হযরত শাহজালাল (র.) ও হযরত শাহপরাণ (র.) এর মাজার জিয়ারত ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সিলেট সফরে গিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বিখ্যাত দুই সুফি সাধকের মাজার জিয়ারত শেষে সেদিন রাতেই ঢাকা ফেরেন তিনি, যা ছিল বিএনপি প্রধানের সবশেষ জনসম্মুখে যাওয়ার ঘটনা।
এর তিন দিন পর দুর্নীতি মামলায় কারাগারে যান খালেদা জিয়া। দুই বছর পর কারামুক্ত হলেও শারীরিক অবস্থা খারাপ ও মুক্তির শর্ত থাকায় প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারেননি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। অবশেষে ছয় বছর নয় মাস পর প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় কারাদণ্ড হওয়ার পর কারাগারে যান। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি শুরু হলে ২০২০ সালে নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। সেখানে শর্ত ছিল তিনি রাজনীতি করতে পারবেন না এবং বিদেশে যেতে পারবেন না।
সে অনুযায়ী ২০২০ সাল থেকে চলতি বছরের ৭ আগস্ট পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে কিংবা বক্তব্য দিতে দেখা যায়নি খালেদা জিয়াকে।
বিজ্ঞাপন
তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তাকে মুক্তি দেন। এরপর ৭ আগস্ট নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত বিএনপির সমাবেশে রেকর্ড করা বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। হাসিনা সরকারের পতনের পর সাড়ে তিন মাস পার হলেও কোনো কর্মসূচিতে প্রকাশ্যে আসতে দেখা যায়নি বিএনপি প্রধানকে। এখনো শারীরিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় কোথাও বের হচ্ছেন না তিনি।
২০২০ সাল থেকে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন খালেদা জিয়া। কিছুদিন পরপর তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এখন উন্নত চিকিৎসার জন্য তার যুক্তরাজ্য হয়ে তৃতীয় কোনো দেশে যাওয়ার কথা রয়েছে।
তবে শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকলেও আজ সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া।
বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী এ বি এম আব্দুস সাত্তার দেশ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন খালেদা জিয়া। বিকেল সাড়ে তিনটায় সেনাকুঞ্জের উদ্দেশে গুলশানের বাস থেকে বের হবেন তিনি।
জানা গেছে, সশস্ত্র বাহিনী দিবস ঘিরে সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ থেকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
আরও পড়ুন
বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার পাশাপাশি ২০০৯ সালের পর এবারই প্রথম বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ বছর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে মোট ২৬ জন আমন্ত্রণ পেয়েছেন। এর মধ্যে আরও রয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান এবং অন্য পদমর্যাদার সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (১৯ নভেস্বর) রাতে সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএসএম কামরুল আহসান এ আমন্ত্রণপত্র বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে পৌঁছে দেন।
এমআর