রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

আ.লীগ নিষিদ্ধে গণভোট চায় ইনকিলাব মঞ্চ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১ মে ২০২৫, ১০:৩৯ পিএম

শেয়ার করুন:

আ.লীগ নিষিদ্ধে গণভোট চায় ইনকিলাব মঞ্চ

দেশের কোনো বিচারক আওয়ামী লীগের বিপক্ষে রায় দেয়ার মতো সাহস রাখে না উল্লেখ করে রাজনৈতিক কার্যক্রম নয়, দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি।

তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালের বিচারকরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করবে সেই নিশ্চয়তা নেই, তাই সিদ্ধান্ত বিচার বিভাগ নয়, গণভোটের মাধ্যমে দেশের জনগণকে ঠিক করতে হবে।


বিজ্ঞাপন


রোববার (১১ মে) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

হাদি বলেন, ট্রাইব্যুনালের বিচারকরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করবে সেই নিশ্চয়তা নেই, তাই সিদ্ধান্ত বিচার বিভাগ নয়, গণভোটের মাধ্যমে দেশের জনগণকে ঠিক করতে হবে।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে দেরি হওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে হাদি বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের বিষয়টি ছাত্র-জনতা ভুলে যায়নি। অনতিবিলম্বে তার দেশত্যাগে সহায়তাকারীদের পরিচয় প্রকাশ্যে এনে তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
 
জুলাই ঘোষণাপত্রের তৈরির দায়িত্ব এনসিপির একার নয় উল্লেখ করে সব রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে কাজ করার আহ্বান জানান ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র।

হাদী বলেন, বিগত ১৫ বছরে পুলিশ ম্যাসাকার করেছে, মামলা বাণিজ্য করেছে। এ সময়টাতে পুলিশে আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ যাদের বিষয়ে লিখত দিয়েছে তাদেরকেই শুধু পুলিশে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিসিএস পুলিশে কারা যাবে এটা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ঠিক করে দিয়েছে। শেখ হাসিনার কামরা থেকে পাওয়া ফাইল থেকে এমনটাই পাওয়া গেছে।


বিজ্ঞাপন


তিনি দাবি করেছেন, বিসিএসে অ্যাডমিশন, পুলিশ এবং পররাষ্ট্র ক্যাডারো যাদের সুপারিশ করা হয়েছে তারা আওয়ামী লীগের দোসর।

তিনি আরও বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মী অন্তর্ঘাত করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ থেকে নিয়োগ দেওয়া পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারবে না। তাই এক বছরের মধ্যে ৪০-৫০ হাজার নতুন পুলিশ নিয়োগে দেওয়া দরকার ছিল।

তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে এতো যুবক বেকার। আপনারা এই দশ মাসে নতুন করে পুলিশ নিয়োগ দিলে অনেক যুবকের কর্মসংস্থান হতো। আপনারা এক সপ্তাহের মধ্যে ৫০ হাজার পুলিশ নিয়োগের জন্য প্রজ্ঞাপন দিন।

তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনারা মনে কইরেন না আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় আমরা আমাদের অন্যান্য দাবি ভুলে যাব। আপনাদের অতি দ্রুত গণহত্যার বিচার শুরু করতে হবে। শুধু জুলাই গণহত্যা নয়, একইসঙ্গে পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার শুরু করতে হবে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিষয়ে হাদী বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটা ধারা ছিল এই ট্রাইব্যুনাল যে কোনো দলেরও বিচার করতে পারবে। কিন্তু গতকাল বলা হলো এটা আগে আইনে ছিল না, আইন সংশোধন করে নতুন করে যুক্ত করা হলো। কিন্তু এটা আগের আইনে ছিল। তাহলে আমাদের প্রশ্ন হলো কোন উপদেষ্টা এই আইন বাদ দিয়েছে? আসিফ নজরুল স্যার বলেছিলেন- এই বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ২য় ট্রাইব্যুনাল করার কথা। কিন্তু এই মে মাসে যখন জনতা আন্দোলনে নামল তখন আপনারা বলছেন এই মে মাসেই ২য় ট্রাইব্যুনাল করবেন। আপনারা এতদিন করেন নাই কেন?

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি আরও বলেন, এই প্রজ্ঞাপনে জাতীয় পার্টির নাম নাই কেন? তারা কী দুধে ধোয়া? তারা কী বিনাভোটে এমপি হন নাই? আওয়ামী লীগের শরিক ১৪ দলীয় জোটের নাম নাই কেন?

এ সময় শরিফ ওসমান হাদির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তিনটি প্রস্তাবনা পেশ করেন। প্রস্তাবনাগুলো হলো- প্রথমত, দুটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা। ১ম ট্রাইব্যুনাল ব্যক্তির বিচার করবে এবং ২য় ট্রাইব্যুনাল দলের বিচার করবে।

দ্বিতীয়ত, অনেক আওয়ামী লীগের সমর্থক রয়েছে যারা কোনো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত নয়। তাদের নিয়ে অনেকে মামলা বাণিজ্য করে। তাদের জন্য একটা ‘তওবা কমিশন’ গঠন করার মাধ্যমে তাদের দায়মুক্তি দিতে হবে।

তৃতীয়ত, আগামী ৩৬ জুলাইয়ের (৫ আগস্ট) মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রদান করা।

/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর