মালদ্বীপে মানুষের বসতি কম। মহাসাগরের বুকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলোতে যাতায়াতের জন্য নৌকা জাহাজ আর স্পিডবোটই বড় উপায়। পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী সি প্লেনেও এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাতায়াত করা যায়। দেশটিতে কৃষি জমি দুষ্প্রাপ্য। প্রবাল প্রাচীর ঘিরে শুভ্র বালুকারাশির ওপর গড়ে উঠেছে নারিকেল কলা আর আনারসের মতো ফলের বাগান। সবুজ ঝোঁপঝাড়ে প্রকৃতি সেজে আছে অপরূপ মায়াবি কাননের মতো। দূর আকাশপথে মালদ্বীপের সৌন্দর্য আরও মোহময়। মালদ্বীপের আকর্ষণ স্বচ্ছ টলমলে নীল জল। যেখানে সাঁতার কাটে বিভিন্ন বর্ণের মাছ। দেশটির প্রকৃতি ভ্রমণপিপাসুদের কাছে টানে। প্রবালকে মালদ্বীপে বলা হয় অ্যাটোল।
১৯৬৫ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর ক্ষুদ্র এ রাষ্ট্রটি অনেক পথ পাড়ি দিয়েছে। নাগরিকরা শান্তিপ্রিয়। মালদ্বীপের মোট জাতীয় আয়ের ৩৩ শতাংশ আসে পর্যটন থেকে। বৈদেশিক আয়ের ৬০ শতাংশের অবদান ট্যুরিজম। মৎস আহরণ খাতে দেশটির আয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। জিডিপিতে মৎস খাত ১০ শতাংশ জোগান দেয়। বছরে ৪০ থেকে ৫০ মিলিয়ন ডলার আসে এ খাত থেকে। কৃষি ক্ষুদ্র হলেও জিডিপিতে এ খাত থেকে ৬ শতাংশ আসে।
বিজ্ঞাপন
শিল্পখাত মূলত হস্তশিল্প নির্ভর। তারপরও ৭ শতাংশের অবদান আছে জিডিপিতে। দেশে ব্যাংক আছে সাতটি। রূফিয়া মালদ্বীপের মুদ্রার নাম। কিন্তু স্থানীয় বাজারে রূফিয়ার চেয়ে মার্কিন ডলারের প্রচলন বেশি। শুক্রবার (১ এপ্রিল) এক মার্কিন ডলারের বিপরীতে ১৭ দশমিক ৪০ রূফিয়া ছিল বিনিময় হার। লেনদেনে ডলার বহুল ব্যবহৃত। ধিবেহী রাষ্ট্রভাষা। যার বর্ণমালা আরবি হরফের মতো। তবে ব্রিটিশ কারিকুলামে প্রচলিত শিক্ষাপদ্ধতিতে ইংরেজি বাধ্যতামূলক। এর সুফল দেশটির পর্যটন খাতে দৃশ্যমান হয়ে আছে।
মালদ্বীপ পর্যটন খাতে বিদেশি বিনিয়োগ উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এখানে যৌথ উদ্যোগে রিসোর্ট, হোটেল এবং জাহাজ শিল্পসহ হালকা ও মাঝারি বিনিয়োগে সরকার উদার হস্ত। আমেরিকা, ইউরোপ, চীন, ভারতের মতো দেশগুলো এখানে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছে। চীন মালদ্বীপের সড়ক ও সেতু যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। ভারত মালদ্বীপের প্রশাসনিক দক্ষতা অর্জনে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। আর বাংলাদেশের বিপুল জনশক্তি শ্রমঘনখাতে নিয়োজিত রয়েছে বছরের পর বছর ধরে।
/আইএইচ