সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

প্রশাসক ও প্রকৌশলীদের রুম ছাড়া নগরভবনের সব তালা খুলে দেওয়ার ঘোষণা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২২ জুন ২০২৫, ০৪:১৪ পিএম

শেয়ার করুন:

প্রশাসক ও প্রকৌশলীদের রুম ছাড়া নগরভবনের সব তালা খুলে দেওয়ার ঘোষণা

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক এবং প্রকৌশলীদের রুম ছাড়া নগর ভবনের সব রুমের তালা খুলে দেওয়া হবে আগামীকাল। গত ১৪ মে শিকল দিয়ে নগর ভবনের রুমগুলোতে তালা দেওয়া হয়েছিল। অনেক দিন ধরে সব ধরনের সেবা বন্ধ রেখে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা আন্দোলন করার পর এবার তালা খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

রোববার (২২জুন) দুপুরে নগর ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক অফিসসহ নাগরিক সেবা চালুর জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মরতদের নিজ নিজ কাজে ফিরে যেতে আহ্বান জানানো হয়েছে। ঢাকাবাসীর ব্যানারে করা আন্দোলনের সমন্বয়ক সাবেক সচিব মশিউর রহমান এই আহ্বান জানিয়েছেন।


বিজ্ঞাপন


এসময় তিনি ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথের দাবিতে আন্দোলন চলবে জানিয়ে বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগের কোনো বিল ছাড় দিতে দেব না।

ঢাকাবাসীর ব্যানারে আন্দোলন করা মশিউর রহমান বলেন, ফ্যাসিস্ট আমলের দোসরদের নগর ভবন এবং আঞ্চলিক কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। নতুন করে কোনো নিয়োগ দিতে গেলেও তা প্রতিহত করা হবে।

একইসঙ্গে ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণ না করিয়ে আদালত ও সংবিধান অমান্য করায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার অপসারণ দাবি করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমরা আন্দোলনরত ঢাকাবাসীকে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলার আহ্বান জানিয়ে জরুরি নাগরিক সেবাসমূহ নির্বিঘ্ন করার সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বলব। একইসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে কর্মরত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সচিব, স্বাস্থ্য বিভাগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ভান্ডার ও ক্রয় কর্মকর্তার দফতর, হিসাব ও অডিট বিভাগ, সমাজ কল্যাণ বিভাগ, আইন বিভাগ, রাজস্ব বিভাগ, সম্পত্তি বিভাগ, পরিবহন বিভাগ, বিদ্যুৎ সার্কেল, যান্ত্রিক সার্কেল, সংস্থাপন শাখা, নিরাপত্তা শাখা, জনসংযোগ বিভাগ, আইসিটি সেল, নগর পরিকল্পনা বিভাগ, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, নিজ নিজ অফিসে কর্মরত থেকে তাদের ওপরে অর্পিত দায়িত্বসমূহ যেমন: জন্ম-মৃত্যু সনদ, নাগরিক সনদ, ওয়ারিশান সনদ, বিভিন্ন ধরনের প্রত্যয়নপত্র, সকল প্রকার পৌর ও বাজার কর আদায়, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু, নবায়ন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, মশক নিধন কার্যক্রম, ডেঙ্গু-চিকনগুনিয়া ও করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রম, সড়ক বাতি প্রজ্জ্বলন সচল রাখার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।


বিজ্ঞাপন


মশিউর রহমান বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, জনগণই এই দেশের প্রকৃত মালিক। তারা সঠিক সময়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার এমন ফ্যাসিস্ট, বেআইনি কার্যকলাপের জবাব দিবে।

তিনি আরও বলেন, কোনো স্বৈরাচারের দোসর, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর, দুর্নীতিবাজ কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন তথা নগর ভবন বা আঞ্চলিক কার্যালয়সমূহের কোথাও প্রবেশ করতে পারবে না। তাদের সকল স্থানে দেখা মাত্রই প্রতিহত করা হবে।যদি কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব অর্থাৎ নাগরিক সেবা প্রদানে অপরাগতা প্রকাশ বা গাফিলতি করে তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে দেশে ও বিদেশে পাহাড়সম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগের যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তা কোনোক্রমেই বাস্তবায়ন হতে দেওয়া হবে না। তাই সকল প্রকার নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে আজও উত্তাল ছিল নগর ভবন। এসময় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে নগর ভবন।
রোববার (২২ জুন) সকাল থেকে নগর ভবনের সামনে নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা আসতে শুরু করেন। বেলা ১১টা থেকে ঢাকাবাসীর ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়।

আন্দোলনকারীরা জানান, ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে সরকার একগুঁয়েমি আচরণ করছে।

সরকারের উপদেষ্টাদের আদালত অবমাননামূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বলেন, ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থামবে না।

উল্লেখ্য, ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে গত ১৪ মে থেকে ঢাকাবাসীর ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। সেই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সকল প্রকার নাগরিক সেবা বন্ধ রেখেছে কর্মকর্তা- কর্মচারীরা।তবে, কোরবানি ঈদের আগে আগে জরুরি সেবা চালুর ঘোষণা দেন ইশরাক হোসেন। তারই ধারাবাহিকতায় নগর ভবনে টানা তিন দিন বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা- কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় করেন ইশরাক হোসেন। সেসময় থেকেই নাগরিক সেবা সচল রাখারও ঘোষণা দিয়ে আসছিলেন তিনি। একইসঙ্গে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা চলমান নাগরিক সেবা বাধাগ্রস্ত করার সকল দায় আন্দোলনকারীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার অপতৎপরতা চালাচ্ছিলেন বলেও অভিযোগ করে আসছিলেন তিনি।

বিইউ/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর