ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এসেছেন কিশোরগঞ্জের নুরুজ্জামান। তার বিশ্বাস, এই ছাত্ররাই বাংলাদেশকে বদলে দেবে। দুর্নীতিমুক্ত সুখী সমৃদ্ধ দেশ গঠনে তারা কাজ করবে। আর তাই মাঠের কৃষিকাজ ফেলে সমর্থন জানাতে এসেছেন ছাত্রদের নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে নুরুজ্জামানের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাকে বেশ উৎফুল্ল দেখাচ্ছিল। শুধু তিনি নন, নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে যারা আসছেন সবাই বেশ উজ্জীবিত। বাংলাদেশকে বদলে দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় তাদের চোখেমুখে। স্লোগানে স্লোগানে চারপাশ মুখরিত করে রাখছেন তারা। দলটির প্রতি সাধারণ মানুষ তাদের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষার কথা তুল ধরছেন।
বিজ্ঞাপন
দেশ গড়ার প্রত্যাশায় এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে নুরুজ্জামান ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমি একদিন মাঠে কাজ না করলে আমার পেটে ভাত জোটে না। আমি কেন মাঠে নামব? আজকে এই দুর্নীতির কারণে আমাকে মাঠে নামতে হয়েছে। এই দেশে দুর্নীতি বন্ধ করতে পারলে, আমরা সৌদি, কাতারকে ছাড়িয়ে যাবো। আমার মনে হয় না, পৃথিবীর অন্য কোনো জাতি এতো ট্যাক্স দেয়। এটা জনগণের পেছনে খরচ হলে আমাদের বদলে যেতে সময় লাগবে না। ’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্ররা দুর্নীতি করে না। তারা দুর্নীতির ছোঁয়া পায়নি। দুর্নীতি করে ওই রাজনৈতিক নেতারা। যারা পা ধরে ধরে নেতা হয়েছে। আমরা ছাত্রদের ওপর ভরসা রাখতে চাই। আমি সাধারণ মানুষকে বলব, আগামী নির্বাচনে একটু ব্রেন খাটিয়ে ভোট দেবেন।’
অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া তরুণরা বলছেন, আমরা পূর্বের রাজনৈতিক ইতিহাসের কথা জানি। রাজনৈতিক কালচারের তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। আমরা যে কোনোভাবে এটার পরিবর্তন চাই। আর পরিবর্তনের জন্য পরিবারতন্ত্র থেকে বেরিয়ে এসে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা দলের মধ্যে যেমন গণতন্ত্রের চর্চা দেখতে চাই, রাষ্ট্রেও এই চর্চার প্রতিফলন চাই।
বিজ্ঞাপন
নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশকে ঘিরে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ছাত্র-জনতার ঢল নামতে শুরু করেছে। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে জনস্রোতে উত্তাল ছিল মানিকমিয়া এভিনিউ।
তরুণদের নতুন এই দলের নামের ইংরেজি রূপ হবে ‘ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্টি’ (এনসিপি)। নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ও অর্গানোগ্রাম (কাঠামো) নির্ধারণ এবং আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈঠক হয়।
এই বৈঠকে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে নতুন দলের প্রধান সমন্বয়কারী, সামান্তা শারমিনকে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক, আবদুল হান্নান মাসউদকে যুগ্ম সমন্বয়ক, হাসনাত আবদুল্লাহকে মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল), সারজিস আলমকে মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) ও সালেহউদ্দিন সিফাতকে দপ্তর সম্পাদক পদে চূড়ান্ত করা হয়েছে। নাসীরুদ্দীন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক, সারজিস মুখ্য সংগঠক ও সালেহউদ্দিন সহ মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। অন্যদিকে হাসনাত আবদুল্লাহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ও আবদুল হান্নান মাসউদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এমইএচ/ইএ