শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

হাসিনার সম্মেলনে কোন কোন ব্যবসায়ী ছিলেন তা প্রকাশের আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪৯ পিএম

শেয়ার করুন:

হাসিনার সম্মেলনে কোন কোন ব্যবসায়ী ছিলেন তা প্রকাশের আহ্বান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, গত ১৭ বছরে অবৈধভাবে যেসব ব্যবসায়ীরা টাকা কামিয়েছেন তারা দেশ ধ্বংস করতেই সেই টাকা খরচ করছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সফলতার শেষ মুহূর্তে গত বছরের ৩ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্যবসায়ী সম্মেলনে কোন কোন ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন তা গণমাধ্যমে প্রকাশ করার আহ্বান জানাই।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাজধানীর গুলশানে একটি রেস্টুরেন্টে গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত ইফতার পার্টিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


মির্জা আব্বাস বলেন, এসব ব্যবসায়ীদের অনেকের নামে হত্যা মামলা থাকলেও কেনো তারা গ্রেফতার হচ্ছেন না। শুধুমাত্র ব্যবসায়ী নয়, সচিবালয়ে খবর নেন। সেখানে আওয়ামী লীগের দোসররা এখন অবস্থান নিয়ে আছে। তাদের অনেকেই এখনও আওয়ামী লীগের পক্ষেই কাজ করার চেষ্টা করছেন।

একটি বিশেষ দলকে নিয়ে কেউ নিউজ করে না বলে অভিযোগ করেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, আপনারা শুধুমাত্র বিএনপিকে নিয়ে নিউজ করেন। ওই দলকে কারা টাকা দেয়, কারা হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করে দেয় সেটিও জাতির সামনে প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ জানাই। সাংবাদিকদের অবদানকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। সংবাদিকবিহীন কোনো জাতিরাষ্ট্র আছে বলে আমি মনে করি না। সাংবাদিকবিহীন কোনো রাষ্ট্র যদি থাকে অবশ্যই সেটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অবশ্যই স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য একটি প্লাটফর্ম থাকতে হবে।

সাংবাদিকদের প্রচেষ্টা ও কার্যক্রমের বিনিময়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের শুধু ঘটনা নিয়েই কাজ করা নয়, তাদেরকে কোথায় কি হতে যাচ্ছে এ বিষয়েও কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগের দোসররা কে কোথায় অবস্থান করছেন, কার কি অবস্থা, কি করেছেন, সবকিছুই বের করার দায়িত্ব সাংবাদিকদের।

সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, একটি বিশেষ দল সম্পর্কে সাংবাদিকরা কিছু লিখছে না। যতটুকু পারেন ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে শুধু বিএনপির বিরুদ্ধে লিখছেন। পর্দার অন্তরালে অনেক কিছুই ঘটছে সেগুলো কিন্তু আপনার লিখছেন না। কোন ব্যবসায়ী কোন দলকে কত টাকা দেয়, কোন দল কোন ব্যবসায়ীকে পৃষ্ঠপোষকতা করছেন, কোন ব্যবসায়ীকে বাঁচাতে চেষ্টা চালাচ্ছেন; এগুলো কিন্তু আপনারা লিখছেন না। অনেক ব্যবসায়ী হত্যা মামলার আসামি; তাদের বিরুদ্ধে লিখছেন না। এমনকি জুলাই-আগস্টে হত্যাকাণ্ডের পরেও তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু লিখছেন না।


বিজ্ঞাপন


সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা কেন লিখেছেন না; এতে জাতির ক্ষতি হচ্ছে। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শিক্ষার্থী হত্যার পক্ষে ছিল যে ব্যবসায়ীরা। তাদের মধ্যে কে গ্রেফতার হলো, কে হলো না, কেনো হলো না এগুলো লিখতে হবে। ব্যবসায়ীরা গেল ১৭ বছর অবৈধভাবে হাজার কোটি টাকা ইনকাম করেছে। এরাই পরের ১৭ বছর এই টাকা ব্যয় করবে দেশকে ধ্বংস করতে।

সাংবাদিকদের লেখার আহ্বান জানিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ওদেরকে সাবধান করেন। ওরা মনে করে টাকা হলেই সাংবাদিকদের কেনা যায়। কিন্তু টাকা হলেই সাংবাদিক কেনা যায় না, আমি আমার জীবনে এমন বহু সাংবাদিক দেখেছি। তবে কিছু কিছু সাংবাদিককে টাকা হলে কেনা যায়, যারা জাত সাংবাদিক নয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, আমরা যেন নতুন বাংলাদেশ গড়তে গিয়ে নতুন করে কোনো ভুল না করি। ছাত্র এবং পাশাপাশি জনতার যে অভ্যুত্থান সেটির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ঠিক রেখেই আমাদেরকে চলতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকতার বিকাশে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট এখনও কেনো বাতিল করা হয়নি। সাবেক একজন তথ্যমন্ত্রী হিসেবে আমি আপনাদের মাধ্যমে সরকারকে জিজ্ঞাসা করতে চাই এ আইন কার স্বার্থে এখনও বলবৎ রয়েছে। 

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, দলের কঠিন দুঃসময়ে সাংবাদিকরা ছিলেন আমাদের অন্যতম ভরসা। সাংবাদিকদের মাধ্যমে জাতি প্রকৃত তথ্য জানতে পেরেছে। আগামীতেও সবসময় সাংবাদিকদের সহযোগিতা বিএনপি পাবে বলে আশা রাখি।

‘আমরা বিএনপি পরিবার’র আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ইফতার পার্টিতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব ও দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি, মিডিয়ার সেলের আহ্বায়ক ড. মওদুদ আলমগীর পাভেল ও সদস্য বিএনপি নেত্রী শাম্মী আক্তার প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম রনি।


এমই/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর