শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

আলেম সমাজকে বৃহত্তর ঐক্যের আহ্বান জামায়াতের

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২ মার্চ ২০২৫, ০৮:৪৯ পিএম

শেয়ার করুন:

আলেম সমাজকে বৃহত্তর ঐক্যের আহ্বান জামায়াতের

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আলেম ও তালেব উভয়ই সুসংবাদ প্রাপ্ত। কারণ, হাদিসে রাসূল (সা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই উত্তম যিনি নিজে কুরআন শিক্ষা করেন এবং অপরকে শিক্ষা দেন’। আমরা আজ তাদের সাথে মিলিত হতে পেরে গর্ববোধ  করছি।

রোববার (২ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর-১৪ এ একটি রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের উদ্যোগে ঢাকা-১৫ আসনের উলামায়ে কেরাম ও ইয়াতিমদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় দেশকে এগিয়ে নিতে দেশের আলেম সমাজকে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।


বিজ্ঞাপন


ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দ্বীনই আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য। দেশে দ্বীনের শিক্ষা যত সম্প্রসারিত হবে, ততই সমাজ আলোকিত হয়ে উঠবে। আর দ্বীনের শিক্ষা সংকুচিত হলে নেমে আসবে অন্ধকার। যার প্রমাণ হচ্ছে পতিত আওয়ামী লীগের প্রায় ১৬ বছরের অপশাসন বা দুঃশাসন। সে সময় দেশ বরেণ্য আলেম-উলামাদের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে নির্মম নির্যাতন চালান হয়েছে। তাদের হাতে হ্যান্ডকাপ আর পায়ে ছিল ডাণ্ডাবেড়ি। অথচ চোর, ডাকাত, অপরাধী ও সমাজ বিরোধীরা গোটা দেশে নির্বিঘ্নে দাপিয়ে বেড়িয়েছে।

তিনি তার নিজের গ্রেফতারের দুঃসহ স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল গভীর রাতে। কিন্তু আমাকে আয়নাঘরে রাখা না হলেও আমি তা দেখেছি। আমাকে এমনভাবে গ্রেফতার করা হয়েছিল যেন তারা কোন ভয়ংকর অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে। প্রথম কয়েকদিন কেরানীগঞ্জ কারাগারে রাখার পর আমিসহ ৩৮ জন বরেণ্য আলেমকে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে বদলি করা হয়। গাড়িতে আমি ছাড়া প্রত্যেকের হাতে হ্যান্ডকাপ ও পায়ে বেড়ি পড়া দেখে আমি কেঁদেছি। কিন্তু মহান আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক পরিবেশ দিয়েছেন। 

তিনি আরও বলেন, পবিত্র  মাহে রমজান মাগফেরাত ও গুনাহ মাফের মাস। মূলত, সিয়াম মানুষের গুনাহ পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। হাদিসে রাসূল (সা.)-এ এসেছে, একদিন রাসূল (সা.) পরপর তিন বার আমিন বললেন। সাহাবীগণ তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহর রাসূল (সা.) আপনি তো এমন কখনও করেন না। প্রত্যুত্তরে রাসূল (সা.) বললেন, আমার কাছে জিব্রাইল (আ.) এসে বললেন, ঐ ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যে তার জীবনে রমযান মাস পেলো অথচ নিজের গুনাহ মাফ করিয়ে নিতে পারল না। আমি বললাম, আমিন! এরপর তিনি বলছেন, যে তার পিতা-মাতা উভয়কে বা কোনো একজনকে বার্ধক্য অবস্থায় পেলো অথচ জান্নাত লাভ করতে পারল না ঐ ব্যক্তি ধ্বংস হোক। আমি বললাম আমিন। জিব্রাইল (আ.) আবার বললেন, ঐ ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যে আপনার নাম শোনার পর দরূদ পড়ল না। আমি বললাম, আমিন। তাই আমাদের প্রত্যেককে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির জন্য রমযান মাসে যথাযথভাবে সিয়াম ও কিয়াম পালন করতে হবে।

জামায়াতের আমির বলেন, এদেশে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও নানা ধর্মের মানুষের বসবাস। তারা সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক। মানুষ হিসেবে সকলের কল্যাণে কাজ করা আমাদের কর্তব্য। ছাত্র-জনতার সফল আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা নতুন এক বাংলাদেশ পেয়েছি। তারা ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকলের নিরাপত্তার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করেছে। বিপ্লবোত্তর অনেক কিছু হবে বলে কল্পকাহিনী প্রচার করা হলেও তার সিকি ভাগও হয়নি। যতটুকু হয়েছে সব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা তাও সমর্থন করি না। মূলত, এদেশে কোনো বৈষম্যের স্থান দেওয়া হবে না। 


বিজ্ঞাপন


তিনি ক্ষুধা, দরিদ্র ও বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে সকলকে এক প্লাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। 

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, ইয়াসিন আরাফাত প্রমুখ।

এমই/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর