রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

‘অর্জিত বিজয়কে অর্থবহ করতে জুলাই সনদ ঘোষণা করতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫৯ পিএম

শেয়ার করুন:

‘অর্জিত বিজয়কে অর্থবহ করতে জুলাই সনদ ঘোষণা করতে হবে’

রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার, জুলাই গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান হওয়ার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। তিনি বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করতেও ফ্যাসিবাদীরা লাগামহীন ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তাই অর্জিত বিজয়কে অর্থবহ এবং টেকসই করার জন্য জুলাই সনদ প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই।

আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে উত্তরা পশ্চিম জোন জামায়াত আয়োজিত ইউনিট প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


সেলিম উদ্দিন বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক ও যুগপৎ বিপ্লবের মাধ্যমে আওয়ামী মাফিয়াতন্ত্রীদের পতন হলেও প্রকৃত বিজয় এখনও আসেনি। কারণ, রাষ্ট্রের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে পতিতদের উত্তরসূরীরা এখনও পুরো সক্রিয় রয়েছে। তারা অর্জিত বিজয়কে বিতর্কিত ও বিপথগামী এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য নানাবিধ ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। পতিতদের হাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত রাষ্ট্রীয় কাঠামোর প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত করা দরকার। সর্বোপরি জুলাই গণহত্যাকারীদের বিশ্বাসযোগ্য ও দৃশ্যমান বিচার হওয়া সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি। অনতিবিলম্বে জুলাই সনদ প্রণয়ন, রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও গণহত্যাকারীদের বিচার দৃশ্যমান হওয়ার পর অবিলম্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।

তিনি আরও বলেন, ইউনিট সংগঠনই হচ্ছে সংগঠনের মূল চালিকাশক্তি। তাই ইসলামী আন্দোলনকে গতিশীল ও মজবুত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করতে ইউনিট সংগঠনগুলোকে আরও সক্রিয় ও কার্যকরী করে তুলতে হবে। মূলত, ইউনিটের প্রধান কাজই হবে দাওয়াতি কার্যক্রমের সম্প্রসারণ। এক্ষেত্রে কর্মীদের গণসম্পৃক্ততা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। সর্বোপরি জনগণের সমস্যা চিহ্নিত করে সেসব সমস্যার সাধ্যমতো সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। একইসঙ্গে নিজেদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী সৃষ্টি ও যোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য বেশি বেশি কুরআন-সুন্নাহর চর্চা, ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন; সর্বোপরি আমল-আখলাকের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে। মূলত, প্রতিটি ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে পারলেই ইসলামের বিজয় অনিবার্য হয়ে উঠবে।

মহানগরী উত্তরের আমির বলেন, ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে সারাদেশেই ইতিবাচক হাওয়া বইতে শুরু করেছে। দীর্ঘ পরিসরে জুলুম-নির্যাতন ও ক্র্যাক ডাউনের পর সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক এখন জামায়াতে ইসলামী। সেই ধারাবাহিকতায় সারাদেশেই ন্যায়-ইনসাফের প্রতীক দাঁড়িপাল্লার গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। জনগণ অতীতের মতো আর ভুল করতে চায় না বরং জামায়াত প্রার্থীদের ভোট দিয়ে দেশে আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। মূলত, দেশের জন্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অধীর আগ্রহে তারা অপেক্ষা করছে। তারা আর দেশে কোনো সাজানো ও পাতানো নির্বাচন দেখতে চায় না। অন্তর্বর্তী সরকারকে বিশেষ কোনো মহলের চাপে প্রভাবিত না হয়ে নির্বাচনে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করার আহ্বান জানাই।

উত্তরা পশ্চিম জোন সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে ও উত্তরা মডেল থানা শাখার আমির ইব্রাহিম খলিলের পরিচালনায় প্রতিনিধি সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১৮ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ আশরাফুল হক, উত্তরা পশ্চিম থানা শাখার আমির মাজহারুল ইসলাম, খিলক্ষেত পশ্চিম থানা শাখার আমির হাসনাইন আহমেদ, তুরাগ দক্ষিণ থানা শাখার আমির আবু বকর সিদ্দিক, তুরাগ মধ্য থানা শাখার আমির গাজী মনির হোসাইন, জামায়াত নেতা হারুনুর রশীদ তারিক, মকবুল আহমেদ, কামরুল হাসান, বদিউজ্জামাল, ফিরোজ আলম, মুহিবুল্লাহ বাচ্চু ও আতিক হাসান রুবেল প্রমুখ।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর