বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

নিজের গাড়িতে কারাগারে যেতে চেয়েছিলেন হাজী সেলিম!

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ মে ২০২২, ১২:১৮ এএম

শেয়ার করুন:

নিজের গাড়িতে কারাগারে যেতে চেয়েছিলেন হাজী সেলিম!

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় অবশেষে কারাগারে যেতে হলো আলোচিত সংসদ সদস্য হাজী সেলিমকে। রোববার (২২ মে) দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য উচ্চ আদালতের নির্দেশে ঢাকার ৭ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়েছিলেন। শুনানি শেষে বিচারক শহীদুল ইসলাম তা নাকচ করে দেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, সংসদ সদস্য হাজী সেলিমকে অসুস্থ, বাক প্রতিবন্ধী, স্ত্রী নেই এই তিনটি যুক্তিতে জামিন দিতে আবেদন করেন তার আইনজীবী। কিন্তু আদালত বলেন, নো, তাকে একদিনের জন্য হলেও জেলে থাকতে হবে। পরে নিজের গাড়িতে তিনি কারাগারে যেতে চান, তবে আদালত সেটাও আমলে নেননি।


বিজ্ঞাপন


তবে আদালত তাকে কারাগারে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা প্রদান ও কারাগারের তত্ত্বাবধানে দেশের উন্নতমানের হাসপাতালে ‘বেটার ট্রিটমেন্ট’ দিতে বলেছেন।

প্রথমে হাজী সেলিমের জামিন শুনানি হয়। তার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী প্রাণ নাথ ও সাইয়েদ আহমেদ রাজা। দুদকের পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল জামিনের বিরোধিতা করেন।

পরে দণ্ডিত সেলিমের পক্ষে চাওয়া হয় কারাগারে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা ও উন্নতমানের চিকিৎসা। আসামির আইনজীবীরা বলেন, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় সেলিম কথা বলতে পারেন না, তিনি এখন বাক প্রতিবন্ধী।

অন্যদিকে কাজল বলেন, যেহেতু ১০ বছরের কারাদণ্ড, সেহেতু জামিন দেওয়ার সুযোগ এ আদালতের নেই। আর ডিভিশন ও কারাগারে চিকিৎসার বিষয় বিবেচনা করবে কারা কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়েও আদালতে সরাসরি কোনো আদেশ দিতে পারে না, বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষের ওপর ছেড়ে দিতে হবে।


বিজ্ঞাপন


কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে হাজী সেলিম শুনানি শুনছিলেন। পরে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে অন্য দুই আবেদনের বিষয়ে পরে আদেশ দেবেন বলে খাসকামরায় চলে যান।

অপেক্ষায় থাকার মধ্যে হাজী সেলিম গরমে খারাপ বোধ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে মামলার নথিপত্রের ঢিবি মাথার নিচে রেখে টেবিলে শুয়ে পড়েন। ছেলে সোলায়মান সেলিম এবং ব্যক্তিগত সচিব এমরান চৌধুরী এসময় বোতল থেকে তাকে পানি খেতে দেন।

জামিন আবেদন নাকচের ২০/২৫ মিনিট পরে ডিভিশন ও চিকিৎসার বিষয়ে আদেশের সত্যায়িত কপি আসামি পক্ষের হাতে আসে।

33

সেখানে বলা হয়, 'দাবি মতে দরখাস্তকারী আসামি একজন সংসদ সদস্য এবং ভালো চরিত্রের অধিকারী, তার সামিাজিক মর্যাদা, আসামি যে অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন তার ধরন, ইত্যাদি বিবেচনায় তাকে জেলকোডের বিধান অনুযায়ী ডিভিশন-১ প্রদান অথবা উন্নতমানের চিকিৎসা প্রদানের প্রয়োজনীয়তা থাকলে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করা হলো।'

পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আদালতের গারদখানা থেকে পুলিশের গাড়িতে করে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয় তিনবারের এই সংসদ সদস্যকে।

হাজী সেলিমের আইনজীবী সাইয়েদ আহমেদ রাজা ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা আদালতকে বলেছিলাম তিনি যেহেতু অসুস্থ মানুষ তাই ব্যক্তিগত গাড়িতে বা আমাদের ব্যবস্থাপনায় অ্যাম্বুলেন্সে কারাগারে নেওয়ার ব্যবস্থা করি। কিন্তু সেটা আমলে নেয়নি।

এদিকে কারাগারে তাকে ডিভিশন সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল আলম বলেছেন, সাজা পরোয়ানা মূলে আসামি হাজী সেলিমকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে।

হাজী সেলিম ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য। আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উপদেষ্টমণ্ডলীতে রয়েছেন। বিগত কমিটিতে তিনি সদস্য ছিলেন। এর আগে অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।

বিইউ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর