সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

জামায়াত-শিবিরকে সামনে রেখে ‘কাজ সেরে’, এখন পাকিস্তানপন্থী তকমা?

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২ মে ২০২৫, ১২:৩৩ পিএম

শেয়ার করুন:

জামায়াত-শিবিরকে সামনে রেখে ‘কাজ সেরে’, এখন পাকিস্তানপন্থী তকমা?

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনে জামায়াত-শিবিরকে সক্রিয়ভাবে কাজে লাগানো হলেও, এখন সেই সংশ্লিষ্টতা থেকে নিজেকে আলাদা রাখার চেষ্টা করছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা—এমন মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান।

সোমবার (১২ মে) সকালে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই প্রতিক্রিয়া জানান। তার ভাষ্য, আন্দোলনের সময় জামায়াত-শিবিরসহ বিভিন্ন ইসলামপন্থী দলের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এনসিপি নেতারা নিজেদের 'শিবির সংশ্লিষ্টতা' থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাইছেন। এমনকি কিছু নেতাকে এখন পাকিস্তানপন্থী বলেও উপস্থাপন করা হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


রাশেদ খান বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে যমুনা ও শাহবাগে হওয়া ঘেরাও কর্মসূচিতে জামায়াত-শিবির সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। অনেক ক্ষেত্রে এনসিপির নেতাদের সঙ্গে তাদের পাশাপাশি অবস্থান ও বক্তব্য দিতেও দেখা গেছে। তার অনুমান, যমুনা ও শাহবাগের ওই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া অন্তত ৬০ শতাংশ ছিল বিভিন্ন ইসলামী দল ও মাদরাসাছাত্র। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।

তিনি আরও যোগ করেন, জামায়াত-শিবিরের উপস্থিতি ছাড়া আন্দোলনে এতোটা ‘গতি’ আসত না। কিন্তু আন্দোলনের পর এনসিপির পক্ষ থেকে নিজেদের ‘পরিচ্ছন্ন’ দেখানোর প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। অথচ দলটির বিভিন্ন কমিটিতেই রয়েছেন সাবেক শিবির নেতারা। যারা এখন মুখ ঘুরিয়ে বলছেন, তারা শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না—তাদের মধ্যেও কেউ কেউ একসময় সরাসরি শিবিরে যুক্ত ছিলেন।

পোস্টে রাশেদ খান আরও বলেন, রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে এখন এনসিপির প্রগতিশীল ভাবমূর্তি তুলে ধরার প্রয়োজন হয়েছে বলেই এমন প্রচেষ্টা নেওয়া হচ্ছে। অথচ আন্দোলনের প্রধান বল ছিল যাদের ওপর, সেই শক্তিকেই এখন দূরে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, শাহবাগে ‘পুরনো প্রতিশোধ’ নিয়েছে জামায়াত-শিবির। যদিও রাশেদ খান নিজে এ বক্তব্যের সঙ্গে সরাসরি একমত নন। তবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে সাধারণ মানুষের চাপ ছিল এবং এই দাবির পক্ষে জোরালো গণমতের অস্তিত্ব অস্বীকার করার সুযোগ নেই।

তার ভাষ্য অনুযায়ী, অনেকেই জানতে চাচ্ছেন—যমুনার আন্দোলন হঠাৎ কেন শাহবাগের দিকে গেল? এই প্রশ্নের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক কৌশল, যার উত্তর সময়ই দেবে।


বিজ্ঞাপন


পোস্টের একেবারে শেষে রাশেদ খান লেখেন, ‘জামায়াত-শিবিরকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া হয়েছে, এখন তাদের ওপর পাকিস্তানপন্থী তকমা এঁটে দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি মনে করেন, যদি জামায়াত-শিবির এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেয়, তাহলে ভবিষ্যতে ‘ডাকলেই দৌড়ে’ আসার দিন শেষ হতে পারে। আর যদি তারা ভাবে, রাজনীতিতে বারবার ব্যবহার হওয়াই তাদের ভূমিকা, তাহলে এ নিয়ে তার আর কিছু বলার নেই।

এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর