রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

প্রধানমন্ত্রীর কাছে মাধ্যমিকের শিক্ষকের খোলা চিঠি

মো. ওমর ফারুক
প্রকাশিত: ২৫ আগস্ট ২০২২, ০২:৩৯ এএম

শেয়ার করুন:

প্রধানমন্ত্রীর কাছে মাধ্যমিকের শিক্ষকের খোলা চিঠি

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী

আমরা এবং বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ জানেন যে, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কল্যাণে যেকোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত কেবলমাত্র আপনার নির্দেশেই হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত সরকারি মাধ্যমিক সেক্টরকে সম্মানিত করতে ২০১২ সালে আপনার সদয় অনুগ্রহে সরকারি মাধ্যমিকের প্রবেশপথ সহকারী শিক্ষক পদটিকে দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড মর্যাদা প্রদান করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ ৩০-০৬-২০২১ তারিখে ৫৪৫২ জন সহকারী শিক্ষককে সিনিয়র শিক্ষক (প্রথম শ্রেণির গেজেটেড) পদমর্যাদায় পদোন্নতির গেজেট জারি করা হয়েছে। সেজন্য সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকগণ বর্তমান সরকার প্রধানের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।


বিজ্ঞাপন


তবে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বেশ কিছু সমস্যার সমাধানে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বারবার বিভিন্ন দপ্তরে ধর্না দিয়েও কিছু অতীব জরুরি সমস্যার সমাধান করতে পারছেন না। সঙ্গত কারণে বর্তমানে সরকারি মাধ্যমিকের বিদ্যমান কিছু অতীব জরুরি সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে আপনার সদয় বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করা হলো:  

‘সেকেন্ডারি ফর সেকেন্ডারি’ চাই

মাধ্যমিক সেক্টরের জন্য ‘পৃথক মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর’ এখন সময়ের অনিবার্য দাবি। শিক্ষার গুণগত মান এবং শিক্ষা প্রশাসনকে গতিশীল করতে শিক্ষানীতি ২০১০ এর আলোকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন মোতাবেক মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য ‘পৃথক মাধ্যমিক অধিদপ্তর’ বাস্তবায়ন করতে হবে।

মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়নসহ প্রস্তাবিত (৭) দফা দাবির বাস্তবায়ন এখন সময়ের অনিবার্য মৌলিক দাবিতে পরিণত হয়েছে। সরকারি মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে নিচের সাত দফা দাবি বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই।


বিজ্ঞাপন


‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও ঐতিহাসিক মুজিববর্ষের’ এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে মাধ্যমিক শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে শিক্ষা ও শিক্ষকবান্ধব সদাশয় সরকারের প্রধান, আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা, দেশরত্ন, জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে সরকারি মাধ্যমিকে কর্মরত ১১ হাজার শিক্ষকের পক্ষ থেকে আগামী বিজয় দিবস দিবস-২০২২ (১৬ ডিসেম্বর) এর মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিনয়ের সঙ্গে নিচের সাত (৭) দফা দাবি তুলে ধরছি...

১) শিক্ষানীতি ২০১০ এর আলোকে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন মোতাবেক মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য ‘পৃথক মাধ্যমিক অধিদপ্তর’ বাস্তবায়ন করতে হবে।

২) অর্থ মন্ত্রণালয়ের ১৯/০৬/২০১৭ খ্রিস্টাব্দ তারিখের অফিস আদেশ এবং মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের ২/৫/২০১৯ খ্রিস্টাব্দ তারিখের রায়ের আলোকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বকেয়া টাইম স্কেল /সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরি আদেশ জারি করতে হবে।

৩) মাধ্যমিক শিক্ষায় মেধাবীদের আকৃষ্ট করতে ও ধরে রাখতে কালবিলম্ব না করে এখনই সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের এন্ট্রি পদ নবম গ্রেডে উন্নীত করতে হবে।

৪) এন্ট্রি পদ নবম গ্রেড বাস্তবায়নের পূর্ব পর্যন্ত সর্বশেষ গেজেট অনুযায়ী ৭ বছর পূর্তিতে সকল সহকারী শিক্ষককে ‘সিনিয়র শিক্ষক’ হিসেবে দ্রুত পদোন্নতি দিতে হবে।

৫) শিক্ষকদের নিয়মিত পদোন্নতি নিশ্চিত করতে দ্রুত ‘একটি গ্রহণযোগ্য পদসোপান ঘোষণা ও দ্রুত তা বাস্তবায়ন’ করতে হবে।

৬) একটি স্থায়ী ও সুসামঞ্জস্যপূর্ণ বদলি নীতিমালা ব্যতীত হয়রানি মূলক শিক্ষক বদলি বন্ধ করতে হবে।

৭) ১৮ জুলাই '১৯৭০ সালের এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট মেমোরেনডাম এর আলোকে ইতোপূর্বে প্রদেয় উচ্চতর শিক্ষকতা যোগ্যতার ভিত্তিতে অগ্রিমবর্ধিত বেতন ফেরতের নামে অবসর অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ ফেরত নেওয়া বন্ধ করতে হবে এবং সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা উচ্চতর শিক্ষকতা যোগ্যতার ভিত্তিতে অগ্রিম বর্ধিত বেতন মঞ্জুরি আদেশ গত ৭/১১/২০১৬ খ্রিস্টাব্দ তারিখে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের ভিত্তিতে পুনরায় চালু করতে হবে।

পরিশেষে আমরা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শিক্ষকবৃন্দ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক এবং মাধ্যমিক শিক্ষার স্বার্থে দ্রুততম সময়ের মধ্যে উপরে লিখিত সমস্যাসমূহের সমাধানে আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

 

বিনীত

সরকারি মাধ্যমিকে কর্মরত সাধারণ শিক্ষকদের পক্ষে-

আপনার একান্ত বিশ্বস্ত

মো. ওমর ফারুক

ব্যাচ-২০১১, সহকারী শিক্ষক (বাংলা)

সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, খুলনা।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর