বাংলাদেশের একটা লোক না খেয়ে মরেছে? সংকট আছে, কষ্টে আছে? — এমন প্রশ্ন তুলেছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।
শনিবার (৬ এপ্রিল) টি অ্যান্ড টি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, মতিঝিল, যুবলীগের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন।
বিজ্ঞাপন
শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সম্মানিত অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।
শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে উঠে পত্রিকায় তাকালেই দেখি মির্জা ফখরুল বলছেন দেশে এক ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে, কোথায়? বাংলাদেশের একটা লোক না খেয়ে মরেছে? সংকট আছে, কষ্টে আছে। দুনিয়ার অনেক দেশের চেয়ে আমরা ভাল আছি, আল্লাহর রহমতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকের সংকট কেটে যাবে আশা করি।’
শেখ হাসিনা মানবিক নেত্রী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা কত মানবিক নেত্রী। যেখানে আওয়ামী লীগের মত বড় দলের বড় বড় পার্টি করার কথা, আমরা পার্টি করছি না। শেখ হাসিনা বলেছেন ইফতার গরিবের মাঝে বিতরণ করতে হবে। অথচ বিএনপি-জামায়াত এক সঙ্গে ইফতার পার্টি করে, আওয়ামী লীগের গীবত গায়।’
সভাপতির বক্তব্যে শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ইতিহাসের কি নিদারুণ নিটোল পরিণতি-একজন পিতা হাজারো অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে বিশ্বের বুকে আদর্শিক একটি স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন, আবার তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ওই স্বাধীন দেশকে অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগসহ সব দিক থেকে বিশ্বের বুকে সফল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করেছেন। পিতা ও কন্যার এমন সাফল্য, সুযোগ্য নেতৃত্ব বিশ্বের ইতিহাসে সত্যিই বিরল। দুই প্রজন্ম ধরে এমন কৃতিত্বের ফলে বাংলাদেশের জনগণের সাথে বঙ্গবন্ধুর সংগঠন, আওয়ামী লীগের গভীর বন্ধন সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন-গত ১৫ বছরে এত অর্জন স্বত্বেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আজকে যে ষড়যন্ত্র চলছে সেটা এদেশের উন্নয়ন ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, এদেশের মেহনতি-কর্মজীবী মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, আপনাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবিলায় আমাদের অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বিজ্ঞাপন
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি, পঁচাত্তরের ঘাতক এবং তাদের দোসরদের সামনে একমাত্র বাধা জননেত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনাকে ছলে-বলে-কৌশলে দুর্বল করতে পারলেই পরাজিত শক্তি উত্থান হতে পারে। সেকারণে এই সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের এক পরিকল্পিত নীলনকশার বাস্তবায়ন চলছে। এই নীলনকশার অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে মিথ্যাচার এবং অপপ্রচার। সারাক্ষণ শেখ হাসিনার গণমানুষের সরকারকে ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী এবং আধিপত্তবাদি দানব সরকার বলে লেবেল করে যাচ্ছেন মির্জা ফখরুল সাহেবরা। ফ্যাসিবাদের প্রকৃত সংজ্ঞাই মানুষ এখন ভুলে গেছে এদের মিথ্যাচারের ফলে। ’৭১-এর ঘাতক এবং ’৭৫-এর ঘাতকদের নিয়ে যেই দলের সৃষ্টি, যেই দল যখনই ক্ষমতা দখল করেছে সর্বদা এদের মানুষকে শোষণ, নিপীড়ন এবং নির্যাতন করেছে, তারা এখন শেখ হাসিনার জনগণের সরকারকে সারাক্ষণ গালিগালাজ করে যাচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমে এত গালি-গালাজ করেও মিথ্যাচার করছে, ‘সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নাই’! বলে এই ওদের চরিত্র। জনসমর্থন অর্জন করার ক্ষমতা নাই কিন্তু স্বপ্ন দেখছে যে জনগণ ওই খুনিদের ডাকে সাড়া দিয়ে ঘর থেকে বেড় হয়ে আসবে। গণআন্দোলনে শরীক হবে। কিন্তু জনগণের আস্থা অর্জন করতে হলে মিথ্যাচার আগে বন্ধ করতে হবে। তাহলে জনগণ আপনাদের ডাকে সাড়া দিতে পারে।
সঞ্চালকের বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের নেতা-কর্মী নির্দেশনা দিয়েছেন নিজেরা দামি দামি খাবার দিয়ে ইফতার না করে ইউক্রেন-রাশিয়ার এই যুদ্ধের মধ্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়াতে; মানুষের কল্যাণে কাজ করতে। বঙ্গবন্ধুকন্যার নির্দেশেই বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণসহ দেশের সকল জেলা-মহানগরের সাধারণ মানুষের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করছে; অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এ কারণেই যে, গত ৭ জানুয়ারি বিএনপি-জামাতের সকল ষড়যন্ত্র আর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে নৌকায় ভোট বঙ্গবন্ধুকন্যাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. হাবিবুর রহমান পবন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, মুহাম্মদ বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, আবু মনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, অ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দফতর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কাজী সারোয়ার হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল এমপি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, ক্রীড়া সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন চৌধুরী পারভেজ, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. হারিছ মিয়া শেখ সাগর, ধর্ম সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান সরদার, উপ-দফতর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মো. রাশেদুল হাসান সুপ্ত, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মো. গোলাম কিবরিয়া শামীমসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।
কারই/এমএইচটি

