বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:১৪ পিএম

শেয়ার করুন:

‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে’

রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবের যেসব বিষয় ঐক্যমত হবে, সেগুলো নিয়ে জুলাই চার্টার্ডে বিএনপি রাজি আছে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইসঙ্গে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।


বিজ্ঞাপন


মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা খুব স্পষ্ট করে বলেছি, যে বিষয়গুলো ঐক্যমত হবে সব দলগুলোর.. সেগুলো নিয়ে আমরা একটা চার্টার্ড করতে রাজি আছি। তারপরে আমরা নির্বাচনের দিকে চলে যেতে পারি এবং বাকি যেসব সংস্কারে আমরা ঐকমত্য হব, সেটা আমরা অবশ্যই আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো যারা নির্বাচিত হয়ে আসবেন, তারা সেগুলোকে বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নেবেন। এটাই ছিল আমাদের (বিএনপির) মূল কথা।'

সর্বশেষ গত ১০ ফেব্রুয়ারি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাত করেন। সেই সময়ে তিনি বিএনপি প্রতিনিধি দলকে বলেছিলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে তার সব কার্যক্রম চলছে।

‘ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে’ —প্রধান উপদেষ্টা এই বক্তব্যে হতাশা ব্যক্ত করে ফখরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় সুনির্দিষ্ট করে নির্বাচনের ডেডলাইন আমাদেরকে দেননি। তিনি বলেছেন যে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে তিনি নির্বাচন শেষ করতে চান… আজকে আমাদের তিনি এটা বলেছেন।

ফখরুল বলেন, আমরা তার (প্রধান উপদেষ্টার) বক্তব্যে একেবারেই সন্তুষ্ট নই। আমরা পরিষ্কার করেই বলেছি যে, আমরা ডিসেম্বরের যে কাটঅফ টাইম; ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন যদি না হয় তাহলে দেশে যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিস্থিতি সেটা আরও খারাপের দিকে যাবে এবং সেটা তখন নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন হবে।


বিজ্ঞাপন


বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘উনি (প্রধান উপদেষ্টা) ডিসেম্বর থেকে জুন বলেছেন, উনি এই কথা বলেননি যে, এটা ডিসেম্বরে হবে না। কিন্তু জুন পর্যন্ত নিয়েছেন। আমরা এই কথাটা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছি যে, আমাদের কাটঅফ টাইম ইজ ডিসেম্বর।'

মাসের এই শিফটিংটা কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তো আমি বলতে পারব না। এটা উনারা বলতে পারবেন।'

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আবারও আপনাদের সামনে আসব দলের মধ্যে আলোচনা করে এবং আমাদের অন্যান্য মিত্র দলগুলোর সাথে আলোচনা করে …আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের আলোচনার প্রধান যে বিষয়টা ছিল সেটা হচ্ছে, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ যেটা আমরা বেশ কিছুকাল থেকে বলে আসছি। সেই বিষয়ে তার (প্রধান উপদেষ্টার) সাথে কথা বলেছি। আমরা বলেছি যে, পরিস্থিতি আছে এবং দেশের যে অবস্থা তাতে করে আমরা বিশ্বাস করি এখানে একটি দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে।'

ফখরুল বলেন, একইসঙ্গে চলমান যে সংস্কার কমিশনগুলো করা হয়েছে… যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে আপনারা জানেন যে, সেগুলোতে আমরা সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করছি। গত কয়েকদিন আগের সংস্কার কমিশনের কাছে আমাদের মতামতগুলো দিয়েছি। আগামীকাল আমাদের সঙ্গে বৈঠক আছে।

এর আগে, বেলা সোয়া ১২টায় বিএনপি মহাসচিবসহ দলের স্থায়ী কমিটির ৭ সদস্য রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করেন। পৌনে দুই ঘণ্টা বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব বেলা ২টার দিকে যমুনা থেকে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এই বৈঠকে নির্বাচনী রোডম্যাপ, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ টুকু, সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বৈঠকে ছিলেন।

বিইউ/এমএইচটি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর