জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কৃত দলটির সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন- এমন একটি গুঞ্জন কয়েক দিন ধরে বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। আগামীকাল বুধবার (২ আগস্ট) রংপুরে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় রাঙ্গা সরকারি দলে যোগ দিতে পারেন এমন কথা বলা হচ্ছিল। তবে এই গুঞ্জন নাকচ করে দিয়েছেন রাঙ্গা। জানিয়েছেন আপাতত তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন না। তবে ভবিষ্যতে যে যোগ দেবেন না সেটাও স্পষ্ট করেননি জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) মসিউর রহমান রাঙ্গা আওয়ামী লীগে যোগদানের গুঞ্জন নাকচ করে দিয়ে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'আমি রংপুরে গিয়েছিলাম। যেহেতু আমি বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ, আমার এলাকায় অনেক উন্নয়ন হয়েছে, আমি যখন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলাম, তখন আমি প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে অনেক উন্নয়ন করেছি, তাই আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। তিনি রংপুরের পুত্রবধূ। আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই। রংপুরের উন্নয়নের জন্য তাকে স্বাগত জানাই।’
বিজ্ঞাপন
এখনো নিজেকে জাতীয় পার্টির দাবি করে রাঙ্গা বলেন, ‘আমি আমার দলকে বলে এসেছি, তিনি যেন সম্মানের সঙ্গে আসেন এবং সসম্মানে চলে যেতে পারেন, সেই ব্যবস্থা আপনারা নেবেন। কিন্তু সেখানে আমার যোগদান করা নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমার কোনো আলোচনা হয়নি কিংবা আমি মিটিংয়ে থাকব, এ ধরনের কোনো প্রস্তাবও তারা আমাকে দেননি।'
তবে আওয়ামী লীগের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটা বড় দল। সেই দল করাটাও একটা ভাগ্যের ব্যাপার। সংবিধানের ৭০ ধারার নিয়মসহ নানাবিধ কারণে কালকের জনসভায় আমার আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এটুকু বলতে পারি, রংপুরে আগামীকালের দলীয় সমাবেশে আমি যাচ্ছি না। সুতরাং যে গুঞ্জন রংপুরে চলছে, সেটা সত্য নয়।'
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে গত বছরের সেপ্টেম্বরে দল থেকে বহিষ্কার হন মসিউর রহমান রাঙ্গা। এরপর তিনি হুঁশিয়ারি দেন তাকে বাদ দিয়ে জিএম কাদের কীভাবে রাজনীতি করেন সেটা তিনি দেখবেন। জিএম কাদের রংপুর নামতে না দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন। তবে পরে সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন এবং দলে ফেরার আকুতি জানান। দলে রওশন এরশাদপন্থী হিসেবে পরিচিত রাঙ্গার বর্তমানে কোনো পদ-পদবি না থাকলেও তিনি সংসদ সদস্য এবং বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ হিসেবে বহাল আছেন।
বিজ্ঞাপন
মসিউর রহমান রাঙ্গা রংপুর-১ আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য, পরিবহন মালিক সমিতির নেতা। তিনি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি। তিনি একসময় জাতীয় পার্টির মহাসচিবের দায়িত্বও পালন করেছেন। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি। জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদ জীবিত থাকাকালে ২০১৮ সালে রাঙ্গাকে দলের মহাসচিব করা হয়। ২০২১ সালের অক্টোবরে রাঙ্গাকে সরিয়ে মজিবুর রহমান চুন্নুকে মহাসচিব করা হয়।
জেবি