শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ঢাকা

‘রন্ধ্রে রন্ধ্রে সুশীলতা দিনশেষে আমাদের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫৫ এএম

শেয়ার করুন:

‘রন্ধ্রে রন্ধ্রে সুশীলতা দিনশেষে আমাদের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সফল হওয়ার পাঁচ মাস পরও, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো বিচার কার্যকর না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। 

হাসনাত তার স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘রন্ধ্রে রন্ধ্রে সুশীলতা দিনশেষে আমাদের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিপ্লব পরবর্তী সময়ে সিরিয়ায় যে পরিস্থিতিতে মাত্র তিন দিনেই আসাদ সরকারের ৩৫ জন কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, ঠিক সেই পরিস্থিতিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান সফল হওয়ার পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও ফ্যাসিস্ট হাসিনার ঘনিষ্ঠ এবং ফ্যাসিবাদের মদদদাতা একজন নেতাকর্মীরও বিচার কার্যকর করা হয়নি।’


বিজ্ঞাপন


হাসনাত দাবি করেন, গণ-অভ্যুত্থান সফল না হলে, আওয়ামী লীগ বিপ্লবীদের হত্যা, গুম এবং গণহত্যায় নেমে পড়তো। তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিচার বিলম্বিত করা দেশের জনগণের সঙ্গে এক ধরনের অবিচার এবং অপমানের শামিল।

হাসনাত মনে করেন, যদি ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান সফল না হতো, তাহলে আওয়ামী লীগ বিন্দুমাত্র দেরি না করে, বিপ্লবী জনগণের ওপর নির্বিচারে হামলা চালাতো। তাদের মতে, ‘গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শতশত মানুষের গলায় পড়তো ফাঁসির দড়ি, ক্রসফায়ারে মারা পড়তো অগণিত ফ্যাসিবাদবিরোধী মানুষ, আর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে অন্ধকারে ঠাঁই হতো হাজার হাজার ছাত্র-জনতার। সারাদেশে তখন নেমে আসতো নিরপরাধ জনমানুষের শোকের কালছায়া।’

এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তাদের নেতাকর্মীদের দ্রুত বিচার কার্যকর করার দাবিও জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এই সমন্বয়ক। তার মতে— ‘এই বিচার বিলম্বিত করার মধ্যে ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে আমাদের শহীদের আত্মদান ও আহত সহযোদ্ধাদের রক্ত বিসর্জন বৃথা যাবে।’

তিনি আরও বলেন, এমন পরিস্থিতিতে সরকারের উচিৎ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা এবং তাদের কর্মকাণ্ডে সহায়ক হওয়া প্রশাসন ও অন্যান্য স্তরের কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় এনে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা।’


বিজ্ঞাপন


হাসনাতের বক্তব্য, যতদিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সঠিক বিচার কার্যকর না করা হবে, ততদিন পর্যন্ত তাদের আমাদের প্রতি আচরণ যেমন ছিল, ঠিক তেমন আচরণ করা হবে।’ তিনি নিশ্চিত করেছেন, এ বিষয়ে তাদের আন্দোলন থামবে না, যতদিন না আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এছাড়া, সরকারের প্রতি তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিচার কার্যকর করা এবং তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী, গুম-হত্যার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা। তার প্রশ্ন—‘তারা যখন আমাদের ওপর অমানবিক অত্যাচার চালাচ্ছিল, তখন তাদের কোনো দয়া ছিল না। এখন কেন তাদের প্রতি দয়া?’

যদিও সরকার পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছে, কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের নেতাকর্মী যদি দেশের আইনের বিরোধিতা করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে, তাহলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে আন্দোলনকারীরা দৃঢ়ভাবে তাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যদি কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে জনগণই তাদের প্রতিহত করবে।’

এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর