ডামি নির্বাচনে ‘ডামি লাইন’ দেখিয়ে ভোটারদের অংশগ্রহণ দেখানো যাবে না বলে জানিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, দেশের মানুষ ভোটকে প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশে কোনো নির্বাচন নেই মানুষ তা জানিয়ে দিয়েছে।
রোববার (৭ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে একতরফা নির্বাচন বর্জন করে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নেতারা এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, সারাদেশে মানুষ ভোট দিতে যায়নি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জোরজবরদস্তি, হুমকি- ধামকি দিয়েও ভোটকেন্দ্রে জনগণকে উপস্থিত করতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন গণতন্ত্র আছে, এটাই নাকি প্রমাণ করতে মানুষ ভোট দিতে আসবে। কিন্তু মানুষ প্রত্যাখ্যান করে জানিয়ে দিয়েছে দেশে কোনো নির্বাচন নেই, গণতন্ত্র নেই। জনগণ ভোটকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
ভোট কেন্দ্র মানুষ আসতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে বিরোধী নেতারা বলেন, দেশের মানুষকে হুমকি ধমকি দিয়ে কিংবা প্রলোভন দেখিয়ে লাভ হয়নি। হাতে-পায়ে ধরেও ভোট কেন্দ্রে ভোটার আনতে পারেনি সরকার। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য দিয়েছেন, শতকরা ১ ভাগ ভোটার উপস্থিতি হলেও নির্বাচন আইনি বৈধতা পাবে। এর মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নিজেই পরোক্ষভাবে স্বীকার করলেন ভোটাররা এই একতরফা, ডামি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি।
তারা আরও বলেন, ৭ জানুয়ারি যেমন ফেলানীর লাশ কাটাটারে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল, তেমনি এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে বাংলাদেশের জনগণকেও ঝুলিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু জনগণ এই সরকারের একতরফা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে নতুন গণপ্রতিরোধের সূচনা করেছেন। এই গণপ্রতিরোধের উপর দাঁড়িয়েই জনগণের আন্দোলনকে বিজয়ী করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
সংস্কারের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, নতুন করে বাংলাদেশের আইন, সংবিধান, বিচারব্যবস্থা সংস্কার করতে হবে। এই দেশকে স্বাধীন ও মর্যাদাবান নাগরিকের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এই ভুয়া সরকার এবং মাফিয়াগোষ্ঠীকে ক্ষমতা থেকে হঠিয়ে দিয়ে জনগণের দেশ ও রাষ্ট্র গড়ে তোলার রাজনীতিকে গড়ে তুলতে হবে। রাষ্ট্র-সংবিধান, ক্ষমতা কাঠামো ইত্যাদির গণতান্ত্রিক সংস্কার করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রব্যবস্থার রূপান্তরের লড়াইকেই সামনে আনতে হবে।
এ সময় আগামী ৯ জানুয়ারি সকালে গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে সার্বিক পরিস্থিতির উপরে সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
সমাবেশের পর একটি মিছিল জাতীয় প্রেসক্লাব হতে পল্টন হয়ে পুনরায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়। সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমম্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু প্রমুখ।
এমএইচ/এইউ