শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

দলীয় কর্মসূচিতে এমপিদের ‘বড় ভূমিকা’ চান নেতাকর্মীরা

কাজী রফিক
প্রকাশিত: ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ১০:০২ পিএম

শেয়ার করুন:

দলীয় কর্মসূচিতে এমপিদের ‘বড় ভূমিকা’ চান নেতাকর্মীরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক মাস বাকি। সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে কঠোর অবস্থানে বিএনপি। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে অনড়। দুই দলের এমন ‘ছাড় না দেওয়া’ অবস্থানের কারণে উত্তপ্ত রয়েছে রাজপথ। এমন অবস্থায় সঠিক সময়ে ভোট নিয়ে ‘অনিশ্চয়তা’ থাকলেও নির্বাচন সামনে রেখে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন ক্ষমতাসীনরা। বর্তমান সরকারের আমলে হওয়া উন্নয়নের বার্তা তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছানোর পাশাপাশি বিএনপির কর্মসূচির বিপরীতে ‘শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ’ করে আসছে আওয়ামী লীগ। এসব কর্মসূচিতে ক্ষমতাসীনদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি চোখে পড়লেও ঢাকার অনেক সংসদ সদস্যকে তেমন ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় না। ফলে তাদের ভূমিকা নিয়ে খোদ দলের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।

দলটির নেতাকর্মীরা মনে করেন, দলের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাকর্মীরা যেভাবে প্রতিটি কর্মসূচিতে ভূমিকা রাখছে, সংসদ সদস্যদেরও তেমন ভূমিকা রাখা উচিত।


বিজ্ঞাপন


গত ৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শান্তি সমাবেশ করে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। ঢাকা-১৩ আসনের অন্তর্গত তিন থানার নেতাকর্মীরা এই সমাবেশে যোগ দেন। মোহাম্মদপুর, আদাবর, শেরে বাংলা নগর থানা আংশিকের প্রায় সকল সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন ওই সমাবেশে। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য সাদেক খান। তবে আয়োজন বড় হলেও নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ ততটা চোখে পড়েনি। সংসদ সদস্য নিজে উপস্থিত থাকার পরেও কর্মী সমাগম তেমনটা ছিল না।

উপ-নির্বাচনে ঢাকা-১০ আসন থেকে সংসদ সদস্য হওয়া শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনকে দলীয় কর্মসূচিতে খুব একটা দেখা যায় না বলে অভিযোগ করেন দলীয় নেতাকর্মীরাই।

একই চিত্র ঢাকা-১৪ সংসদীয় আসনেও। উপ-নির্বাচনে আসনটির সংসদ সদস্য হয়েছেন আগা খান মিন্টু। তবে দলীয় কর্মসূচিতে তার সক্রিয়তা তুলনামূলক কম বলেই মনে করেন দলীয় নেতারা৷


বিজ্ঞাপন


আসনটির অন্তর্গত একজন আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা মেইলকে বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে তাকে সে পদ ছেড়ে দেওয়া উচিত। তার মতে, সংসদ সদস্য পদটি নেতৃত্ব দেওয়ার। নেতাকে অবশ্যই তৃণমূল পর্যন্ত যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে। নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে হবে।

দলটির অনেক নেতাকর্মীর অভিযোগ, অনেক সংসদ সদস্য শুধুমাত্র অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশ নিতে পছন্দ করেন। ঢাকার হাতে গোনা কয়েকজন সংসদ সদস্য ছাড়া বাকিরা কর্মী নিয়ে বড় জমায়েতে আসতে চান না। সবসময় এমন কর্মসূচি এড়িয়ে চলেন। অনেকেই আবার নিজেদের কর্মী নিয়ে আসার দায়িত্ব চাপিয়ে দেন স্থানীয় কাউন্সিলদের ওপর। এছাড়া অনুষ্ঠানের আর্থিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে অনেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে।

দলটির অনেক সংসদ সদস্যই নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ বলে মনে করেন এই নেতা। তিনি বলেন, এখন আমাদের কাজ মাঠে থাকা। কর্মীদের নার্সিং করা। সেখানে আমরাই যদি নিষ্ক্রিয় থাকি, তাহলে সেটা দলের জন্য খারাপ।

দলটির অনেক নেতাকর্মীর অভিযোগ, অনেক সংসদ সদস্য শুধুমাত্র অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশ নিতে পছন্দ করেন। ঢাকার হাতে গোনা কয়েকজন সংসদ সদস্য ছাড়া বাকিরা কর্মী নিয়ে বড় জমায়েতে আসতে চান না। সবসময় এমন কর্মসূচি এড়িয়ে চলেন। অনেকেই আবার নিজেদের কর্মী নিয়ে আসার দায়িত্ব চাপিয়ে দেন স্থানীয় কাউন্সিলদের ওপর। এছাড়া অনুষ্ঠানের আর্থিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে অনেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে।

বিষয়টি দৃষ্টি কেড়েছে নগর আওয়ামী লীগেরও। সংসদ সদস্যদের কর্মসূচি এড়িয়ে চলার বিষয়টিকে ভালোভাবে নিতে চান না তারাও।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, এমপিদের অংশগ্রহণ কমই থাকে। তারা (এমপিরা) মনে করে, এটা না করলেও বোধ হয় চলবে। এটা দলের জন্য অবশ্যই খারাপ।

তাদের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে খোঁজ রাখা হয় জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, যারা সক্রিয় তাদের অবস্থান একরকম লেখা হবে। যারা সক্রিয় না, তাদের অবস্থান একভাবে লেখা হবে।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেনের কাছে বলেন, এমপিরা আসলে নিজেদেরকে নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকে।

তিনি বলেন, তাদের সব প্রয়োজন। কিন্তু দলের প্রয়োজনে তারা ওই রকম আগায় না, যে রকম আগানো উচিত।

সংসদ সদস্যদের মধ্যে অনেকেরই দায়িত্ববোধের অভাব আছে উল্লেখ করে আক্তার হোসেন বলেন, এগুলো চেতনা ও দায়িত্ববোধের ব্যাপার। তাদের যদি পার্টি থেকে বলে বলে নামাতে হয়, তাহলে তো এগুলো ঠিক না। যার যার দায়িত্ব থেকেই তিনি তার দায়িত্ব পালন করবেন। সেটার একটু ঘাটতি আছে, ঠিক হয়ে যাবে।

কারই/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর