আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকায় নৌকা প্রতীক নির্বাচন কমিশনের তফসিল থেকে বাদ দেওয়াসহ শাপলা প্রতীককে তফসিলভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
রোববার (১৩ জুলাই) আগারগাঁওস্থ নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এনসিপির প্রতিনিধি দল। প্রতিনধি দলে মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দীন পাটোয়ারী, দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসা উপস্থিত ছিলেন। এসময় নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও ইসি সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। সকাল ১১টা থেকে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে এই বৈঠক চলে।
বিজ্ঞাপন
এরমধ্যে শাপলা প্রতীক তফসিলভুক্ত করা হয়নি। পাশাপাশি নিবন্ধন পুনর্বহালের পর দাঁড়িপাল্লা প্রতীক যুক্ত করা হয়েছে এবং নিবন্ধন স্থগিত থাকলেও নৌকা প্রতীক বহাল রয়েছে। এ প্রসঙ্গ টেনে সিইসির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে ব্রিফিংয়ে অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসা বলেন, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকা অবস্থায় নৌকাকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়নি। আমরা এই বিষয়টি ইসির নজরে এনেছি। আইনগতভাবে নৌকাকে প্রতীক তালিকায় রাখতে পারে না ইসি।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের বিষয়ে সরকারের অন্য কোনো সিদ্ধান্ত বা আদালতের কোনো নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত নৌকা প্রতীক তালিকায় রাখা যাবে না।
অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসা জানান, জাতীয় প্রতীক হচ্ছে ভাসমান শাপলা, ধানের শীষ, তারা, পাটপাতা। চারটি উপাদানের মধ্যে ধানের শীষ এখন বিএনপির প্রতীক। তারকা একটি ও সোনালী আঁশ আরেকটি দলের প্রতীক। জাতীয় ফল কাঁঠালও একটি দলের রয়েছে। জাতীয় প্রতীক আসলে শাপলা নয়, এটাকে মিসব্র্যান্ডিং করা হচ্ছে। জাতীয় প্রতীক চারটি আলাদা আলাদা উপাদানের সমন্বয়ে একটি চিহ্ন। রঙ, ব্যাসার্ধ সবই বিধিতে আছে।
আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পরও নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার তফসিল সংশোধনের দাবি জানিয়ে জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা নৌকার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছি, তালিকার ভেতরে রাখা যাবে না। এটি করতে গেলে ইসিকে ওই তালিকায় সংযোজন-বিয়োজন করতে হবে। সেই জায়গায় আমরা এনসিপির পক্ষ থেকে নতুন দরখাস্ত দিয়েছি- শাপলাকে তালিকাভুক্ত না করার বিষয়ে ইসি ভুল ব্যাখ্যার উপরে দাঁড়িয়ে আছে। নির্বাচনি প্রতীক হিসেবে শাপেলাকে রাখায় আইনে কোনো বাধা নেই তা জানিয়েছি।
বিজ্ঞাপন
আগামীতে এনসিপি নিবন্ধিত হলে যেন শাপলাই বরাদ্দ পায় সে বিষয়ে আবেদন জানানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শাপলাকে তালিকাভুক্ত করার পাশাপাশি এনসিপি নিবন্ধন শর্ত পূরণ করতে পারলে তখন যেন শাপলা প্রতীক বরাদ্দ পায়। কমিশন সাধারণত দরখাস্ত গ্রহণ করে তা বিবেচনা করে থাকে।
নির্বাচন কমিশন আইন মন্ত্রণালয়ে প্রতীক তালিকা পাঠানোর পর নতুন করে এনসিপি আবেদন করে এবার দলটি শাপলা প্রতীক পাবে বলে মনে করে এই এনসিপি নেতা।
গত ২২ জুন এনসিপি গত দলীয় নিবন্ধনের আবেদনে নিজেদের প্রতীক হিসেবে পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রাখে শাপলাকে। তখন এই প্রতীক তারা পাবেন এমন আশাবাদের কথাও জানান এনসিপি নেতারা। তবে নাগরিক ঐক্যও দলীয় প্রতীক হিসেবে কেটলির পরিবর্তে শাপলা দাবি করে। আবার তার আগে মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য ১৭ এপ্রিল একই প্রতীক চায়। এছাড়া দু’টি দলই শাপলা নিয়ে একাধিকবার বৈঠকও করে ইসির সঙ্গে।
বর্তমানে ইসির তফসিলভুক্ত ৬৯টি প্রতীকের মধ্যে ৫০টি প্রতীক বরাদ্দ রয়েছে রাজনৈতিক দলের জন্য। যার মধ্যে স্থগিত হওয়া আওয়ামী লীগের প্রতীকও রয়েছে। অবশিষ্ট ১৯টি প্রতীক রয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের। তবে নতুন তালিকায় আইন মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত হয়ে আসলে জামায়াতের প্রতীক দাঁড়িপাল্লাসহ প্রতীকের সংখ্যা দাঁড়াবে ১১৫টি।
এমএইচএইচ/এফএ

