শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

ইসির সংলাপে যে কারণে যাবে না বিএনপি

মো. ইলিয়াস
প্রকাশিত: ২৫ মে ২০২২, ০৯:০২ এএম

শেয়ার করুন:

ইসির সংলাপে যে কারণে যাবে না বিএনপি

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোকে শিগগিরই সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। বিএনপি নেতারা বলছেন এই কমিশনকে দুই পয়সারও দাম দেয় না তারা। এই কমিশন সংলাপের আহ্বান করলেই কী আর না করলেই কী?

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকার বা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কোনো সংলাপের প্রশ্নই আসে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। সংসদ বাতিল এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানান দলটির নেতারা। তাদের মূল দাবি হচ্ছে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়।


বিজ্ঞাপন


এখন পর্যন্ত দলটির নীতিগত অবস্থান হচ্ছে, বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে। এরপর নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে, তারাই ঠিক করবে নির্বাচন কীভাবে হবে। এটাই তাদের মূল দাবি।

বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপ ও পরবর্তী সময়ে কমিশনের সংলাপেও যায়নি বিএনপি। যদিও এর আগে দুটো কমিশন গঠন প্রক্রিয়াতেই দলটির অংশগ্রহণ ছিল। জানা গেছে, ২০১৬ সালে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতির সংলাপে গিয়েছিল বিএনপি। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল হুদা কমিশনের সংলাপেও অংশ নেয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এই নির্বাচন কমিশনের সাথে বিএনপির সংলাপে অংশ নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এই বর্তমান সরকার স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সে নির্বাচনে যাবে না। এই কমিশনকে দুই পয়সারও দাম দেয় না বিএনপি। এই কমিশন সংলাপের আহ্বান করলেই কী আর না করলেই কী?

তিনি বলেন, সরকার যখন রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে নাটক করে নির্বাচন কমিশন করে, ওই নাটকে বিএনপি অংশগ্রহণ করে নাই। আমরা জানি না এই নির্বাচন কমিশনে কারা। তাদেরকে কোনো রকমের রিকগনাইজ করি না। আমরা যে নির্বাচন চাই সে নির্বাচন হবে এদেশের শেখ হাসিনার পতন অথবা পদত্যাগ। সংসদ বাতিল এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। সে নির্দলীয় সরকার কিভাবে সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা যায় সেই লক্ষ্যে তারা দায়িত্ব নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তারা যখন আর একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করবে আমরা সেই কমিশনের সাথে কথা বলবো।


বিজ্ঞাপন


জানতে চাইলে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমরা আগেই বলেছি, এই ইসির কিছু করার নেই। সিইসি এই আহ্বান না জানালেই পারতেন। আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে নির্বাচনকালীন সময়ে যদি কেয়ারটেকার সরকার না হয়, তাহলে বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া বড়ই কঠিন। এটা ২০১৮ সালে নির্বাচনের পরে দিবালোকে মতো স্পষ্ট। 

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, নির্বাচন কমিশন হচ্ছে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। সেটা তো আর মুখে মুখে থাকলে হয় না, সেটা যদি কর্মকাণ্ডে পরিণত করতে না পারে তাহলে তো মুশকিল। সামনে যে লোকাল নির্বাচনগুলো রয়েছে এবং অন্য উপ-নির্বাচন যেগুলো রয়েছে তা না দেখে এখন কোনো মন্তব্য করতে চাই না। কারণ নির্বাচন নিয়ে আমাদের সামান্যতম ইচ্ছা আপাতত নেই। নিরপেক্ষ সরকারের জন্য আমাদের দাবিগুলো পেশ করছি।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, সংলাপের প্রশ্নই ওঠে না। এই ইসি আমরা মানি না। আমরা তো বলেছি এই ইসির অধীনে আর কোনো নির্বাচনে যাব না। আমাদের প্রধান দাবি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার। আর নির্বাচন কমিশন এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কেউ নয়।

উল্লেখ্য, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে গত ৬ এপ্রিল সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আমরা কিছুই বলব না। কারণ, যে সংবিধান বলবৎ আছে, তার অধীনে আইন ও সংবিধানিক বিধান অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব আমরা নিয়েছি।

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সরকারবিরোধী ডান-বাম ঘরানার দলগুলোকে এক সূত্রে গেঁথে একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ার চেষ্টা করছে বিএনপি। যে ঐক্যের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন একটি নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজপথে যুগপৎ আন্দোলন গড়তে চায় দলটি। সরকার বিরোধী দলগুলোর মধ্যে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ইতোমধ্যে অন্তত ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শেষ‌ করেছে। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের এক দফা দাবিতে রাজপথে সরকারবিরোধী একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ার চেষ্টা করছে।

এমই/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর