সকালে যশোরের গ্রামে ঈদের নামাজ আদায় করে বের হতে বেলা বারোটা ছাড়িয়ে গেল। গন্তব্য দেশের দক্ষিণ পশ্চিমের সবশেষ জেলা সাতক্ষীরা। ঢাকা ছাড়ার সময় রাস্তায় দেখেছি শুধুই মানুষ। কোলাহলমুখর রাজধানী শহর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ। জনাকীর্ণ থাকে সবসময়ই। কিন্তু ঈদ এলে এই শহরে মানুষজনকে আটকে রাখা যায়না। তারা বাসের ছাদে ট্রেনের কার্নিশে, লঞ্চ-স্টিমার এমনকি পিকআপ ভ্যান- ট্রাক্টরের বগিতে ঝুলে থেকেও বাড়ি ফেরে।
গ্রামের প্রতি এমন মমতা, নাড়ির টান আর কোনো জাতির মধ্যে আছে কিনা জানি না। থাকলেও তারা জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে ঘরে ফিরে আসে না। কিন্তু আজ এক অদ্ভুত বিষয় দেখা গেলো। এই যে অযুত মানুষের ঈদযাত্রা- রাস্তায় আজ আর কারোই দেখা মিলল না। সবই ফাঁকা।
বিজ্ঞাপন
যশোর থেকে সাতক্ষীরা পঞ্চাশ কিলোমিটার রাস্তার দুধার জুড়ে কোনো কোলাহল নেই। কিছুদূর পরপর গ্রাম্য বসতি। বাজারের দোকানপাট বন্ধ। মহাসড়ক দিয়ে অল্পসংখ্যক যেসব ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল করছে তার আরোহীরা শহুরে নাগরিক।
সাতক্ষীরা থেকে আশাশুনি, কল্যাণপুর। সুন্দরবন লাগোয়া জনপদ। কিলোমিটারের পর কিলোমিটার। মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। ধুয়ে যাচ্ছে ক্ষেতখামার। ধুলোয় মলিন গাছের সবুজপাতাগুলো বিধৌত হয়ে কেঁপে উঠছে বৃষ্টির ধারায়।
ঢাকা থেকে যশোর। সাতক্ষীরা। কালও ছিল লোকারণ্য। আজ সব মানুষের আশ্রয় আপনালয়ে। শহর ছেড়ে গ্রাম দেখছি। মাঠের পর মাঠ সবুজ ধানক্ষেত। শীষভারে নুয়ে আছে সোনালী ধান। যেন একখণ্ড সবুজ জমিন। ঈদুল ফিতর। মুসলমানদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। এই উৎসব বয়ে আনুক শান্তি সম্প্রীতি। ছড়িয়ে পড়ুক অনাবিল আনন্দরাশি।
লেখক: হেড অব নিউজ, ঢাকা মেইল