‘এভাবে মব চলতে থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে হবে?’ এমন প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
শনিবার (৫ মে) দুপুরে এক আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি এই প্রশ্ন তুলেছেন। সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৫ কতটুকু সুরক্ষা দেয়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এই প্রশ্ন তোলেন।
বিজ্ঞাপন
মান্না বলেন, বিগত যে তিনটা নির্বাচন হয়েছে তাতে মানুষের সামনে মুখ দেখানোর উপায় নেই। পৃথিবীর কাছে আমাদের সম্মান নষ্ট হয়েছে। যদি এই সরকার ভালো একটা নির্বাচন করে যেতে পারে, তবেই দেশের সম্মান বাঁচবে। কিন্তু কী দেখছি? পাটগ্রামে, ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে, বরিশালে যেভাবে মব চলছে, সেটা বন্ধ করতে না পারলে সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে হবে? মব ভায়োলেন্সে দেশের যে অবস্থা, সাবেক সিইসি নুরুল হুদাকে পারলে বিচার করে ফাঁসি দেন; তবে আর মব ভায়োলেন্স সহ্য করার মতো না।
সংস্কার নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে মাহমুদুর রহমান বলেন, আগে আমি নিয়মিত বৈঠকগুলোতে যেতাম, এখন মনে হয় গিয়ে লাভ নেই। অনেক বিষয়েই এমন মতভেদ তৈরি হয়েছে যে আমি জানি না কীভাবে নিষ্পত্তি হবে? ঐকমত্য না হলে প্রফেসর ইউনূস বলেছেন, কিছু চাপিয়ে দেবেন না। তাহলে সংস্কার হবে কীভাবে? এক বছর তো কিছুই করতে পারেননি। বড় দল বা মাঝারি দল আপত্তি করলে সেখানেও যেতে পারেন না। এরকম পরিস্থিতিতে আমার যেটা মনে হয় সবচেয়ে বড় সংস্কার একটা ভালো নির্বাচন।
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, এদেশে মানুষ আর কত জীবন দেবে, আর কত লড়াই করবে? মানুষ প্রাইমারি স্কুল থেকে হাইস্কুলে ওঠে, হাইস্কুল থেকে কলেজে যায়, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়, ধীরে ধীরে মানুষ উন্নত হয়। ধীরে ধীরে মানুষের পরিবর্তন হয়, ইতিবাচক পরিবর্তন। আমরা বারবার যেন সাপ-লুডুর মতো অনেকদূর আগে যাই আবার সাপে কেটে নিচে চলে আসি, আবার আগানোর চেষ্টা করি এটা গ্রহনযোগ্য নয়। এভাবে আর কতদিন।
তিনি আরও বলেন, নতুন সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, অতীতে যারা কিছু অপরাধে শাস্তি পেয়েছিলেন তারা মুক্তি পাবেন, শাস্তি বাতিল হবে। কিন্তু একইসঙ্গে আইনেই আবার এমন ধারা রাখা হয়েছে, যার মাধ্যমে ভবিষ্যতে আবার ওই একই অভিযোগে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে; শাস্তি দেওয়া যাবে। এরচেয়ে বড় অযৌক্তিকতা আর কী হতে পারে? এটা পরস্পর সাংঘর্ষিক।
বিজ্ঞাপন
এই আলোচনা সভায় বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক দিদারুল ভূঁইয়া, এনসিপির ঢাকা মহানগর উত্তরের প্রধান সমন্বয়ক আকরাম হুসাইন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, ভয়েস ফর রিফর্মের সহ-আহ্বায়ক ফাহিম মাশরুর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বিইউ/এফএ