বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

দেশনায়ক তারেক রহমানের ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন

নাছির উদ্দীন
প্রকাশিত: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৩৭ পিএম

শেয়ার করুন:

Nasir
ছবি- ঢাকা মেইল

দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের প্রত্যক্ষ মদদে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল অগণতান্ত্রিক শক্তি। ‘ওয়ান-ইলেভেন’ নামে পরিচিত সেই রেজিমের মূল পরিকল্পনা ছিল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পরিবারকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমানকে শহীদ জিয়ার স্মৃতিবিজড়িত মইনুল রোডের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারের পর অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এবং তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সন্তান জনাব তারেক রহমানের ওপর অমানবিক নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হয়। ২০০৭ সালের ২৮ নভেম্বর আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি সেই অমানুষিক নির্যাতনের কথা তুলে ধরেছিলেন। সেই নিপীড়ন ছিল বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ওপরই নারকীয় আঘাত। যা পরবর্তীকালে প্রতি পদে অনুভব করেছে গোটা বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসনের ভিত্তি তৈরি করা হয়েছিল তারেক রহমানকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের মাধ্যমে।


বিজ্ঞাপন


এভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পাশাপাশি সাজানো মামলায় রিমান্ড, নির্যাতন এবং টানা ৫৫৪ দিন কারাভোগ করতে হয়েছিল দেশনায়ক তারেক রহমানকে। তাতেও ক্ষান্ত হয়নি অগণতান্ত্রিক অপশক্তি ও তাদের দোসররা। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা।

২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য প্রিয় মাতৃভূমি ছেড়ে লন্ডনে যেতে হয়েছিল দেশনায়ক তারেক রহমানকে। কিন্তু এরপরও মামলার খড়্গ থামেনি। ওয়ান-ইলেভেনের অগণতান্ত্রিক শাসনামলে ১৩টি ও পরবর্তী আওয়ামী শাসনামলে ৭২টি মামলা করা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। আদালতকে ব্যবহার করে পাঁচটি মামলায় ফরমায়েশি রায়ের মাধ্যমে সাজাও দেওয়া হয়। শুধু তা-ই না, আদালতকে ব্যবহার করে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।

এমন প্রচণ্ড প্রতিকূল পরিস্থিতিও তারেক রহমানের সংগ্রামকে রুদ্ধ করতে পারেনি। বিদেশে থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জনতাকে সংগঠিত করতে ক্লান্তিহীনভাবে সক্রিয় থেকেছেন। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সকল পর্যায়ের মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বা ফোনে যুক্ত থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। সর্বশেষ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তাঁর অসামান্য ভূমিকার কথা সবাই জানেন।

এই মুহূর্তে ফ্যাসিবাদবিরোধী জনগণের কাছে এক আশার বাতিঘরের নাম দেশনায়ক তারেক রহমান। বাংলাদেশের গণতন্ত্রে উত্তরণ, বিশৃঙ্খলার অবসান ঘটিয়ে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা ও দেশের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নের প্রতীক হয়ে উঠেছেন তিনি। জনগণ বিশ্বাস করছে, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ থেকে গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের ট্রেন যাত্রা শুরু করবে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা থেকে দেশ একটি সুনির্দিষ্ট নিশানার দিকে যেতে শুরু করবে। এই প্রত্যাবর্তন তাই বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে ঐতিহাসিক ঘটনা।


বিজ্ঞাপন


একাত্তরের প্রকৃত চেতনা ও চব্বিশের আকাঙ্ক্ষার সম্মিলনে বাংলাদেশকে সুস্থির ভবিষ্যতের পথে নিয়ে যাবেন জনাব তারেক রহমান- এই প্রত্যাশা ও বিশ্বাসে আস্থা রাখছে পুরো জাতি। দেশের ভবিষ্যতমুখী এই অভিযাত্রায় সবচেয়ে বড় মোমেন্টাম তৈরি করবে দেশনায়ক তারেক রহমানের এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন। তাঁর প্রত্যাবর্তনের এই দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে স্থায়ী জায়গা পেতে যাচ্ছে। আগামীকাল ২৫ ডিসেম্বর সারা বাংলাদেশের চোখ থাকবে ঢাকার জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে (৩০০ ফিট)। সেখানে বাংলাদেশ সংবর্ধনা দেবে দেশনায়ক তারেক রহমানকে। এরপর দেশ গঠনের কাজে মাঠে নামবেন বাংলাদেশের নেতা জনাব তারেক রহমান।

ফ্যাসিবাদী শাসনামলে বিএনপির অন্যতম স্লোগান ছিল ‘তারেক রহমান বীরের বেশে, আসবেন ফিরে বাংলাদেশে’৷ আগামীকাল ২৫ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানকে বরণ করতে উন্মুখ হয়ে আছে বাংলাদেশের কোটি জনতা, তাঁকে ঘিরে স্বপ্ন বুনছে তরুণ-যুব-প্রবীণ সব বয়সি মানুষ। তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন ঘটতে যাচ্ছে বীরের বেশেই।

অন্যদিকে দেশনায়ক তারেক রহমানের প্রতি উপহাস করে যে অগণতান্ত্রিক উদ্ধত শকুনরা বলেছিল, ‘যদি সাহস থাকে বাংলাদেশে ফিরা আয়’ কিংবা ‘দেখা না দিলে বন্ধু কথা কইও না’- তারা  আজকে প্রবল জনরোষের মুখে দেশ থেকে বিতাড়িত। জনগণ সেই ফ্যাসিবাদীদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করেছে। একেই বোধ হয় ন্যাচারাল জাস্টিস বলে।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জিন্দাবাদ। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জিন্দাবাদ। দেশনায়ক তারেক রহমান জিন্দাবাদ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জিন্দাবাদ। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।

লেখক: ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর