বিএনপি দল হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও তাদের অনেকেই নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচনে বিএনপি কারা অংশ নেবে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে তা পরিষ্কার হবে।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়নপত্র বিতরণের সময় এসব কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
৭ জানুয়ারিকে ভোটের তারিখ ধরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। গত ১৫ নভেম্বর সিইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর।
নির্বাচনে অংশ নিতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও এখনো রাজপথে এক দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে ব্যস্ত বিএনপি। সরকারবিরোধী দলটির অনেক নেতা সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী বলে আওয়ামী লীগের অনেক নেতার বক্তব্য উঠে এসেছে। আজ ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ওবায়দুল কাদেরও একই কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে না এলেও তাদের অনেক নেতাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন। ৩০ তারিখ পর্যন্ত লাস্ট ডেট। মনোনয়ন দাখিল করা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন সব দেখতে পাবেন।’
বিজ্ঞাপন
আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায় মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা সরকারি দল। সরকারি দল শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। আমরা কেন বিএনপিকে ডিস্টার্ব করব। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা কেন সহিংস করব।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশে নির্বাচন হয়। সেখানে একসঙ্গে সব প্রার্থী ঘোষণা করে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনী কৌশল গত কারণেই দুটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেনি। নির্বাচনী জোট দলের স্বার্থেই করা হয়। ৩০ তারিখ মনোনয়ন দাখিলের সময় তখন বুঝা যাবে। আমরা পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে কাজ করব। দল থেকে ৭১ জন এমপি বাদ পড়েছে এই সংখ্যাটা বড় কিংবা ছোট সেটা নয়, মনোনয়ন বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আওয়ামী লীগের একটাই কথা জনগণের কাছে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী যে তাকেই দল মনোনীত করেছে। নির্বাচনী প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের কতগুলো ক্যাটাগরি আছে এর মধ্যে যারা পড়েছে তারাই আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।
বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা সবসময় পার্টিসিপেটরি নির্বাচন চাই। কিন্তু এই দলটি নির্বাচনের না এলেও ২০ থেকে ৩০টি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। বিএনপির নির্বাচনে আসবে কি না, এটা তাদের বিষয়। তবে নির্বাচনে আসা তাদের অধিকার।’
জাতীয় নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের আওয়ামী লীগ উৎসাহিত করছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উৎসাহিত না। স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচন করার রেওয়াজ আছে। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী যারা ছিলেন তাদের মধ্যেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে দলীয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। আমাদের অপজিশনকে সেসব বিষয় মাথায় রেখে নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক হবে এটা আমরা চাই। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য ভোটার না আসুক এটাও কেউ করতে পারে। নির্বাচনে ভোট যথাযথভাবে কাউন্ট হয় সে বিষয়ে মাথায় রাখা হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘ইতোমধ্যে নির্বাচনের বিষয় নিয়ে সারা বাংলাদেশে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করার পর সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে আনন্দ মিছিল হয়েছে তাতে মনে হয়নি বিরোধী দল নেই।’
কারই/এমআর