আজ ৫ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস। স্বেচ্ছাসেবার মাধ্যমে মানবিক উন্নয়ন ও টেকসই অগ্রগতির গুরুত্ব তুলে ধরতেই এ দিনটি প্রতি বছর উদযাপন করা হয়। ২০২৫ সালের প্রতিপাদ্য ঘোষণা করা হয়েছে ‘প্রতিটি অবদানই গুরুত্বপূর্ণ’। এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শুরু হচ্ছে টেকসই উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক বর্ষ ২০২৬-এর বৈশ্বিক যাত্রা।
কেন আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস ২০২৫ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ?
বিজ্ঞাপন
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের রেজোলিউশন A/RES/78/127 অনুযায়ী ২০২৬ সালকে টেকসই উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী এই উদ্যোগের লক্ষ্য স্বেচ্ছাসেবার ভূমিকা আরও শক্তিশালীভাবে তুলে ধরা এবং জাতীয় উন্নয়ন কৌশলে স্বেচ্ছাসেবকদের সম্পৃক্ততা বাড়ানো। পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে স্বেচ্ছাসেবার প্রয়োজনীয়তাকেও নতুনভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
প্রতিপাদ্য: প্রতিটি অবদানই গুরুত্বপূর্ণ
এ বছরের প্রতিপাদ্য জানায়, বয়স, পটভূমি বা দক্ষতা যাই হোক না কেন, প্রত্যেক মানুষের অংশগ্রহণই সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। স্বেচ্ছাসেবার ক্ষেত্র হতে পারে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক, স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক—তবুও প্রতিটি উদ্যোগই সমাজে প্রভাব ফেলে। এই মনোভাব সামাজিক সংহতি, সহানুভূতি ও স্থিতিস্থাপকতা গড়ে তোলে, যা একটি উন্নত বিশ্ব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বিজ্ঞাপন
বিশ্বব্যাপী আয়োজন ও কার্যক্রম
আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক বর্ষ ২০২৬-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হবে নিউইয়র্কের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ হলে। সদস্য দেশগুলো এখানে নিজেদের জাতীয় উন্নয়ন কাঠামোয় স্বেচ্ছাসেবাকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেবে। অনুষ্ঠানটি জাতিসংঘের ওয়েব টেলিভিশনের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। বিভিন্ন দেশে স্থানীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠান ও কার্যক্রমের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবকদের অবদান তুলে ধরা হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে #IVD2025, #IVY2026 এবং #VolunteerYear হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে বৈশ্বিক প্রচারণায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া দূর থেকে কাজ করতে আগ্রহীদের জন্য অনলাইন স্বেচ্ছাসেবার সুযোগও উন্মুক্ত রয়েছে।
আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবসের সূচনা
১৯৮৫ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ আনুষ্ঠানিকভাবে এ দিবস প্রতিষ্ঠা করে। এর উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বব্যাপী স্বেচ্ছাসেবকদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং সমাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে আরও মানুষকে যুক্ত করা। তারপর থেকে জাতিসংঘ স্বেচ্ছাসেবক এবং বিভিন্ন সংস্থা বিশ্বের নানা প্রান্তে বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করে আসছে।
বাংলাদেশে ফায়ার সার্ভিসের উদ্যোগ
দিবসটি উপলক্ষে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম, দুর্যোগ প্রস্তুতি ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে তাদের ভূমিকা তুলে ধরা হবে এই আয়োজনে। তাদের উদ্যোগ দেশের স্বেচ্ছাসেবী শক্তি আরও সুদৃঢ় করতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
স্বেচ্ছাসেবার শক্তি ব্যক্তিকে যেমন উন্নত করে, তেমনি বদলে দেয় সমাজকেও। আর সেই শক্তির সম্মিলিত মূল্যবোধই আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস।
এজেড

