সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

এবারও কৃচ্ছ্রতা সাধনে আওয়ামী লীগ! 

কাজী রফিক
প্রকাশিত: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:৫১ পিএম

শেয়ার করুন:

এবারও কৃচ্ছ্রতা সাধনে আওয়ামী লীগ! 
২০১৯ সালে গণভবনে প্রাঙ্গণে এতিম শিশুদের সঙ্গে ইফতার করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশে করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর ২০২০ ও ২০২১ সালে স্থবির হয়ে পড়েছিল দেশ। এই দুই বছর দেশে সব ধরনের রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড একপ্রকার বন্ধই ছিল। বন্ধ ছিল বড় পরিসরে ইফতার আয়োজনও। এই দুই বছর ঘরেই ইফতার করে মানুষ। করোনার প্রকোপ কেটে গেলে ২০২২ সাল থেকে আবারও স্বাভাবিক হতে থাকে মানুষের চলাচল। সরগরম হয়ে ওঠে রাজনীতির মাঠও। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসায় অন্যান্যবারের মতো রাজনীতিতেও ফেরে ইফতার। কিন্তু ২০২৩ সালে এসে কৃচ্ছ্রতা সাধনের লক্ষ্যে ইফতার আয়োজন থেকে সরে আসে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সিদ্ধান্ত হয়, ইফতার পার্টির টাকায় দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। দলীয় শীর্ষ পর্যায়ের সে সিদ্ধান্ত পালিত হয়েছে তৃণমূল পর্যন্ত৷

আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও এবারের আসন্ন রমজানের বড় ধরনের ইফতার আয়োজন থেকে সরে দাঁড়াতে পারে ক্ষমতাসীন দলটি। দলটির বেশ কয়েকজন নেতা এমন ইঙ্গিত দিলেও দলীয়প্রধানের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন তারা।


বিজ্ঞাপন


গতকাল বুধবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারিভাবে বড় ইফতার আয়োজন না করার নির্দেশনা দেন। বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে একটা নির্দেশনা আছে, সেটা হলো- রমজান মাসে সরকারিভাবে কোনো বড় ইফতার পার্টি উদযাপন করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী সবাইকে এই নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া বেসরকারিভাবেও এমন ধরনের বড় ইফতার পার্টির আয়োজনকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

জানা গেছে, সরকারের পাশাপাশি দলীয়ভাবেও একই সিদ্ধান্তের পথে হাঁটবে ক্ষমতাসীনরা। সেজন্য গতবারের মতো এবারও রাজনৈতিকভাবে ইফতার আয়োজন না করতে পারে দলটি।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ঢাকা মেইলকে বলেন, 'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেটা বলবেন, দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বাস্তবায়ন করবেন।'

২০২৩ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত নেতাকর্মীদের ইফতার মাহফিল আয়োজন না করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কৃচ্ছ্রতা সাধনের লক্ষ্যেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দলটি। ওই বছরের ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, 'দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত কোনো ইফতার পার্টি করবে না। প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কৃচ্ছ্রতা সাধন করবেন। এই বৈশ্বিক সংকটে তিনি গরিব মানুষের জন্য ইফতার ও খাদ্য সামগ্রী দলের পক্ষ থেকে তুলে দেবেন। ইফতার পার্টি করতে নেত্রী বারণ করেছেন। গণভবনেও কোনো ইফতার পার্টি হচ্ছে না।'


বিজ্ঞাপন


চলতি বছর সরকারি পর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়ার পর দলীয় পর্যায়েও এটি বাস্তবায়ন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দলটির কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের ধারণা রমজান নিয়ে শিগগিরই দলীয় নেতাকর্মীদের জন্য বিগত বছরের নির্দেশনা ফিরছে৷ 

দলের সেই নির্দেশনা পেলেই সাংগঠনিক কর্মসূচির দিকে হাঁটবে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো। সব সংগঠনই রমজানে দেশের দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে চায়৷ 

কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যান মাইনুল হোসেন খান নিখিলের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, 'নেত্রী যে নির্দেশনা দেবেন, আমরা সেটাই পালন করব।' কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পাওয়ার পর সাংগঠনিক কর্মসূচি ঠিক করা হবে বলে জানান যুবলীগ চেয়ারম্যান৷ 

বিগত সময়ের মতো দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা এবারও যুবলীগের পক্ষ থেকে অব্যাহিত থাকবে বলে জানান তিনি। নিখিল বলেন, 'নেত্রী যে নির্দেশনা দেবেন, সেটার আলোকেই জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায় আমরা আমাদের নির্দেশনা দেব।'

একই তথ্য দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নারী সংগঠন যুব মহিলা লীগের চেয়ারম্যান আলেয়া সারোয়ার ডেইজি। ঢাকা মেইলকে ডেইজি বলেন, 'নেত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন, আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী তা পালন করে আসছে এবং করবে৷ আসন্ন রমজানেও নেত্রীর সিদ্ধান্ত আমরা বাস্তবায়ন করব।'

যুব মহিলা লীগের চেয়ারম্যান বলেন, 'যুব মহিলা লীগের নেত্রীরা অন্যান্যবারের মতো এবারও ব্যক্তি সামর্থ্য অনুযায়ী দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াবে। সাংগঠনিকভাবেও আমাদের একই চিন্তা আছে।'

কারই/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর