বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে আমরা এখানে সমাবেশ করছি। আরেকটা সমাবেশ হচ্ছে নিউমার্কেট, আরও একটা ঢাকায়। দাবিটা কী, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে চায় না।
শনিবার (১০ মে) বিকেলে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ দেশে ফ্যাসিবাদ বাকশাল কায়েম করেছে। গুম-খুনের রাজত্ব কায়েম করেছে। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস করেছে। কিন্তু আমাদের তরুণরা ব্যবসা চায়। আর আওয়ামী লীগ ব্যবসা ধ্বংস করে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে তরুণদের।
ফখরুল বলেন, আমাদের তরুণরা সমাজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শান্তি চায়। একটা গণতান্ত্রিক দেশ চায়, যে যার কথা বলবে। আমরা সে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না, আমরা জনগণকে ক্ষমতায় নিতে চাই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে তারুণ্যের সমাবেশের একটাই উদ্দেশ্য, তরুণরা আবার জেগে উঠো, সমস্ত চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ফখরুল বলেন, এই দেশ প্রথম সংস্কার করেছেন জিয়াউর রহমান, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, অর্থনীতির আজকে যে ভিত্তি গার্মেন্টস সেক্টর সেটাও জিয়াউর রহমানের অবদান। কেয়ারটেকার ব্যবস্থা এনেছেন খালেদা জিয়া। আজকে সবাই সবকিছু ভুলে যায়, বিদেশ থেকে এসে বড় বড় কথা বললে, মানুষ ভুলে যাবে তাই না।
বিজ্ঞাপন
মহাসচিব বলেন, জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেছেন গণতান্ত্রিক দেশের জন্য, খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য কাজ করেছেন। তারেক রহমান আধুনিক বাংলাদেশ করতে চান। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিক্রি করে কিছু চাই না। এজন্য তারেক রহমান বলেছেন, সবার আগে বাংলাদেশ। তিনি বলেছেন, ফয়সালা হবে রাজপথে, সেটাই হয়েছে।
ফখরুল বলেন, সুন্দর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে। যেখানে মানুষ মানুষকে ভালোবাসবে, মাথা উঁচু থাকবে দেশের। বাংলাদেশের পতাকাটা উড়বে পতপত করে। ওয়াসিমের রক্তের বিনিময়ে আমাদের নতুন স্বাধীনতা। তাকে পাঠ্য পুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে এটা আশা করি।
সমাবেশের অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাৎ হোসেন।
বক্তৃতায় আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্রের পথ যাতে রুদ্ধ না হয়, সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। মঞ্চে তামিমকে দেখিয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের তরুণরা আজকে ছক্কা মেরেছে। এই তরুণরা ফ্যাসিস্ট হাসিনা হঠানোর মূল শক্তি। গণতন্ত্র, মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তরুণরা লড়াই করেছে।
ফখরু বলেন, কারো যদি দর্শন থাকে, ভাবনা থাকে, কর্মসূচি থাকে তাহলে তাদেরকে জনগণের কাছে যেতে হবে। কিন্তু কারো স্বার্থের জন্য দেশকে জিম্মি করা যাবে না। মানুষের মধ্যে নতুন যে ভাবনা এসেছে তা বুঝতে হবে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে সে আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করতে হবে।
সরকার গঠন করলে সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা উল্লেখ করেন তিনি। খসরু বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এটা কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। গণতন্ত্রের পথে কেউ যাতে রুদ্ধ করতে না পারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে যাবো, কারো উসকানিতে পা দেওয়া যাবে না। এটা তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত।
সমাবেশে যা বললেন তামিম ইকবাল
এর আগে শনিবার বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে শুরু হয় বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের সন্তান ও জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় তামিম ইকবাল। তিনি নিজেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নয়, স্পোর্টসম্যান হিসেবে তুলে ধরে বলেন, আমি পলিটিক্যাল কেউ না। আমি একজন স্পোর্টসম্যান। তাই আমি স্পোর্টস নিয়ে কিছু কথা বলবো।
তামিম বলেন, একসময় চট্টগ্রাম থেকে ৫-৬ জন করে ন্যাশনাল টিমে প্রডিউস করতো। কিন্তু লাস্ট ১০-১৫ বছর আগে সেরকম প্লেয়ার উঠে আসেনি। আমি চাইবো, আগামীতে যেন উঠে আসে। এজন্য কার জন্য কী প্রতিবন্ধকতা হয়েছে তা নয়। আমরা কেন ন্যাশনাল টিমে যেতে পারিনি তা দেখতে হবে। আর কী করলে আমরা স্পোর্টসে আরও অংশগ্রহণ করতে পারবো, অবদান রাখতে পারবো তা নিয়ে কাজ করতে হবে।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিল বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মো. এরশাদুল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান নাজিম প্রমুখ।
আইকে/জেবি