বৈদেশিক মুদ্রার বাজার গতিশীল এবং প্রতিদিনের লেনদেন প্রতি মিনিটে পরিবর্তন হয়। ব্রিকস (BRICS) বিশ্বব্যাপী রিজার্ভের অবস্থা থেকে মার্কিন ডলারকে নামিয়ে স্থানীয় মুদ্রা দিয়ে প্রতিস্থাপন করার জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা করছে।
ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর সর্বোত্তম প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, ডলারমুক্তকরণের এজেন্ডা এখনো বাস্তবে পরিণত হয়নি। কারণ আর্থিক খাতে মার্কিন ডলারের আধিপত্য এখনো স্পষ্ট রয়েছে। অর্থাৎ ব্রিকস ভুক্ত দেশগুলোর একাধিক প্রচেষ্টার পরেও বৈদেশিক লেনদেনে এবং রিজার্ভ সংরক্ষণের মুদ্রা হিসেবে মার্কিন ডলারের অবস্থান সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ব্রিকস স্থানীয় মুদ্রাগুলোকে বাণিজ্যের জন্য অগ্রাধিকার দেওয়ার পরেও, আন্তঃসীমান্ত লেনদেনের জন্য মার্কিন ডলার সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মুদ্রা। বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ এটিকে বাণিজ্য নিষ্পত্তির জন্য ব্যবহার করে কারণ এটি বাজারের হুইপল্যাশ বজায় রাখে।
আমেরিকার নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জিতার আগে অনেক দেশ যারা ব্রিকস-এ যোগদান করার আবেদন বা ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তারা এখন ব্রিকস-এ যোগদানের বিষয়ে উদাসীন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবে মার্কিন ডলার নাটকীয়ভাবে এখনও আধিপত্য ধরে রেখেছে এবং বিশ্বের অধিকাংশ দেশ তাদের বৈদেশিক লেনদেনের মীমাংসা ও রিজার্ভ সংরক্ষণের জন্য মার্কিন মুদ্রার ওপর আস্থা রেখেছে।
২০২৫ সালে বিশ্বের শীর্ষ আটটি শক্তিশালী মুদ্রার তালিকা নিচে দেওয়া হলো: মার্কিন ডলার, কুয়েতি দিনার, বাহরাইনি দিনার, ওমানি রিয়াল, জর্ডানের দিনার, ব্রিটিশ পাউন্ড, জিব্রাল্টার পাউন্ড, কেম্যান দ্বীপপুঞ্জের ডলার।
বিজ্ঞাপন
২০২৫ সালে ব্রিকসভুক্ত দেশের কোনো মুদ্রাই আর্থিক খাতে সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রার তালিকায় স্থান করে নিতে পারেনি। তারা তালিকা থেকে অনেক পিছিয়ে আছে এবং শীর্ষ ১০ তালিকায় স্থান পেতে আরও কয়েক বছর সময় লেগে যাবে।
মার্কিন ডলারের আধিপত্য একতরফা, এই বছর এটির বিরুদ্ধে খুব কম বা কোনো চ্যালেঞ্জই নেই। এদিকে সৌদি আরব তাদের তেলের মূল্য ডলার ছাড়া অন্য মুদ্রায় পরিশোধ করা যাবে না মর্মে জানিয়ে দিয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রিকস দেশগুলোকে স্থানীয় মুদ্রা ব্যবহার করলে গুরুতর অর্থনৈতিক পরিণতির হুমকিও দিয়েছেন।
এই অবস্থার কারণে অন্যান্য দেশ ডলারের বিপরীতে তাদের নিজস্ব মুদ্রার বিনিময় হার ডিভ্যালুয়েশন করেছে বা করতে বাধ্য হয়েছে।
ট্রাম্প যখন ২০২৮ সাল পর্যন্ত হোয়াইট হাউসে থাকবেন তখন পর্যন্ত ব্রিকস জোটটি এই উদ্যোগকে আরও এগিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা কম। অর্থাৎ ব্রিকস কারেন্সি চালুর পরিকল্পনা আরও পিছিয়ে যাবে এমনকি ব্রিকস কারেন্সি চালুর পরিকল্পনা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে।
লেখক: ডিজিএম, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি

