দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’কে নাগরিক ঐক্যের জন্য সংরক্ষণের দাবি নিয়ে ফের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দলটির প্রতিনিধি দল।
বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিক এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞাপন
দলটির অন্য দুই প্রতিনিধি হলেন- নারী ও শিশু বিষয়ক কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক ফেরদৌসী আক্তার ও দফতর সম্পাদক মহিদুজ্জামান মহিদ। বৈঠকে ইসি সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার বলেন, ‘আমাদের একটা কনসার্নের জায়গা ছিল, প্রতীক পরিবর্তনের জন্য আমাদের আবেদন ছিল, সেটা নিয়ে কথা বলতে এসেছি। ১৭ জুন আমাদের নাগরিক ঐক্যের দলীয় কেটলি পরিবর্তন করে পছন্দের ক্রমানুসারে শাপলা ও দোয়েল দিয়েছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত কে নিবন্ধন পাবে, কে নিবন্ধন পাবে না- সেটা নির্ধারিত হয়নি। যদি নতুন প্রতীক শাপলা গেজেটভূক্ত হয়, সেখানে আমরা যেহেতু আগে আবেদন করেছি, আমাদের সেক্ষেত্রে বরাদ্দ দেওয়া হবে। আমরা অবশ্যই বঞ্চিত হবো না, সেটা আমরা যেমন প্রত্যাশা করি, তেমনি কমিশনও নিশ্চিত করেছে।’
সাকিব আনোয়ার বলেন, ‘আমরা যখন নিবন্ধন পাই, তখন আর আমরা পছন্দ অনুযায়ী প্রতীক পাইনি। এ বিবেচনায় আমরা গত ১৭ জুন প্রতীক পরিবর্তনের জন্য আবেদন করি এবং পছন্দের ক্রম শাপলা ও দোয়েল চাই। আমাদের কনসার্নের জায়গা হচ্ছে, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনভাবে তথ্য দেখেছি, কমিশন তাদেরকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে দিয়েছে। কনসার্নটা আমরা সিইসিকে জানাতে এসেছি। নিবন্ধনের কাজ শেষ না করে এ ধরনের বিষয় আসাটা যৌক্তিক নয়।’
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘সিইসি ও সচিবকে আমরা জানিয়েছি, নতুন প্রতীক শাপলা গেজেটভুক্ত হয় কিংবা দোয়েল যুক্ত হয়; সেক্ষেত্রে ১৭ জুন যেহেতু আমরা আবেদন করেছি এবং পরবর্তী সময়ে একই মার্কা নিয়ে আরেকটা আবেদন হলেও শাপলা নাগরিক ঐক্যেরই প্রাপ্য। সেটার যেন ব্যত্যয় না ঘটে।’
সাকিব আনোয়ার বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে’ আওয়ামী লীগ আমলের মতো সরকারি দল বলে কোনো সুযোগ সুবিধা পাবে, এমন বিষয় এখন নেই বলে সিইসির কাছে তুলে ধরা হয়েছে। কমিশন বিষয়টি বিবেচনা করবে। আমাদেরকে আগে নিবন্ধিত দল হিসেবে প্রতীকটি বরাদ্ধ দেওয়া হবে বলে প্রত্যাশা করি। প্রতীক তালিকা থেকে প্রাপ্তি সাপেক্ষে অন্য দল যেটা পাবে, তাদের সেটা বরাদ্দ দিতে হবে।’
কমিশন কী বলেছেন জানতে চাইলে নাগরিক ঐক্যের সাংগঠিক সম্পাদক বলেন, ‘অবশ্যই, আপনারা আগে আবেদন করেছেন। এখন পর্যন্ত যারা আবেদন করেছে, আমরা চাই দল নিবন্ধন পাক। যে দলের বিষয়ে আলোচনা চলছে, সামনে দিনে তারা রাজনীতিতে, নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। নিবন্ধন পাক সেটা আমরা চাই। নিবন্ধন হয়ে গেছে এমন নয়, রিকোয়ারমেন্ট ফুলফিল করার পরেই সেটা হবে।’
সাকিব আনোয়ার বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছি। প্রতীক পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগের কথাও জানিয়েছি। কমিশন ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে কমিশন ভোটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে- এটাকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। আমরা প্রত্যাশা করি, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে যাচ্ছে- প্রধান উপদেষ্টা যেভাবে বলেছেন, সেভাবে আমরাও চাই।’
নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন পেতে ১৪৪টি দলের ১৪৭টি আবেদন এসেছে। গত ২২ জুন আবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিনে জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) দলীয় প্রতীক হিসেবে শাপলা চেয়েছে।
বর্তমান দল নিবন্ধনের আবেদনের যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলমান। ইতোমধ্যে আবেদনগুলোর যাচাই-বাছাই শেষে প্রতিবেদন তৈরির জন্য সাতজন কর্মকর্তাকে দায়িত্বও দিয়েছে ইসি।
২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোটের আগে নাগরিক ঐক্য নিবন্ধনের আবেদন করেছিল। তখন নিবন্ধন না পাওয়ায় পছন্দের প্রতীকও পায়নি। ওই সময় অন্য দলগুলো নিবন্ধন পেয়ে তাদের পছন্দের প্রতীকও পায়। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সেপ্টেম্বরে নিবন্ধন পায় নাগরিক ঐক্য।
এমএইচএইচ/এএইচ

