২৬টি আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করলেও দেশের প্রায় সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছিল সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। তবে সমঝোতার আসনগুলোর বাইরে বেশির ভাগ জায়গাতেই তেমন আলোচনায় নেই জাপার প্রার্থীরা। এবার ভোটের মাত্র এক সপ্তাহ আগে একদিনে দেশের পাঁচটি আসনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। এর মধ্যে দুইজন প্রার্থী দুটি করে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) গাজীপুরের দুটি আসন, বরিশালের দুটি এবং বরগুনার একটি আসনে লাঙ্গলের প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটের মাঠ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
গাজীপুর-১ ও ৫ আসন থেকে লাঙ্গল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্য সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন। রোববার তিনি ঘোষণা দিয়ে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ান।
বিজ্ঞাপন
সাবেক এই আমলা গত মে মাসে গাজীপুর সিটি করপোরেশনে নির্বাচনেও জাতীয় পার্টি থেকে মেয়র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে ভোটের মাঠে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি।
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে এম এম নিয়াজ উদ্দিন বলেন, আমি আমার একান্ত ব্যক্তিগত কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম। এখানে ভিন্ন কোনো কারণ নেই। কোনো ইশারা বা চাপে সরে দাঁড়িয়েছেন এমন গুঞ্জন থাকলেও সেটি নাকচ করে দিয়েছেন তিনি।
এবার গাজীপুরের পাঁচটি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন সাবেক সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন। মনোনয়নপত্র বাছাইকালে ঋণখেলাপির কারণে রিটার্নিং কর্মকর্তা গাজীপুর-১ আসনে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন। তবে গাজীপুর-৫ আসনে তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। পরবর্তী সময়ে আপিল করে গাজীপুর-১ আসনের মনোনয়নও বৈধতা পান তিনি। তবে শুরু থেকেই তিনি ভোটের মাঠে তেমন সরব ছিলেন না। তখন থেকেই গুঞ্জন ছিল তিনি সরে দাঁড়াতে পারেন। অবশেষে সেটাই হলো।
এদিকে এই প্রার্থী ব্যক্তিগত কারণে সরে দাঁড়ানোর কথা বললেও বরিশালে দুটি আসনে লাঙ্গল নিয়ে নির্বাচন করা প্রার্থী নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ দাবি করে তা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) ও বরিশাল-৫ (সদর) আসনের লাঙ্গলের প্রার্থী ছিলেন। তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা। গত জুনের বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদেও প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে বদ্ধপরিকর মুখে বললেও তাদের আচরণে মনে হচ্ছে তারা সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। সরকার কিছু রাজনৈতিক দলকে দিয়ে নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে চাচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে আমার কাছে মনে হচ্ছে ৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যে নির্বাচনে সাধারণ মানুষের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। নির্বাচনে রয়েছে একটি দল আর সেই দলের লেজুড়ভিত্তিক কিছু মানুষ, তারাই এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। তাই সার্বিক বিবেচনায় আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এদিকে ভোটে মানুষের আগ্রহ নেই এমন কারণ দেখিয়ে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বরগুনা-১ (আমতলী-তালতলী) আসনের লাঙ্গলের প্রার্থী খলিলুর রহমান।
জাপা প্রার্থী বলেন, ২৬টি আসন নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সমঝোতা করায় এখন আমরা ভোটারদের সামনে যেতে পারছি না। ভোটারা আমাদের বিশ্বাস করেন না।
কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রশ্নই আসে না, নির্বাচনে ভোটারদের মধ্যে কোনো আগ্রহ নেই।
জেবি