শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রীদের আলোচনা সভায় যুব মহিলা লীগ নিয়ে প্রশ্ন

কাজী রফিক
প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২৪, ১০:১৭ পিএম

শেয়ার করুন:

সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রীদের আলোচনা সভায় যুব মহিলা লীগ নিয়ে প্রশ্ন

সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রীদের আলোচনায় সভায় প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সক্রিয়তা ও সক্ষমতা নিয়ে। সাবেকদের দাবি, সংগঠনটি আগের তুলনায় কম শক্তিধর। এ নিয়ে আলোচনা সভায় ক্ষোভ ঝেড়েছেন কয়েকজন, হয়েছে বাকযুদ্ধ।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) ধানমণ্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রীদের নিয়ে আলোচনায় বসেন নাজমা আক্তার। তিনি যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি।


বিজ্ঞাপন


বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আলোচনা সভায় বক্তব্যকালে একজন গণমাধ্যমকর্মী ও বর্তমান আওয়ামী লীগ নেত্রী বর্তমান যুব মহিলা লীগের সক্রিয়তার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন।

একইভাবে অভিযোগ করেছেন সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন। তিনি বলেন, যুব মহিলা লীগ মাঠে নেই, কাজ করে না। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও সাবেক নেত্রীদের ঢাকা হয় না।

যুব মহিলা লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ থেকে বহিষ্কৃত এই নেত্রীর বক্তব্যের তাৎক্ষণিক বিরোধিতা করেন আরেকজন। তিনি বলেন, আপনি এভাবে বলতে পারেন না।

পরে উপস্থিত নাজমা আক্তার ও অপু উচিত সবাইকে থামিয়ে দেন।


বিজ্ঞাপন


বৈঠকে উপস্থিত এক নেত্রী পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা মেইলকে বলেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রীদের আলোচনা সভা হয়েছে। এভাবে যুব মহিলা লীগ নিয়ে আলোচনা কেন? অযথা একটা সংগঠনকে টেনে এনে কথা কাটাকাটি করা হলো।

jubo-mahila-league1

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি নাজমা আক্তার ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা মনে করছি, দেশ এই মুহূর্তে একটা দু:খজনক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশকে রক্ষার জন্য আমরা যারা পুরনোরা আছি, তারা জননেত্রী শেখ হাসিনার পাশে আছি, সেটা জানানোর জন্য এই সভা ডাকা হয়েছিল।

নাজমা আক্তার বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনের পেছন থেকে যে ষড়যন্ত্র, তা মোকাবিলায় অনেক সাবেকরা ভূমিকা রেখেছে। মাননীয় নেত্রী মনে করছেন, যারা সাবেকরা আছেন, বঞ্চিত আছেন, তাদের সবাইকে একত্রিত করার জন্য।

সভায় যুব মহিলা লীগের সক্রিয়তার বিষয়ে দুপক্ষের কথা কাটাকাটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, এটা জাস্ট আলোচনা। সাবিনা আক্তার তুহিন বলেছেন, আমাদের অভিজ্ঞতা আছে। চার দলীয় জোট সরকারকে আমরা মোকাবিলা করেছি। আমাদেরকে উপেক্ষা করে যুব মহিলা লীগের কমিটি হইছে। তারা আমাদেরকে কোনো কাজেও লাগায় নাই, কোনো পদ-পজিশনও মেয়েদেরকে দেয় নাই। তাদেরকে হেয় করে। এজন্য সে প্রতিবাদ করছে।

যুব মহিলা লীগের বর্তমান কমিটি প্রসঙ্গে নাজমা আক্তার বলেন, তারা নিষ্ক্রিয় না। তারা আমাদের মতো না পারলেও তারা ছিল। আমরা যেভাবে ভূমিকা রেখেছিলাম বিভিন্ন আন্দোলনে-সংগ্রামে, ওরা হয়ত ওইভাবে করতে পারে নাই। কিন্তু ওরা মাঠে ছিল।

বৈঠকের পরেই এ বিষয়ে অবগত হয়েছেন সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজি। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, ‘আমাদের মেয়েরা মাঠে ছিল। আমি এবং আমার সেক্রেটারি পুরোটা সময় মাঠে ছিলাম। সাবেকরা মনে করেন, তারা বেশি শক্তিশালী ছিল। জোট সরকারের আমলে আমি নিজেই তো আন্দোলন, সংগ্রাম করেছি। সেগুলোর প্রমাণ দেওয়ার কিছু নাই। গণমাধ্যমে হাজার হাজার ছবি আছে।’

আলেয়া সারোয়ার ডেইজি বলেন, ‘আমি এখন একটা সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছি। আমার সেক্রেটারিও সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী। আমরা দুইজন মিলে কোটা আন্দোলনের নামে যে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতা, এই পুরো সময়টা মাঠে আছি। গুলিস্তানে ছিলাম, ধানমন্ডিতে ছিলাম। নানক ভাই আসাদগেটে অবস্থান নিতে বলেছিলেন, সেখানে ছিলাম। আমাদের মেয়েরা কোনো স্পটে অনুপস্থিত তো ছিল না।’

ডেইজি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের বেশ কয়েকটা মেয়ে এই সংঘর্ষের মধ্যে পা ভেঙেছে, আহত হয়েছে। এখন কি কেউ মারা যাওয়া দরকার ছিল? কেউ মারা গেলে বা কারো শ্লীলতাহানি হলে আমাদের সক্রিয় এটা প্রমাণ হতো?’

যুব মহিলা লীগ সভাপতি বলেন, ‘যুব মহিলা লীগ একটি আদর্শিক সংগঠন। সব আন্দোলন-সংগ্রামে এই সংগঠন মাঠে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আন্দোলন, সংগ্রামে ভয় পায়, কিংবা গা ঢাকা দেয় এমন একটা মেয়েও এই সংগঠনে নেই।’

কারই/এমএইচটি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর