বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

ফাঁসির রশি থেকে ফুলের মালা

মো. আশরাফুজ্জামান
প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ০৪:০৩ পিএম

শেয়ার করুন:

ফাঁসির রশি থেকে ফুলের মালা

১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সাল, বাঙালি জাতি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বরণ করে নিতে। ঢাকার রাস্তায় চলছে আনন্দ মিছিল, সেই মিছিলের যাত্রায় পূর্ণতা দিতে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিমানবন্দরে অবতরণ করে বিমান। বাইরে উৎসুক জনতা ভিড় করেছে তাদের স্বপ্নের বরপুত্র, শেখ মুজিবকে এক পলক দেখার জন্য। যার অঙ্গুলি হেলনে কেঁপে উঠেছিল অত্যাচারী পাকিস্তানি শাসকের মসনদ, শোষকের নিপীড়ন ও অনাচারের কাছে যিনি মাথানত করেননি। বাঙালির অধিকারের চিরায়ত স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে যিনি নয় মাসের বেশি কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্টে কাটিয়েছেন নিঃসঙ্গ জীবন, হয়েছেন ফাঁসির আসামি। বাঙালির স্বাধীনতার মূলমন্ত্র যার হৃদয়ে, শোষকের খড়গে কি সে হৃদয় কাঁপে? যে বাঙালি জাতির স্বাধীনতার জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন, সেই বাঙালি জাতি নিশ্চয়ই তাঁর লালিত স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দেবে এটা তাঁর বিশ্বাস ছিল। বাঙালি জাতি দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করেছে। বঙ্গবন্ধুর সাধ পূরণ করেছে। যদিও ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করেছে তবু সে বিজয় পূর্ণতা পায়নি বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া। বাঙালির বিজয়ের পূর্ণতা পায় ১০ জানুয়ারিতে, যেদিন তিনি এই বাংলা মায়ের কোলে ফেরত এসেছিলেন।

বঙ্গবন্ধু ছিলেন গঙ্গার অববাহিকার পলি ও কাঁদা-মাটিতে গড়ে ওঠা সন্তান। বাঙালির প্রাণের যে সুর সে সুরের ঝঙ্কার ছিলেন বঙ্গবন্ধু, বাঙালির যে দ্রোহ, সেই দ্রোহের আগুন ছিলেন তিনি। পলি মাটির মতো কোমলতার অধিকারী ছিলেন তিনি। আবার অত্যাচারীর সামনে ছিলেন গগনমুখি শির উচুঁ করে দাঁড়ানো হিমালয়ের মতো, কোনো বাধায় যাকে টলাতে পারে না। তিনি ছিলেন বাঙালির বৈশাখের ঘূর্ণিবায়ু, যার বজ্রকণ্ঠের তরঙ্গায়িত বায়ু চুরমার করে দেয় নিপীড়কের কাঁচমহল। বাঙালির সম্মিলিত সাহসের একীভূতরূপ ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭০ এর নির্বাচনের ফল ছিল সেটির উপযুক্ত প্রমাণ। বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে সেই নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে শুধু বাঙালি জাতির নয় পুরো পাকিস্তানের একক নেতায় পরিণত করেন। বাঙালি জাতির উপর দীর্ঘ ২৩ বছর যাবত যে সীমাহীন বৈষম্যের শাসন পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ চালিয়েছিল ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফল ছিল সেই পাপাচারের বিরুদ্ধে নীরব বিপ্লব।


বিজ্ঞাপন


পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনীতিবিদগণের সামনে তখন তাদের দীর্ঘ দিনের অপশাসনের দিনলিপি প্রতিভাত হলো। তারা আতঙ্কিত হলো এই ভেবে, এতদিন যে বাঙালি জাতিকে শাসন করেছে পাকিস্তানিরা, সেই প্রজারাই কি না আগামীর পাকিস্তানের নেতৃত্ব দেবে! এ ব্যথা তো সহ্য হওয়া মতো নয়। বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তখন ক্ষমতার মসনদের একেবারেই কাছে। কিন্তু বাঙালি জাতির ক্ষমতার সেই মসনদকে দূরে ঠেলে দিতে শুরু হয় গভীর ষড়যন্ত্র। পশ্চিম পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনপ্রাপ্ত নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো ক্ষমতার বাইরে নিজেকে আবিষ্কার করেন, এজন্য তিনি বাঙালিদের অগ্রযাত্রার পথকে রুদ্ধ করতে পাকিস্তানের নতুন শাসনতন্ত্র প্রণয়নের বিষয়টি জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বসার পূর্বেই সুরাহা করতে ইয়াহিয়া সরকারকে চাপ দেন। তিনি উপলদ্ধি করেন বাঙালিরা সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে নিজেদের মতো শাসনতন্ত্র তৈরি করবে। এজন্য তিনি ঢাকায় আহুত জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। বাঙালিদের হাতে ক্ষমতায় যাওয়ার পথ তখন রুদ্ধ হয়ে যায়।

পাকিস্তানি সামরিক শাসক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান সামরিক বাহিনী ও রাজনৈতিক দলসমূহের বহুমুখী চাপে অধিবেশন স্থগিতের ঘোষণা দেন। বাঙালি জাতি এহেন অন্যায় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে, বঙ্গবন্ধু ডাক দেন অসহযোগ আন্দোলনের। কয়েক দিনের হরতাল শেষে ৭ মার্চ ১৯৭১ সাল তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে তিনি পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে জনগণকে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি জনগণকে পাকিস্তানিদের অপশাসন থেকে মুক্তির লক্ষ্যে ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ার নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বাঙালি জাতির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে সমুন্নত রাখতে ঘোষণা করেন- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।'

৭ মার্চের পর অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকে। একদিকে নিরস্ত্র বাঙালি জাতি স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় সদা জাগরুক, অন্যদিকে ঘাতকের বুলেট তাক করা। এহেন পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সাথে আলোচনা অব্যাহত রাখেন। পাকিস্তানি জেনারেলরা বাঙালিদের হাতে ক্ষমতা ছাড়তে কিছুতেই রাজি ছিলেন না। এক সামরিক সদস্য দম্ভোক্তি করে বলেছিলেন, ‘ঐ কালো বাস্টার্ডদের (বাঙালি জাতি) আমাদেরকে শাসন করতে দেব না।’তাঁর এই কথার প্রতিফলনই যেন হয়েছিল ২৫ মার্চ কালরাতে। ঘুমন্ত বাঙালিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নরপিশাচের দল। বাঙালিদের অধিকারের আলোকে চিরতরে নিভিয়ে দিতে সেই রাতে পরিচালিত হয়েছিল ‘অপারেশন সার্চ লাইট।'

পশ্চিম পাকিস্তানের নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো ও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে আলোচনা ব্যর্থ হওয়ায় বঙ্গবন্ধু উদ্বিগ্ন হন। তিনি জানতে পারেন বাঙালি জাতির ওপর নেমে আসছে ঘোর অমানিশার অন্ধকার, যার সুবহে সাদিক হওয়া ছিল প্রায় অসম্ভব। কিন্তু বাঙালি জাতির প্রতি বঙ্গবন্ধুর অকৃত্রিম বিশ্বাস ছিল। এজন্য তিনি সেই রাতে ওয়ারলেসের মাধ্যমে বাংলাদেশর স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং সেই রাতেই পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে।


বিজ্ঞাপন


বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে রাখা হয় বর্তমান জাতীয় সংসদের নির্মিয়মান ভবনে, পরে সেখান থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে নেওয়া হয়। ২৮ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে নেওয়া হয় পশ্চিম পাকিস্তানে। সেখানকার লায়ালপুর (বর্তমান ফয়সালাবাদ) জেলে বঙ্গবন্ধুকে রাখা হয়েছিল। তখন থেকে মুক্তিলাভ অবধি বঙ্গবন্ধুর জীবন ছিল চারদেয়ালে ঘেরা রুমে। সামরিক বাহিনীর কড়া প্রহরা ছিল সেই জেলের নিত্য চেহারা। বঙ্গবন্ধু জেলে থাকা অবস্থায় বাঙালি জাতির চিন্তায় বিভোর থাকতেন। পাকিস্তানিরা তাকে দৈহিকভাবে বাংলাদেশ থেকে পৃথক করতে পেরেছিল কিন্তু আত্মিকভাবে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর ভাষায়- ‘জনগণের সাথে আমার আত্মিক সম্পর্ক কখনো ছিন্ন হয়নি, এক মুহূর্তের জন্যও নয়।…বাস্তব যোগাযোগের অনুপস্থিতিতে, জনগণের মধ্যে প্রোথিত আমার মন আমাকে আলোকিত করেছিল। উদাহরণত, যখন বিপদ আমাকে আচ্ছন্ন করতো, আমি বুঝতে পারতাম আমার জনগণ তীব্র যন্ত্রণা ভোগ করছে। যখন আমার মনের দিগন্তে দেখা দিত চকিত আশার ঝলকানি, আমি জানতাম তারা সেই দুর্ভোগ অতিক্রম করেছে।’

বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন বাঙালি জাতি তাকে একদিন স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দেবে। তাঁর ভাষায়- ‘আমি নিশ্চিত ছিলাম তারা (পাকিস্তানিরা) যদি আমাকে হত্যাও করে, আমার দেশের মানুষ আমার নেতৃত্বে সূচিত মুক্তি সংগ্রামকে যৌক্তিক পরিণতিতে পৌঁছে দেবে এবং অর্জন করবে স্বাধীনতা।’ প্রকৃতপক্ষেই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসিতে ঝোলানোর আয়োজন করেছিল, প্রহসনমূলক বিচারের মাধ্যমে। ১১ আগস্ট ১৯৭১ ইতিহাসের সেই জঘণ্যতম ফরমায়েশি বিচার শুরু হয়, বিচার শেষ হয় ৪ ডিসেম্বর। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা ও অন্যান্য অপরাধে বঙ্গবন্ধুর বিচার হয়, বিচারে তাকে ফাঁসির আদেশ দেয় বিচারকমণ্ডলী। যে বাঙালি জাতির রক্ত ও আত্মত্যাগ ব্যতীত পাকিস্তানের অস্তিত্ব ছিল কল্পনাতীত আজ সেই বাঙালির অবিসংবাদিত নেতার বিরুদ্ধে বিচার হলো পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার! অথচ তিনি হলেন পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীত্বের বৈধ দাবিদার। বিচারের সময় প্রধান বিচারক বঙ্গবন্ধুর কাছে জানতে চান আত্মপক্ষের সমর্থনে তিনি কিছু বলবেন কি না। বঙ্গবন্ধু জবাব দিয়েছিলেন এভাবে- ‘আপনারা যখন আমাকে মেরে ফেলবেন, আমি চাই তারপরে আমার মৃতদেহ যেন আমার প্রিয় বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।’

এদিকে পাকিস্তানের সাথে ভারতের যুদ্ধ বেধে যাওয়ায় বঙ্গবন্ধুকে ফয়াসালাবাদ থেকে নেওয়া হয় মিয়ানওয়ালি কারাগারে। একজন ফাঁসির আসামি হিসেবে তাকে রাখা হয় এমন কক্ষে যেখানে প্রবেশ করতে তিনটি দরজা খুলতে হয়। এই জেলেই বঙ্গবন্ধুর সামনে একটি ট্রেঞ্চ খোড়া হয়, বঙ্গবন্ধুর ভাষায় সেটি ছিল কবর। একজন ফাঁসির আসামি যদি দেখেন তাঁর সামনে তাঁরই কবর খোড়া হচ্ছে, তাহলে তাঁর মানসিক অবস্থা কিরূপ পরিগ্রহ করে! বঙ্গবন্ধু সেই অবস্থাতেও নিজেকে ঠিক রেখেছিলেন, তাঁর কাছে ফাঁসি একদিন বিলম্বিত হওয়া মানে মৃত্যু থেকে একদিনের বিচ্ছেদ হওয়া। বঙ্গবন্ধু সব সময় জীবন হাতে নিয়েই বাঙালির জন্য সংগ্রাম করেছেন, মৃত্যুর জন্য সব সময় প্রস্তুতি নিয়েই তিনি থাকতেন। তিনি মনে করতেন, মুসলমান একবার মরে দুইবার না। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে যে দেহ সদা প্রস্তুত, তাকে মারবে সাধ্যকার! বঙ্গবন্ধু  নিজে ফাঁসির আদেশ পরবর্তী সময়ের স্মৃতিচারণ করেন এভাবে যে, ‘আমি দেখতে পেতাম আমার সামনে ফাঁসির রজ্জু, তবে সময় সময় একে মনে হতো লাল গোলাপের লকেট-সজ্জিত ফুলের মালা। এটা জোরদার করত আমার সেই অনুভূতি যে, আমার জীবনের লক্ষ্য সাধন না হওয়া পর্যন্ত দয়াবান খোদা আমাকে বাঁচিয়ে রাখবেন। অন্য সবাই যেক্ষেত্রে অলীক স্বপ্নকাতর আমি সেক্ষেত্রে যেন দিব্য চোখে দেখতে পেতাম এবং আমার অন্তরে এই বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে প্রোথিত ছিল যে, পাকিস্তানের ধ্বংসস্তুপ থেকে নিশ্চিতভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান ঘটবে। বাংলাদেশের চুড়ান্ত বিজয় অর্জনের পর যদি তাদের উন্মত্ত জিঘাংসার শিকার হই আমি তবে আমার কোনো খেদ থাকবে না। যদি আমার একাধিক জীবন থাকতো এবং সবগুলো জীবনই যদি আমার লালিত স্বপ্ন বাংলাদেশকে বাস্তব করে তুলতে বিসর্জন দিতে হতো, তাহলেও আমার কোনো খেদ থাকতো না।’

বঙ্গবন্ধুর মনের সেই আশা যেন প্রতিভাত হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বরের দিন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সেদিন পরাজিত হয়েছিল। বিজয়ের লাল সবুজের পতাকা সেদিন উড়েছিল দুঃখিনী বাংলা মায়ের আকাশজুড়ে। বঙ্গবন্ধু এ বিজয়ের ঘটনা তৎক্ষণাৎ না জানলেও তাঁর ফাঁসি বিলম্বিত হওয়া এবং প্রহরীদের আচরণের পরিবর্তনে তিনি হয়তবা আঁচ করতে পেরেছিলেন যে, বাঙালি জাতি হয়ত তাঁর কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ২৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ শিয়ালাতে পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট ভুট্টো যখন বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তান এক রাখার বিষয়ে প্রস্তাব দেন, তখন বঙ্গবন্ধুর বুঝতে বাকি থাকে না তাঁর স্বপ্নের বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু তখন বাঙালি জাতির কাছে ফেরার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। সুদীর্ঘ জীবনব্যাপী যিনি সংগ্রাম করেছেন বাঙালির স্বাধীকার আদায়ের জন্য, মুক্তিকামী বাঙালি জাতি তাঁর সেই সাধনাকে পূর্ণতা দিয়েছে। তিনি ভুট্টোকে অনুরোধ করেন দ্রুতই যেন তাকে তাঁর মানুষের কাছের ফেরত পাঠানো হয়। ভুট্টো বঙ্গবন্ধুকে ৮ জানুয়ারি মুক্তি দেন, লন্ডন-দিল্লি হয়ে বঙ্গবন্ধু মুক্ত বাংলাদেশে পা রাখেন আজকের এই দিনে।

পাকিস্তান থেকে ফেরার সময় বঙ্গবন্ধু দীর্ঘ দিনের প্রহরীর দায়িত্বে থাকা পুলিশ অফিসারকে উপহার দেওয়া বইয়ে একটি বাক্য লিখে আসেন সেটি হলো- ‘In the long war between the falsehood and the truth, falsehood wins the first battle and the truth the last.’ এ কথায় প্রমাণ করে বাঙালি জাতির ওপর মিথ্যার ভিত্তিতে দাঁড়ানো একটি জবরদস্তিমূলক যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই যুদ্ধে জিতেছিল সত্য। সেই সত্য কী? সেই সত্য হলো বাঙালি জাতি, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ। যা বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের মালার তিনটি ফুল। বিজয়ের সেই মালা পরিয়েই বাঙালি বরণ করে নেয় হাজার বছরের আরাধ্য বীরপুরুষ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

লেখক: প্রভাষক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, যশোর সরকারি মহিলা কলেজ, যশোর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর