ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব ডেলিগেশন ও রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির সঙ্গে এবি পার্টি নেতৃবৃন্দের সৌজন্য বৈঠক ও মতবিনিময় হয়েছে। বুধবার (১১ অক্টোবর) বিকেল চারটায় গুলশানস্থ সংস্থাটির দফতরে এই মতবিনিময় হয়।
এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। মতবিনিময়কালে এবি পার্টি নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, সহকারী সদস্য সচিব ও উইমেন উইং ইনচার্জ ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি। দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি (রাজনৈতিক) সেবাস্তিয়ান রিগার-ব্রাউন মতবিনিময় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
আলোচনার শুরুতে এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ কিছুদিন আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ছয়জন নির্বাচন বিশেষজ্ঞের পর্যবেক্ষক দলের ঢাকা সফর ও তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে নিজেদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তারা বলেন, আসন্ন নির্বাচনে একটি পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক মিশন মোতায়েন করার সম্ভাব্যতা, পরামর্শ এবং উপযোগিতা মূল্যায়ন করে ইইউ পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা হতাশাজনক। কার্যকর রাজনৈতিক দল সত্ত্বেও এবি পার্টিকে নিবন্ধন না দেওয়া এবং নির্বাচন কমিশনের নানা বিতর্কিত কার্যক্রমে তাদের গ্রহণযোগ্যতার সংকট তৈরি হয়েছে বলে নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন।
এবি পার্টির প্রতিনিধিদল বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের ব্যবস্থা ছাড়া একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কল্পনা করা যায় না। দুঃখজনকভাবে গণতান্ত্রিক রূপান্তর, আইনের শাসন এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধার ক্ষেত্রে একটি জাতি হিসেবে বাংলাদেশের একটি বড় রাজনৈতিক ব্যর্থতা রয়েছে।
আলোচনাকালে রোহিঙ্গা ইস্যুতে নেতৃবৃন্দ বলেন, একটি বৈধ সরকার না থাকলে রোহিঙ্গা সংকট শীঘ্রই সমাধান করা যাবে না। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বারবার আহ্বান জানানো সত্ত্বেও, সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটিকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে আরও সামঞ্জস্যপূর্ণ করে সংস্কার করতে পারেনি, যা অনিবার্যভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করে বলে নেতৃবৃন্দ মত দেন।
প্রতিনিধিদল ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রফতানি হ্রাস সম্পর্কে তাদের দুশ্চিন্তার কথা তুলে ধরে বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক মন্দা কাটাতে ও প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে গার্মেন্টস এবং টেক্সটাইল ছাড়াও অন্যান্য পণ্য আমদানির জন্য ইইউ কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে আমরা আশাবাদী। এবি পার্টি নেতারা শ্রম অধিকারের ক্ষেত্রে তাদের দলের দৃঢ় প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেন। শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করা, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার, কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণ, যৌন হয়রানি বন্ধসহ ভালো কাজের পরিবেশের জন্য শিল্প ও ক্রেতাদের গাইডলাইন অনুসরণ করার বিষয়ে ইইউ’র সঙ্গে কার্যকর মতৈক্যে পৌঁছার আভাস দেন।
বিজ্ঞাপন
এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জে বাংলাদেশ অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ এবং সব ধরনের দুর্যোগ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে রয়েছে এই অঞ্চল। একটি সবুজায়িত বিশ্বের জন্য এই সংগ্রামে সহায়তার জন্য এবং বাংলাদেশকে তার পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হতে সহায়তা করার জন্য দেশবাসী ইইউ’র প্রতি কৃতজ্ঞ।
রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি এবি পার্টির তাদের রাজনীতির ধারণা ও কর্মসূচিগুলো শোনেন।
এমআর

