সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫, ঢাকা

ভাইভা বিতর্কে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা

আবু মুসআব আব্দুল্লাহ
প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২৫, ০২:৩৬ পিএম

শেয়ার করুন:

exam
এই পরীক্ষা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে নানা মহলে। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগ থেকে স্নাাতক ও স্নাতকোত্তর এবং বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবের্ডের অধীনে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে স্টারমার্ক পেয়ে দাওরায়ে হাদিস পাস করা আরিফুল ইসলাম আব্বাদ (ছদ্মনাম) ১৭তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে রাজধানীর একটি স্বনামধন্য মাদরাসায় সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। তিনি ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় আরবি প্রভাষক (বিষয় কোড: ৪২৯) প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় পাস করে ভাইভায় অংশগ্রহণ করেন। তাকে ভাইভায় নাহু-সরফ (আরবি গ্রামার) থেকে মোট ১৭টি প্রশ্ন করা হয়, তিনি ১৫টিরই সঠিক উত্তর দেন। দাখিল ও আলিমে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের মেধাবৃত্তি পাওয়া এ প্রার্থীর ভাইভার সনদপত্রের ১২ নম্বরে ১২ই পান। ভাইভাও ছিল প্রাণবন্ত। তিনি ভাবতেই পারেননি তিনি অনুত্তীর্ণ হবেন। ফল প্রকাশের পর দেখা গেল তিনি অনুত্তীর্ণ।

আরিফুল ইসলামের মতোই প্রায় ২০ হাজার চাকরি প্রত্যাশী ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভালো ভাইভা দিয়েও অনুত্তীর্ণ হয়েছেন। শিক্ষক নিবন্ধনের ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষার জন্য যে-কেউ ডাক পান না। প্রার্থীরা প্রথমে ১০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেন। সে পরীক্ষায় পাস করা একদম সহজ নয়। কারণ আন্দাজে উত্তর দিতে গিয়ে কোনো উত্তর ভুল দিলে তাতে ০.২৫ নম্বর প্রাপ্ত নম্বর থেকে কাটা হয়। এ নিবন্ধন পরীক্ষায় ১৮ লাখের বেশি প্রার্থী প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা দিয়ে পাস করে মাত্র ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন। যারা প্রিলিমিনারিতে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৪০ নম্বর পান তারাই কেবল সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ৩ ঘণ্টার ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা দেবার সুযোগ পান। লিখিত পরীক্ষায় যারা পাস করেন কেবল তারাই ভাইভার জন্য ডাক পান। গুরুত্বপূর্ণ ও কঠিন প্রতিযোগিতামূলক ২টি ধাপ পেরিয়ে এতসংখ্যক প্রার্থীর অনুত্তীর্ণ হলেন। ভাইভা বোর্ডে থাকা বিষয় বিশেষজ্ঞদের খামখেয়ালির কারণে এমন হয়েছে বলে মনে করছেন অনুত্তীর্ণরা।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন

নিবন্ধন ভাইভায় এনটিআরসিএ'র বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

 শিক্ষক নিবন্ধনের ভাইভা অন্যসব চাকরির পরীক্ষার ভাইভার মতো না। এ ভাইভার নম্বর মূল নম্বরের সঙ্গে একদমই যুক্ত হয় না এবং মেধাতালিকায়ও এ নম্বরের ভিত্তিতে কোনো প্রভাব পড়ে না। অর্থাৎ শিক্ষক নিবন্ধনের পরীক্ষায় মূল বাছাই হয় লিখিত পরীক্ষায়। লিখিত পরীক্ষাই এখানে যোগ্যতার মাপকাঠি। লিখিত পরীক্ষার নম্বর কম থাকলে ভাইভার নম্বর বেশি পেলেও মেধাতালিকায় ওই প্রার্থী পিছিয়ে থাকেন আবার লিখিত পরীক্ষায় বেশি নম্বর পেয়ে ভাইভায় কম পেলেও তিনি মেধাতালিকায় এগিয়ে থাকেন। ভাইভা মূলত ছিল সনদপত্রসমূহ ও মৌলিক কাগজপত্র ঠিক আছে কি-না তা যাচাই করার মধ্যম। ভাইভার নম্বরবন্টনেও তা স্পষ্ট। ভাইভায় মোট নম্বর ২০। সনদপত্রে ১২ নম্বর এবং উপস্থাপন ও প্রশ্নে ৮ নম্বর। মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর এসব পর্যায়ে প্রথম বিভাগ থাকলে একজন প্রার্থী সনদপত্রে ১২ নম্বর পান। যেহেতু একজন প্রার্থী প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় মেধার সাক্ষর রেখে ভাইভায় ডাক পান তাই বিগত শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষাগুলোতে ভাইভাকে কঠিন করে দেখা হতো না। সদনপত্র ও মৌলিক কাগজপত্র ঠিক থাকলে মৌলিক দুএকটি প্রশ্ন করে বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রশ্ন না করেই ভাইভায় পাস করানো হয়েছে। আগের দুটি নিবন্ধন পরীক্ষার ফলাফলে তা স্পষ্ট। ১৬তম নিবন্ধন পরীক্ষার ভাইভায় পাসের হার ছিল ৯২.১৫ শতাংশ এবং ১৭তম নিবন্ধন পরীক্ষায় পাসের হার ৯৫.২ শতাংশ। শিক্ষাবিষয়ক বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনেও শিক্ষক নিবন্ধনের ভাইভাকে সহজভাবেই উপস্থাপন করা হয়েছে। শিক্ষা বিষয়ক অনলাইন নিউজপোর্টাল দৈনিক শিক্ষা ও প্রিন্ট পত্রিকা আমাদের বার্তার এক প্রতিবেদনে বলা হয়- শিক্ষক নিবন্ধনের ভাইভা পরীক্ষায় ফেল করার সুযোগ নেই বললেই চলে। সনদসহ বিভিন্ন ডকুমেন্টে তথ্যগত কোনো ভুল না থাকলে এবং অস্বাভাবিক আচরণ না করলে ভাইভা পরীক্ষায় সহজেই উত্তীর্ণ হওয়া সম্ভব ‘ (দৈনিক আমাদের বার্তা: ২৭ অক্টোবর, ২০২৪)। দৈনিক প্রথম আলোয় ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ প্রকাশিত আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘... অনেকেই মৌখিক পরীক্ষায় পাস নম্বর নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। ভাইভায় অকৃতকার্য হওয়ার আশঙ্কা খুব কম। যদি না কাগজপত্রে তথ্যগত কোনো অসামঞ্জস্য থাকে।’ যে ভাইভাকে বিগত নিবন্ধন পরীক্ষাগুলোতে সহজভাবে দেখা হয়েছে, যে ভাইভার নম্বরে মেধাতালিকায় কোনো প্রভাব পড়ে না সে ভাইভায় এবার ২০ হাজার প্রার্থীকে ফেইল দেওয়া হয়েছে। ৯২-৯৫ শতাংশ থেকে হঠাৎ পাসের হার নেমে এল ৭০%এ! আরবি প্রভাষক ভাইভাতে পাসের হার আরো কম। ৫৩.৪৭  শতাংশ।

Exam2

দায়বদ্ধতা না থাকায় একেক বোর্ড প্রার্থীদের ভাইভা একেকভাবে নিয়েছেন এবং ইচ্ছেমতো পাস/ফেল দিয়েছেন। কেউ আগের মতোই ভাইভাকে কাগজপত্র যাচাই ও একেবারেই মৌলিক বিষয় যাচাইয়ের মাধ্যম হিসেবে সহজভাবে নিয়েছেন আবার কেউ প্রিলিমিনারি ও লিখিততে পাস করে আসা এ প্রার্থীদের ২-৩ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষাকেই যোগ্যতা পরিমাপের মাধ্যম হিসেবে নিয়েছেন। কোনো বোর্ডে বিষয়ভিত্তিক কোনা প্রশ্ন না করে নাম-ঠিকানা, কোন বিষয়ে পড়েছেন তা জিজ্ঞেস করেই পাস করিয়েছেন আবার কোনো বোর্ডে অনেকগুলো কঠিন কঠিন প্রশ্নের উত্তর দেবার পরও মাত্র দুয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারায় ফেল করিয়েছেন। আরবি প্রভাষক ও সহকারি মৌলভির ভাইভার কোনো বোর্ডে অজু-গোসলের ফরজ, নামাজের ওয়াজিব এমন সহজ প্রশ্ন করে পাস দেওয়া হয়েছে আবার কোনো বোর্ডে আরবি গ্রামারের ডজনখানেক কঠিন কঠিন প্রশ্নের উত্তর দেবার পরও ফেইল করানো হয়েছে। যে কারণে একই বিষয়ের কোনো বোর্ডে পাস করেছেন ৩০ জনের ২৯ জন, আবার কোনো বোর্ডে ৩০ জনের মাত্র ২ জন। যে বোর্ডে ২৯ জনই পাস করলেন সেখানেই সব মেধাবী প্রার্থী এসেছিল আর যে বোর্ডের ২৮ জন ফেল সেখানে সব মেধাহীন প্রার্থী ছিল? এমনকি বিগত নিবন্ধন পরীক্ষাগুলোর ভাইভায় উত্তীর্ণ হয়ে যারা পাস করেছেন এমনকি মেধাতালিকায় শীর্ষ স্থান দখল করে পাঠদান করছেন তারাও অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন। একজন প্রার্থীর ভাইভায় ফেল করা তো শুধু ফেল করাই নয়, তার দীর্ঘ দিনের ললিত স্বপ্নের সলিলসমাধী। সমাজ ও বন্ধুদের নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়া। পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের চোখের পানি।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন

১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন

বিপুলসংখ্যক প্রার্থীর অভিযোগ, তাদের ১০-১৫টি প্রশ্নের উত্তর দেবার পরও মাত্র দুয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারায় ফেল দেওয়া হয়েছে। অনেকে বলেছেন, সবগুলো প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেবার পরও ফেল করেছেন। একজন প্রার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স পাস করে নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় পাস করে সনদপত্রের ১২ নম্বরে ১২ নম্বরই পেয়ে বিষয় ভিত্তিক ১৭টি কঠিন প্রশ্নের ১৫টিরই সঠিক উত্তর প্রদানের পরও যদি তাকে ভাইভার অবশিষ্ট ৮ নম্বরের ৪০% অর্থাৎ ৩.২ নম্বরও না দিয়ে তাকে ফেল করানো হয় তাহলে তাকে পাস করার জন্য আর কী করতে হবে? কোনো বিষয় বিশেষজ্ঞও কি এটি নিশ্চিত করে বলতে পারবেন, যে তিনি কোনো পরীক্ষায় সবগুলো প্রশ্নের উত্তর নিশ্চিতভাবে দিতে পারবেন?

এনটিআরসিএর বিধি অনুযায়ী প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভায় ৪০% নম্বর পেলেই পাস। ভাইভার দুটি অংশে (সনদপত্রে ১২ এবং প্রশ্নে ৮) আলাদা আলাদা ৪০% নম্বর পাওয়ার বাধ্যবাধকতার কথা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করলেও এনটিআরসিএর আইনে তা পাওয়া যায়নি। ২২  অক্টোবর, ২০১৫ প্রকাশিত গেজেটে বলা হয়েছে, ‘কোন প্রার্থী লিখিত এবং মৌখিক-উভয় ক্ষেত্রে পৃথকভাবে অনূন্য শতকরা ৪০ (চল্লিশ) নম্বর না পাইলে  তিনি কোন মেধাতালিকায় অন্তর্ভুক্তির যোগ্য হইবেন না’। এখানে মৌখিকের সনদ অংশে ১২ এবং প্রশ্ন প্রশ্ন অংশে ৮ এর মধ্যে পৃথকভাবে ৪০% নম্বর পেতে হবে এমন কথা বলা নেই। ভাইভার মোট নম্বর ২০ এর মধ্যে সনদপত্রের ১২ নম্বরে ১২ থাকলে ভাইভার ৬০% এখানেই হয়ে যায়। এরপরও কেন একজন শিক্ষার্থীকে ১৫-১৭টি প্রশ্নের উত্তর দেবার পরও প্রশ্ন অংশের ৮ নম্বরের ৪০% (৩.২ নম্বর) দেওয়া হবে না এবং সার্টিফিকেটেই ভাইভার মোট নম্বররের ৬০% পাওয়ার পরও আলাদাভাবে সেই প্রশ্ন অংশের নম্বরের জন্য একজন প্রার্থী অনুত্তীর্ণ হবেন?

১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় আরেকটি বড় সমস্যা হয়েছে এনটিআরসিএ কর্তৃক প্রকাশিত ‘প্রশ্নের ধারা ও মানবন্টন’বহির্ভূত প্রশ্ন করা। নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ০২ নভেম্বর, ২০২৩ কিন্তু এরও ৫ মাস পর ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ এনটিআরসিএ তাদের ওয়েবসাইটে নতুন সিলেবাস, প্রশ্নের ধারা ও মানবন্টন প্রকাশ করে। কিন্তু দুঃখজনক, প্রার্থীদের প্রস্তুতির সাড়ে ৫ মাচ সময় অতিবাহিত হবার পর প্রকাশিত সে পরিবর্তিত ‘সিলেবাস, প্রশ্নের ধারা ও মানবন্টন’ অনুযায়ী প্রশ্ন করেনি। প্রভাষক আরবি, মাদরাসার (বিষয় কোড: ৪২৯) বিষয়ে প্রকাশিত ওই সিলেবাস, প্রশ্নের ধারা ও মানবন্টন অনুযায়ী আত-তাফসীর অংশের মান ২০। সেখানে অনুবাদে ৮ নম্বর রাখা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে অনুবাদে ২টি অংশ থাকবে, ১টির উত্তর দিতে হবে। ১৩ জুলাই অনুষ্ঠিত প্রভাষক আরবি’র লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ২টি অংশ ছিল না, ১টিই ছিল। তারচেয়ে বড় সমস্যা হলো স্ববিরোধী প্রশ্ন। অনুবাদের ৮ নম্বর যাওয়ার পর নিচে ৩টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন দিয়ে ৩টি থেকে যেকোনো ২টি প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছে। কিন্তু ৩টি প্রশ্নের সাথেই ৪ করে নম্বর করে দেওয়া আবার উত্তর চাওয়া হয়েছে দুটির। উপরে লেখা ‘২টি প্রশ্নের উত্তর দিন’ অনুযায়ী উত্তর দিলে প্রশ্নের পাশে দেওয়া নম্বর হয় ৮। তাছাড়া তাহকিকের জন্য প্রশ্নের ধারা ও মানবন্টনে বলা হয়েছে, ‘৬টি শব্দ থাকবে; ৪টির তাহকিক করতে হবে’। কিন্তু ৬টি শব্দ ছিল না, ৪টিই ছিল।

Exam3

প্রশ্নপত্রে কুরআনের সুরা হুজুরাতের ১১নং আয়াতের অনুবাদ করতে বলা হয়। কিন্তু সে আয়াতের শব্দ ‘তালমিযু’ এর স্থলে ‘তালতামিযু’ দেয়। হাদিস অংশে অন্তত ৩টি শব্দ ভুল দেয়। এছাড়াও অনেক ভুলেভরা ও স্ববিরোধী প্রশ্নে লিখিত পরীক্ষা নেয় এ কর্তৃপক্ষ। এসবের কোনো ব্যাখ্যা এনটিআরসিএ দেয়নি।

আরও পড়ুন

শিক্ষক নিবন্ধনে থাকবে শুধু লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা, বাদ যাচ্ছে প্রিলি

নিয়মবহির্ভূত প্রশ্ন করার পরও যারা পাস করে এসে ভাইভায় ১০-১৫টি প্রশ্নের উত্তর দেবার পরও মাত্র দুএকটি প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারায় অনুত্তীর্ণ! এ অনুত্তীর্ণ মানে তার লিখিত পরীক্ষায় যতই ভালো নম্বর থাকুক, তিনি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের আবেদনই করতে পারবেন না। অথচ পদ অনেক খালি। ভাইভা থেকে এভাবে গণহারে বাদ দেবার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানের পদ খালিই থাকবে। অনেক পদে হাজার হাজার পদ খালি থাকার পরও এভাবে অনুত্তীর্ণ করানো হয়েছে। যার ফলে হাজার হাজার প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের পদ খালি থাকবে এবং হাজার হাজার মানুষও বেকার থাকবে। এতে কি আমাদের দেশের লাভ হবে? যে লিখিত পরীক্ষার ভিত্তিতে মেধাতালিকা হবে, সে লিখিত পরীক্ষার নম্বর যে ভাইভার নম্বর মেধাতালিকায় প্রভাব ফেলে না তার জন্য মূল্যহীন! সনদ মানেই চাকরি নয়। চাকরি দেওয়া হবে প্রার্থীর আবেদনের ভিত্তিতে। আবেদনকৃত প্রতিষ্ঠানে যদি লিখিত পরীক্ষায় তারচেয়ে বেশি নম্বর পাওয়া কেউ আবেদন করেন তাহলে বেশি নম্বর পাওয়া প্রার্থীরই চাকরি হবে। তবে তিনি এ সনদ দিয়ে অন্যন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে তো আবেদন করতে পারবেন। অথবা আবেদন না করলেও তো তিনি একটি সনদ পেলেন।

লেখক: শিক্ষক ও কলামিস্ট

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর