শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪, ঢাকা

ঢাকায় বড় জমায়েতের ভাবনা বিএনপির

বোরহান উদ্দিন
প্রকাশিত: ২৯ জুন ২০২৪, ০৯:২১ এএম

শেয়ার করুন:

দ্রুত সমাবেশ শেষ করার পরিকল্পনা বিএনপির
ফাইল ছবি

• ব্যানার-ফেস্টুনে নেতাদের ছবি ব্যবহার না করতে কড়া বার্তা
• মহানগরে শীর্ষ পদপ্রত্যাশীদের শোডাউনের প্রস্তুতি
• যোগ দেবেন ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলার নেতাকর্মীরা
• আওয়ামী লীগের পাল্টা সমাবেশ থাকায় সতর্ক থাকার নির্দেশনা
• খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন তরান্বিত করার চিন্তা 

সবশেষ সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি প্রায় আট মাস পর দলীয় প্রধানের মুক্তির দাবিতে ফের মাঠে নামছে। গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে উদ্বেগ বাড়ায় তার মুক্তির দাবিতে শক্ত আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে চায় বিএনপি। তাই শনিবার (২৯ জুন) পূর্ব ঘোষিত নয়াপল্টনের সমাবেশে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী জমায়েত করতে চায় দলটি। ঢাকা মহানগর ও জেলা ছাড়াও আশপাশের জেলা থেকেও নেতা-কর্মীদের যোগ দেওয়ার নির্দেশনা আছে বলেও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।


বিজ্ঞাপন


দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আজ দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ শুরু হবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটি ও কেন্দ্রীয় নেতারা এতে বক্তব্য রাখবেন। এতে সভাপতিত্ব করবেন মির্জা আব্বাস।

গত জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে অক্টোবরে বড় কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। এরপর নির্বাচন বর্জন করা দলটি সেইভাবে কোনো কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামেনি। যে কারণে এবারের সমাবেশকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

ঢাকায় কমিটি বিলুপ্ত হওয়ায় কেন্দ্রীয় বিএনপির ব্যানারে এই সমাবেশ হবে। এতে আগতদের ব্যানার ও ফেস্টুনে শুধু বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি ব্যবহারের জন্য কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে এমন সময় এই কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে যখন ঢাকার দুই মহানগর বিএনপির কমিটি নেই। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় যুবদলের মতো সংগঠনেরও কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ফলে সহসাই নতুন কমিটি হতে পারে এমন গুঞ্জন থাকায় পদপ্রত্যাশীরা নিজেদের বলয় থেকে সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিতের চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।


বিজ্ঞাপন


জানা গেছে, এইদিনে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সমাবেশ ডেকেছে আওয়ামী লীগ। তাই সমাবেশকে কেন্দ্র করে সতর্ক থাকবেন বিএনপি নেতাকর্মীরাও।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় কমিটি বিলুপ্ত হওয়ায় কেন্দ্রীয় বিএনপির ব্যানারে এই সমাবেশ হবে। এতে আগতদের ব্যানার ও ফেস্টুনে শুধু বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি ব্যবহারের জন্য কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এই সমাবেশের বড় ফোকাস চেয়ারপারসনের মুক্তি। কারণ তার শারীরিক অবস্থার এত বেশি অবনতি যে সবাই উদ্বিগ্ন। এমন পরিস্থিতিতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা না গেলে প্রশ্নের মুখে পড়বে বিএনপির নেতৃত্ব। দলীয় কড়া নির্দেশনা আছে বড় জমায়েতের। কারণ এর থেকে সরকারকে বিএনপি বার্তা দিতে চায়।

সমাবেশে কোনো দলীয় নেতার শ্লোগান হবে না, ব্যানারে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান ছাড়া কোনো ব্যক্তির ছবি রাখা যাবে না বলে প্রস্তুতি সভায় নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

তিনি বলেছেন, অনেক মহাপুরুষকে দেখি বিএনপি কার্যালয়ের আশপাশে নিজের বিশাল ছবি দিয়ে ব্যানার টাঙ্গিয়ে রাখে। তাদের কিন্তু মাঠে দেখা যায় না। ব্যস্ত থাকেন চামচামিতে।

bnp
সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির ফেস্টুন

ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হাসান টিটু ঢাকা মেইলকে বলেন, অনেকদিন পর সুনির্দিষ্ট করে ম্যাডামের (বেগম খালেদা জিয়া) জন্য কর্মসূচি। আশা করছি বড় ধরণের জমায়েত হবে। সেইভাবেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রস্তুতিও তেমন। এবার ব্যক্তিগতভাবে কারও কোনো ছবি ব্যবহার না করতে কড়া নির্দেশনা আছে।

গত বুধবার (২৬ জুন) দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায় নিতে ঢাকায় সমাবেশসহ প্রথম দফায় তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।

হঠাৎ অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করে সিসিইউতে রাখা হয়। এরপর গত রোববার খালেদা জিয়ার শরীরে পেসমেকার বসানো নয়। এরপরই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।

কর্মসূচি ঘিরে গত কয়েকদিন ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতারা দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক প্রস্তুতিসভা করেছেন। দুপুরে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে আসার নির্দেশনা আছে।

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বলেছেন, ঢাকায় শনিবার বিকেলে, ১ জুলাই সোমবার সমাবেশ হবে সারাদেশে মহানগরগুলোয় এবং ৩ জুলাই সারাদেশের জেলা সদরে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সমাবেশ করবে বিএনপি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে অনেক দিন পর কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। পাশাপাশি দলে বড় ধরণের রদবদলের পর দেশজুড়ে মাঠে নামার আগে ঢাকার সমাবেশকে নিজেদের সাংগঠনিক প্রস্তুতি হিসেবেও দেখছেন বিএনপি নেতারা।

বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই সমাবেশের বড় ফোকাস চেয়ারপারসনের মুক্তি। কারণ তার শারীরিক অবস্থার এত বেশি অবনতি যে সবাই উদ্বিগ্ন। এমন পরিস্থিতিতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা না গেলে প্রশ্নের মুখে পড়বে বিএনপির নেতৃত্ব। দলীয় কড়া নির্দেশনা আছে বড় জমায়েতের। কারণ এর থেকে সরকারকে বিএনপি বার্তা দিতে চায়।

দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে অনেক দিন পর কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। পাশাপাশি দলে বড় ধরণের রদবদলের পর দেশজুড়ে মাঠে নামার আগে ঢাকার সমাবেশকে নিজেদের সাংগঠনিক প্রস্তুতি হিসেবেও দেখছেন বিএনপি নেতারা।

জানা গেছে, এ কর্মসূচি ঘিরে গত কয়েকদিন ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতারা দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক প্রস্তুতিসভা করেছেন। দুপুরে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে আসার নির্দেশনা আছে।

জানা গেছে, সদ্য বিলুপ্ত ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির শীর্ষ নেতারা এবং পদপ্রত্যাশী নেতারাও নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি নিয়েছেন। যুবদলের পদ প্রত্যাশী নেতারাও এদিন বড় শোডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের ব্যানারেও সমানতালে প্রস্তুতি নিয়েছে।

2

প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আমিনুল হক ঢাকা মেইলকে বলেন, সমাবেশ নিয়ে আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। নেত্রীকে মুক্ত না করে আমরা কেউ ঘরে ফিরে যাব না। এই আন্দোলন ক্রমেই আরও জোরালো হবে।

কর্মসূচি ঘোষণার দিন বিএনপি মহাসচিবও এই আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন।

এদিকে শনিবারের সমাবেশের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশকে (ডিএমপি) চিঠি দিয়ে অবহিত করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার বিকেলে ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে গেছেন দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এডমিন) একেএম হাফিজ আক্তারের সঙ্গে তারা বৈঠক করেন।

শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি জানিয়েছেন তাদেরকে সমাবেশ করতে মৌখিকভাবে পুলিশের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন ঢাকা মেইলকে বলেন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার পর বড় কর্মসূচি হচ্ছে নয়াপল্টনের সমাবেশ। অতীতের মতো চেয়াপারসনের মুক্তি চেয়ে এই সমাবেশে ছাত্রদলের সর্বোচ্চ উপস্থিতি থাকবে। সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

বিইউ/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর