কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঘিরে সহিংসতার সময় ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনায় সারাদেশে দায়ের করা মামলার বিচার সর্বোচ্চ দুই মাসের মধ্যে চান সাংবাদিক শফিক রেহমান। তিনি বলেছেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলার বিচার প্রক্রিয়া খুব দ্রুত করতে হবে। সর্বোচ্চ দুই মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। এটা না করলে শেখ হাসিনা ফিরে এসে আবার কাঁদবেন। এই নাটক দেখতে চাই না।’
বুধবার (২১ আগস্ট) গ্লোবাল বাংলাদেশি'জ অ্যালাইন্স হিউম্যান রাইটস আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
শফিক রহমান বলেন, ‘যারা এই আন্দোলনে নিহত হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। যারা আহত হয়েছেন তাদের সুস্থতা কামনা করছি। একইসঙ্গে যে মামলা হয়েছে এর বিচার কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিচার তো পাঁচ মিনিটে শেষ করা যায়। সে তো খুনি। খোলা মাঠে বিচার হবে। বিচার কাজে সাক্ষ্যর প্রয়োজন হলে আবু সাঈদের বাবা এসে সাক্ষী দিয়ে যাবে। এটা না করলে আবার সে ফিরে এসে আবার কাঁদবে। তারা ব্যাগে সবসময় লেবু থাকে। তিনি নাটক করবেন। এই নাটক দেখতে চাই না।’
আওয়ামী লীগের নেতা ও মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার কথা তুলে ধরে প্রবীণ এই সাংবাদিক বলেন, ‘এই যে পলক, আরও কতজনের কথা বলা হয়। এতকিছুর তো দরকার নেই। এদের বিচার করতে হবে তুমি দোষ করেছো, তোমার এই বিচার। দেশ, সমাজ এগিয়ে নিতে হবে।’
আন্দোলনে বিদেশে থাকা লোকজনের সমর্থনের গুরুত্ব তুলে ধরে শফিক রেহমান বলেন, ‘বিদেশের ভূমিকা বলতে হবে। অনেকে বিদেশে বসে অনেক কিছু ফাঁস করে দিয়েছে। তাদের অনেক ভূমিকা রয়েছে। রেমিট্যান্স দেশে পাঠানো, টাকা জোগাড় করা। রেমিট্যান্স বন্ধ করা এসব কাজ বিদেশিরা করেছে। তাদের অবদান স্মরণ করতে হবে।’
দেশে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা লুটপাটের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, দেশে এখন ব্যাংক ৭০ টির মতো। রাজনৈতিক বিবেচনায় মুহিত সাহেব এগুলো চালু করার সুযোগ দিয়ে খারাপ কাজ করে গেছেন। এখন নিজেরা নিজের ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ডলারে পরিবর্তন করে। আর সেই ডলার চলে যাচ্ছে বেগমপাড়ায়। কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
বিজ্ঞাপন
নিজের জেল জীবনের কথা তুলে ধরে শফিক রেহমান বলেন, আমি যখন জেলে ছিলাম তখন অনেককে পাশে পাইনি। আমার স্ত্রী সবসময় আমার পাশে ছিল। তাই সবাইকে বলব জেলে গেলে বোঝা যায় প্রকৃত বন্ধু কে। তাই মানুষের প্রকৃত বন্ধুকে চিনতে হলে একবার জেলে যাওয়া উচিত। পাশাপাশি রূপ দেখে মুগ্ধ না হয়ে একই মানসিকতার কিনা সেটা দেখে বিয়ে করা উচিত।
ছাত্র বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় বসা নতুন সরকারকে বিপ্লবী সরকার আখ্যা দিয়ে এই সাংবাদিক বলেন, এখন সব বিপ্লবী আইন চলবে। তিনি বলেন, ‘যারা আন্দোলনে মারা গেছে তাদের প্রত্যেক শহরে শহরে ছবিসহ নামফলক করতে হবে। তার আগে কতজন মারা গেছেন, কতজন আহত হয়েছে তা জানতে হবে।
অনুষ্ঠানে ১৬মাস আয়নাঘরে বন্দি থাকা সাবেক রাষ্ট্রদূত এম মারুফ জামান, শফিক রেহমানের স্ত্রী তালেয়া রহমান, কবি আব্দুল হাই শিকার, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বিইউ/এমআর

