শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

আমরা কাউকে পদ্মায় চুবাতে চাই না: নুর

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২০ মে ২০২২, ০৮:৩৭ পিএম

শেয়ার করুন:

আমরা কাউকে পদ্মায় চুবাতে চাই না: নুর

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের সমালোচনা করে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সমগ্র জাতি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। সবাই তার বক্তব্যের সমালোচনা করছে। এখন আমরাও তো তার মতো পদ্মা সেতুতে কাউকে চুবায় ফেলতে পারি না। তাহলে তার আর আমাদের মাঝে পার্থক্য কি? আমরা কাউকে চুবাতে চাই না।’

শুক্রবার (২০ মে) বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।


বিজ্ঞাপন


গত বুধবার আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধের জন্য শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দোষারোপ করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘একটি এমডি পদের জন্য পদ্মা সেতুর মতো সেতুর টাকা বন্ধ করেছে, তাকে পদ্মা নদীতে দুইটা চুবানি দিয়ে তোলা উচিত। মরে যাতে না যায়, পদ্মা নদীতে একটু চুবানি দিয়ে সেতুতে তুলে দেওয়া উচিত। তাহলে যদি শিক্ষা হয়।’

জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানানো হচ্ছে বলে খালেদা জিয়া যে মন্তব্য করেছিলেন তার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, ওখানে চড়া যাবে না। চড়লে ভেঙে পড়বে। আবার তার সঙ্গে কিছু দোসরেরাও…তাদেরকে এখন কী করা উচিত? পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে টুস করে নদীতে ফেলে দেওয়া উচিত।’

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে নুরুল হক নূর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী একজন নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিকে পদ্মা সেতুতে চুবাতে চেয়েছেন। আপনার-আমার মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে। তার অনেক কাজের পছন্দ-অপছন্দ থাকতে পারে। বাংলাদেশের একজন ব্যক্তি যিনি বিশ্বের যেকোনো রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে পাঁচ মিনিটে যোগাযোগ তৈরি করতে পারেন। ফোনে সরাসরি কথা বলতে পারেন। অথচ এই সরকার কিভাবে সেই ড. ইউনুসকে বেইজ্জতি করেছে। তাদের নোংরামি আজ সারা বিশ্ব দেখেছে। আমাদের নতুন করে আর কিছু বলার নাই।’


বিজ্ঞাপন


গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীসহ সংসদ সদস্যরা ও তার দোসররা উন্মাদ হয়ে গেছে। সে কারণে রেজা কিবরিয়ার মতো মানুষকে নিয়ে তার বাবাকে নিয়ে আজেবাজে কথা বলতে পারে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি বলেন, ‘পৃথিবীর কাউকে ভয় করে বাঁচতে চাই না। একজন মুসলমানের সন্তান হিসেবে আমরা বিশ্বাস করি একবিন্দু রক্ত থেকে আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন। চরাঞ্চলের একজন কৃষকের সন্তান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি নির্বাচিত করে সম্মানিত করেছেন। আপনাদের নেতা বানিয়েছেন। কাজেই ভয় করি একমাত্র আল্লাহকে। আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করি না।’

গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক ধারা পরিবর্তন করতে চাই। তাই আমাদের কথাবার্তা আচার আচরণ পরিবর্তন করতে হবে। বর্তমানে রাজনীতি গুণ্ডা-পাণ্ডাদের আখরায় পরিণত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে আজ শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই এসব দেখতে পারছে। আমাদের আচার-আচরণের মধ্যে সেই পরিবর্তনটা আনতে হবে।

গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সদস্যসচিব আতাউল্লাহ বলেন, ‘সবকিছুর দাম বাড়ছে। মানুষ ক্ষুধা ও দারিদ্রের সঙ্গে সংগ্রাম করছে। দেশ ফেরাউনের নীতিতে শাসন হচ্ছে, জালিম শাসক তার জুলুমের মসনদ টিকিয়ে রাখতে প্রতিবাদী মানুষকে ডুবিয়ে মারতে চায়। ফেরাউন ডুবিয়ে মারতে পারেনি, শ্রীলঙ্কার রাজাপাকসে জনগণকে ডুবিয়ে মারতে চেয়ে উল্টো ঘটনা ঘটেছে।’

গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হানিফ বলেন, ‘ড. রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে গণঅধিকার পরিষদের উত্থানকে সরকার ভয় পায় বলে দেশের বিভিন্ন স্থানে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করছে। আপনারা তো বলেছেন পদ্মা নদীতে চুবাবেন, জনগণ সুযোগ পেলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বুড়িগঙ্গা নদীতে চুবাবে। কেননা বুড়িগঙ্গার পানিতে ময়লা বেশি। ২০১৪ সাল কিংবা ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতো নির্বাচন আর হতে দেবে না গণঅধিকার পরিষদ।’

বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক জাফর মাহমুদ বলেন, ‘এই সরকারের দুই গুণ। দুর্নীতি আর মানুষ খুন। সরকারের সমস্ত শরীরে ক্যান্সার ধরেছে এখন মেরোফেনাম ও এস্টেরয়েড  দিতে হবে। এ সরকার মানুষের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, কথার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। সবাইকে নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’

বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, গণঅধিকার পরিষদ যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, শাকিল উজ্জামান প্রমুখ।

টিএই/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর