দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনো বাসায় নেওয়ার মতো হয়নি। তাই আরও কিছুদিন তাকে হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হবে।
রোববার (২৭ আগস্ট) খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন এ কথা জানিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নেওয়ার মতো শারীরিক পরিস্থিতি এখনো হয়নি। তাকে আরও কিছুদিন হাসপাতালে থাকতে হবে।
গত ৯ আগস্ট স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই থেকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়ার নানা শারীরিক জটিলতার কিছুটা উন্নতি হয়েছে, তবে সেটাকে ভালো বলা যাবে না। এখনো হাসপাতালে তাঁকে আরও নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন বলে চিকিৎসকেরা মনে করছেন। সে কারণে তাকে আরও কিছুদিন হাসপাতালে থাকতে হবে।
এর আগেও গত ১৩ জুন রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সে সময় পাঁচ দিন পর তিনি বাসায় ফেরেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার অ্যানজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদ্যন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদরোগে ভুগছেন। তার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরা। এই সমস্যার চিকিৎসার জন্য একাধিকবার চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে অ্যাডভ্যান্স সেন্টারে নেওয়ার সুপারিশ করেছেন।
পরিবারের পক্ষ থেকেও তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া মেলেনি।
খালেদা জিয়ার শারীরিক এমন পরিস্থিতিতে ঠিক কত দিন হাসপাতালে থাকতে হবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না চিকিৎসকেরা।
২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে কয়েকবার নানা অসুস্থতার কারণে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। সেবার অনেকদিন হাসপাতালে থেকে পরে বাসায় ফেরেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
এরপর মাঝেমধ্যেই তাকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও নিয়মিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলে তার।
>> আরও পড়ুন:
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো নিয়ে যা বললেন মোমেন
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ইস্পাত কঠিন আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সাজা হয়। সেদিন থেকে তিনি কারাবন্দী হন। পরে হাইকোর্টে এ সাজা বেড়ে ১০ বছর হয়।
এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আরও সাত বছরের সাজা হয়।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে। সেই থেকে তিনি গুলশানের বাড়িতে রয়েছেন।
প্রতি ছয় মাস পরপর সরকার তার মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে।
বিইউ/এএস

