দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী হতে মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই ৩০০ আসনের প্রার্থীরা রাতদিন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। দিচ্ছেন নারা প্রতিশ্রুতি। ব্যতিক্রম নয় কিশোরগঞ্জের ছয়টি আসনও। এসব আসনের ৩৯ প্রার্থী দিনরাত প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও নিজের মার্কায় ভোট চাচ্ছেন। তবে এর মধ্যে কিশোরগঞ্জ-১ আসনের নির্বাচন ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের দুই ভাই-বোন পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় আসনটিতে নির্বাচন এমন মাত্রা পেয়েছে।
কিশোরগঞ্জ সদর ও হোসেনপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত কিশোরগঞ্জ-১ আসনে মোট সাতজন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে তার মধ্যে বেশি আলোচনা হচ্ছে দুই ভাইবোনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিয়ে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ আশরাফের ছোট ভাই সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম এবং বর্তমান এমপি ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি।
বিজ্ঞাপন
জাকিয়া নূর লিপি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে লড়াই করছেন লিপির বড় ভাই সাফায়েতুল। দেশের সাবেক প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের এই দুই সন্তান এমপি হতে রাতদিন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
গতকাল বুধবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে নির্বাচনী এলাকায় জনসংযোগ করেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. জাকিয়া নূর লিপি। বিকেলে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে শহরের রথখোলা মাঠে নির্বাচনী পথসভায় অংশ নেন। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে নৌকা মার্কায় ভোট চান। লিপির সঙ্গে তার দুই ভাই ও এক বোন উপস্থিত ছিলেন।
জাকিয়া নূর লিপি জানান, এবারও নৌকা মার্কাই জয়ী হবে। জয়ের পর সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের অসমাপ্ত কাজগুলো বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দেবেন বলেও জানান তিনি।
একই পরিবার থেকে দুজন প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচনে কোনো প্রভাব পড়বে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জাকিয়া নূর বলেন, এটা আওয়ামী লীগের এলাকা। নৌকাই জয়ী হবে।
বিজ্ঞাপন
একইদিন সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ করেন লিপির বড় ভাই স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ সাফায়েতুল।
চাচাতো ভাই জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে বৌলাই ইউনিয়নের বৌলাই নতুন বাজার, পুরাতন বাজার ও চেয়ারম্যান বাজার এলাকায় ভোটারদের কাছে নিজের মার্কা ঈগল প্রতীকে ভোট চান তিনি।
সৈয়দ সাফায়েতুল বলেন, ‘নির্বাচনে নেমে এলাকার মানুষের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। জনগণ এবার আমাকেই ভোট দেবে। এমপি নির্বাচিত হলে অবহেলিত শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে স্বাস্থ্যবান্ধব করা ও শহরের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদী পুনর্খননসহ অসমাপ্ত এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
এদিকে একই আসনে দুই ভাইবোনের অংশ নেওয়ার বিষয়টি এখন জেলার সব শ্রেণি-পেশার মানুষের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে কিশোরগঞ্জ সদর- হোসেনপুর উপজেলাসহ জেলাজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সৈয়দ পরিবারে ভাইবোন প্রার্থী হওয়ায় সাধারণ ভোটাররা পড়েছেন বিপাকে। কাকে ভোট দেবেন এ নিয়ে দ্বিধায় আছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও।
উল্লেখ্য, সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুর পর কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হন সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি।
এমআর