছাড়া সরকার থেকে ঘোষণা করা হয় ২২ ঘণ্টার কারফিউ। বুধবার রাত ৮টা থেকে শুরু হয়েছে সেই কারফিউ, চলবে আজ বিকেল ৬টা পর্যন্ত।
এএইচ

