রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

অবশেষে সংলাপে জামায়াত, বৈষম্যের অভিযোগে দুই দলের ওয়াকআউট

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২৫, ০৬:২৩ পিএম

শেয়ার করুন:

jamat
জামায়াতকে বেশি সময় দেওয়ার অভিযোগে দুই দলের ওয়াকআউট। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার বৈঠকের প্রথম দিনে বারবার চেষ্টার পরও অংশ নেয়নি জামায়াতে ইসলামী। লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর নির্বাচন নিয়ে যৌথ ঘোষণায় চটে যাওয়া দলটিতে বৈঠকে ফেরাতে ফোন করেন খোদ প্রধান উপদেষ্টা। জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানকে সরকারের নিরপেক্ষতার আশ্বাস দেওয়ার পর আজ বুধবার (১৮ জুন) দলটির নেতারা বৈঠকে অংশ নেন।

তবে এদিন জামায়াতে ইসলামীকে বেশি কথা বলতে দেওয়ায় বৈষম্যের অভিযোগ তুলে সংলাপ থেকে ওয়াকআউট করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও গণফোরাম। অবশ্য মিনিট দশেক পর দল দুটি আবার সংলাপে ফিরে যায়।


বিজ্ঞাপন


যে কারণে বৈঠকে ফিরেছে জামায়াত

গত ১৩ জুন লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সংস্কার ও বিচারের অগ্রগতি সাপেক্ষে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে পারে। একটি দলের সঙ্গে যৌথ বিবৃতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন অভিযোগ করে প্রতিবাদে মঙ্গলবার সংলাপ বয়কট করে জামায়াত।

যা নিয়ে রাজনীতির ভেতরে বাইরে নানা ধরনের গুঞ্জনও শুরু হয়। অবশ্য প্রথম দিনের বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, বুধবার জামায়াত বৈঠকে অংশ নেবে।

সে অনুযায়ী, বেলা সাড়ে ১১টায় জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের নেতৃত্বে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও হামিদুর রহমান আজাদ সংলাপে অংশ নিতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আসেন।


বিজ্ঞাপন


মধ্যাহ্নের বিরতিতে ডা. তাহের সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনালাপ হয়েছে জামায়াত আমির শফিকুর রহমানের। প্রধান উপদেষ্টা সরকারের নিরপেক্ষতার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।

আরও পড়ুন

ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে জামায়াত অংশ না নেওয়ায় নানা গুঞ্জন

সংসদে চারটি স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদ পাবে বিরোধী দল: সালাহউদ্দিন

ডা. তাহের বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে আমাদের অবস্থান জানিয়েছি। তিনি কিছুটা অনুধাবন করতে পেরেছেন। আশ্বস্ত করেছেন সরকার নিরপেক্ষ, কোনো বিশেষ দল বা গোষ্ঠীর প্রতি ঝুঁকে নেই। আগামীতে এসব ব্যাপারে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবেন এবং যত্নবান হবেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে আজকের সংলাপে এসেছি। কিছুতে অচল অবস্থার সৃষ্টি হোক চাই না। সরকারকে সহযোগিতা করেছি সবসময়। কিন্তু ব্যত্যয় হলে কথা বলতে হবে।

জামায়াত বেশি সময় পাওয়ায় ওয়াকআউট

এদিকে সাড়ে ১১টার দ্বিতীয় দফার সংলাপের তৃতীয় দিনের আলোচনা শুরু হয়। মধ্যাহ্ন বিরতির পর বেলা পৌনে তিনটায় আবার সংলাপ শুরু হয়। এক ঘণ্টা পর সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বেরিয়ে আসেন।

রুহিন হোসেন প্রিন্স নিচতলায় নেমে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখানে বৈষম্য হচ্ছে, জামায়াতের তিনজনকে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। আমাদের একজন বক্তব্য দিতে গেলেও বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। আমরা প্রতিবাদ জানালে, কমিশন তা নোট করে। তাই আবার সংলাপে ফিরে যাচ্ছি।’

এর আগে গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশন নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। তারা নিরপেক্ষ না হলে কমিশন সংলাপে ফিরবে না।’

সিপিবি এবং গণফোরাম নেতাদের সংলাপে ফিরিয়ে নিতে নেমে আসেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। এছাড়াও বিএনপির সমমনা দল বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব ও ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহছান হুদা।

শাহাদাত সেলিম বলেন, ‘উনাদের জামায়াত বলেছেন, আপনারা তো ১০ জন মানুষের প্রতিনিধিত্বও করেন না। আমরা কতজনের প্রতিনিধিত্ব করি।’

বিইউ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর