আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, তিনি (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন ঢাকা শহরে অবরোধ করলে মতিঝিলের মতো করা হবে। হেফাজতের মতো করা হবে। আরও অনেকেই বলেছে হাত-পা ভেঙে দেওয়া হবে। এগুলো সুস্থ চিন্তার লক্ষণ না। এতো ভাঙাভাঙি না করাই ভালো। নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তন ভালো। নির্বাচনে হারজিত আছে এতে কষ্ট পাওয়ার কিছু নাই।'
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও দলটির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে সাজার প্রতিবাদে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন।
বিজ্ঞাপন
সরকারের উদ্দেশ্যে দুদু বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে যদি পরিবর্তন না হয়ে অন্য কোনোভাবে পরিবর্তন হয় তাহলে এটা স্বাভাবিক কোনো পরিবর্তন হবে না। এটা অনেক মর্মান্তিক হবে এবং এজন্য অনেক বেশি মূল্য দিতে হবে।
দুদু বলেন, এই সরকারকে বিদায় করতে না পারলে বাংলাদেশ রক্ষা করা কঠিন হবে। মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত বাংলাদেশ থাকবে না। সত্যিকারের বাংলাদেশ গড়তে হলে মানবাধিকার, স্বাধীনতার, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ গড়তে হবে। আর তাই এই সরকারকে বিদায় করতে হবে।
দুদু বলেন, বাংলাদেশের অবস্থা আজ এরকম যে আপনি স্বাভাবিকভাবে কোনো কাজ করতে পারবেন না। রাস্তায় বের হলে, বাজারে গেলে, চিকিৎসা করতে গেলেও চিকিৎসা পাবেন না আপনি যত বড়ই কর্তা হন না কেন। মামলায় জামিন নিতে গেলে আপনি জামিন পাবেন না, যদি এই সরকারের কৃপায় না থাকেন। আর যদি আপনি এই সরকারের কৃপায় থাকেন তাহলে আপনাকে ব্যাংক লুট করতে হবে দুর্নীতির চরম শিখায় পৌঁছাবেন আপনার কোনো তদন্তই হবে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, লুটেরা, গণতন্ত্র হত্যাকারী এরা এখন বাংলাদেশের প্রভুত্ব করছেন। আজ যাদেরকে নিয়ে এ অনুষ্ঠান তারা নির্বাচন করলে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারাই জিতবে। আর এই কারণে তাদেরকে সাজা দেওয়া হয়েছে। হাবিবুর রহমান হাবিব ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের নেতা যদি স্বাভাবিক সুষ্ঠু নির্বাচন হয় সে জিতবে। তাকে নির্বাচন করতে দেওয়া যাবে না এই কারণে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। আহসান হাবীব লিংকন তিনি একটা পার্টির মহাসচিব একাধিকবার সংসদ সদস্য একই কারণে তাকেও সাজা দেওয়া হয়েছে। গায়েবি মামলার সাজা হয়। লুটেরা দুর্নীতিকারীদের মামলা সাজা হয় না তারা মন্ত্রী হয়, এমপি হয় পার্লামেন্টে থাকে।
বিজ্ঞাপন
দুদু আরও বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাকে স্বাভাবিক জীবন তো দূরে থাক উন্নত চিকিৎসার দরকার সেই চিকিৎসা বন্ধ করে দিয়েছে বর্তমান অবৈধ সরকার। তারেক রহমান সুদূর লন্ডন থেকে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার নামে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।
বিএনপির এই নেতা তিনি বলেন, আমরা একটি সুষ্ঠু ও ভালো নির্বাচন চাচ্ছি আর এই কারণেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাচ্ছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে বলছি। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ চাচ্ছি। এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন চাচ্ছি। আওয়ামী লীগ একসময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছিল। তত্ত্বাবধায়কের জন্য কী করে নাই তারা। এখন কেন তত্ত্বাবধায়ক দিতে ভয় পাচ্ছে তারা। ভয় পাওয়ার কারণ হল তারা জনপ্রিয়তার শূন্যের কোঠায় আছে।
সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মো. ফারুক রহমান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আলমগীর হোসেন, কৃষক দলের সাবেক নেতা সাদি, জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম সহ প্রমুখ।
বিইউ/এমআর