সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

যারা নির্বাচন বিলম্বিত করবে তাদের জনপ্রিয়তা কমবে: এ্যানী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৬ জুন ২০২৫, ০৭:২৯ পিএম

শেয়ার করুন:

Ani
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি।

বিদেশি বিনিয়োগ, আইনশৃঙ্খলার অবনতিসহ বিভিন্ন কারণে জাতীয় নির্বাচন অতি দ্রুত দরকার উল্লেখ করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, ‘যারা নির্বাচন বিলম্বিত করবে তাদের জনপ্রিয়তা কমবে।’

তিনি বলেন, ‘যারা দেরিতে নির্বাচন চায়, তারা মূলত মাঠ সাজিয়ে আরও বেশি কাজ করতে চায়। তারা ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে চায়। এজন্য তাদের সময় দরকার। যার কারণে তারা নির্বাচন দেরিতে চায়।’


বিজ্ঞাপন


বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন এ্যানী।

আগামীর বাংলাদেশে বিএনপির কূটনীতি কী হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকবে, প্রভু থাকবে না। ভারতের কারণে সার্ক আজ অকার্যকর। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগও সমানভাবে দায়ী। বিএনপি এলে আবার সার্ক গতিশীল হবে। প্রত্যেক বিদেশি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য আলাদা আলাদা পলিসি হবে।’

বিএনপি ক্ষমতায় এলে মিডিয়ার কী সংস্কার করবে, কী পরিকল্পনা? এমন প্রশ্নের জবাবে এ্যানী বলেন, ‘বিএনপি ফ্রি মিডিয়ায় বিশ্বাসী।’

এরশাদ ও হাসিনা স্বৈরাচার ছিলেন। কোনটি বেশি গুরুত্ব দেবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের দল দাবি করলেও তারা মুক্তিযুদ্ধ করেনি। তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে আরাম-আয়েশে ছিল। আওয়ামী লীগ কখনো জনমানুষের দল ছিল না। এরশাদ ছিল স্বৈরাচার। কিন্তু আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারের পাশাপাশি কর্তৃত্ববাদী ছিল। দেশ ধ্বংসে এরশাদের চেয়ে আওয়ামী লীগ এগিয়ে।’


বিজ্ঞাপন


তারেক জিয়া দেশে ফিরবেন কবে জানতে চাইলে এ্যানী বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। প্রস্তুতি নিতে সময় নিচ্ছেন।’

আওয়ামী লীগ ব্যক্তিগত দুর্নীতিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গত ১৫ বছর সাপোর্ট দিয়েছে, বিএনপি আগামীতে কী করবে- এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি এমন কাজ করবে না, যেভাবে আওয়ামী লীগ করেছে।’

২৪-এর আন্দোলনটা কী, জানতে চাইলে এ্যানী বলেন, ‘জুলাইয়ের আন্দোলন গণঅভ্যুত্থান। বিএনপি একটি দায়িত্বশীল ও অভিজ্ঞ দল হিসেবে দেশের সংকটময় মুহূর্তে সঠিক বার্তা দিয়েছে। তিনি খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকা অবস্থায় তারেক রহমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দেশের অস্থির পরিস্থিতিতে মানুষকে আশ্বস্ত করেন। বিশেষ করে, আগস্টের ৫, ৬, ৭ ও ৮ তারিখের অগ্নিসংযোগ এবং পুলিশের প্রতি মানুষের ঘৃণা ও হামলার ঘটনায় তারেক রহমান ঐক্যের ডাক দিয়ে সব রাজনৈতিক দল ও দেশের মানুষের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।’

এ্যানি বলেন, ‘গত ১৭ বছরের দুঃশাসন সত্ত্বেও তারেক রহমানের দূরদর্শিতায় দেশে বড় ধরনের কোনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। তারেক রহমানের প্রতি মানুষের আস্থা, বিশ্বাস ও সম্মানের মূল কারণ এটাই এবং এ আস্থা থেকেই বিএনপি ভরসা করে যে, আগামী দিনে তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’

বিএনপি নেতার অভিযোগ, ‘আওয়ামী সরকার রক্তচক্ষু দেখিয়ে শুধু বিএনপি নয়, দেশের সব রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ মানুষকে ঘায়েল করেছে। যার ফলে দেশের রাজনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং স্বাভাবিক রাজনৈতিক চর্চার কোনো সুযোগ ছিল না।’

Ani2

তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে ভোটের কোনো পরিবেশ ছিল না, ২০১৮ সালে রাতের আঁধারে ভোট হয়েছে এবং ২০২৪ সালে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে নির্বাচন করা হয়েছে।’ তার মতে, ‘স্বাধীনতার পর থেকে আওয়ামী লীগ কখনোই প্রকৃত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী ছিল না।’

তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলকে গণতান্ত্রিক ও উন্নয়নমুখী হিসেবে তুলে ধরেন। 

এ্যানী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান নিজের হাতে অস্ত্র ধরে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রের সূচনা করেছেন এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন। আর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের সূচনা হয়।’

তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বা খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে কোনো ফ্যাসিবাদ, কর্তৃত্ববাদ বা স্বৈরাচারী মনোভাব ছিল না।’

তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির চলমান আন্দোলন ও সংস্কার প্রক্রিয়ার ওপর বর্তমান সরকারও সংস্কার নিয়ে আলোচনা করতে বাধ্য হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন এ্যানি। 

তিনি বলেন, ‘বিএনপির ৩১ দফা অভূতপূর্ব জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।’ ‘১০ বছরের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবে না’ তারেক রহমানের এ প্রস্তাবটির প্রশংসা করে এ্যানি এটিকে দেশের জন্য তারেক রহমানের রাজনৈতিক ও চিন্তাভাবনার ফল বলে উল্লেখ করেন।

‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ এর সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন। সঞ্চালনা করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।

অনুষ্ঠানে সহসভাপতি গাযী আনোয়ার, যুগ্ম সম্পাদক নাদিয়া শারমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাই তুহিন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিজান চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক এমদাদুল হক খান, আপ্যায়ন সম্পাদক মোহাম্মদ ছলিম উল্লাহ (মেজবাহ), কল্যাণ সম্পাদক রফিক মৃধা, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. জুনায়েদ হোসাইন (জুনায়েদ শিশির), মো. সলিম উল্ল্যাসহ (এস. ইউ সেলিম) সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বিইউ/এএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর