ছোটবেলা থেকেই ছিল বইয়ের প্রতি আগ্রহ। সেই আগ্রহ থেকেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে। শুরুটা হয় সেই ছোটবেলা থেকেই। বাসায় ছিল সেল্ফ ভর্তি বই, সেখান থেকে যখন যা মন চাইত তা-ই পড়া হতো। এভাবে বইয়ের সঙ্গে নিজের অজান্তেই সখ্যতা গড়ে ওঠে।
সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন সময়ে এক বন্ধুর হাত ধরে শুরু হয় নিয়মিত বই পড়ার অভ্যাস। হঠাৎ এক সময় নিজেকে আবিষ্কার করলেন পুরোদস্তুর পাঠক হিসেবে। তারপর মাঝে অনেকটা সময় কেটে গিয়েছে। ততোদনে নানা বইয়ের সঙ্গে ভাব জমিয়ে নিয়েছেন বেশ সহজেই। বিশেষ করে করোনাকালীন সময়টায় তার অবসরের পুরোটা সময় কেটেছে বইয়ের সাথে।
বিজ্ঞাপন
২০২২ সালের শুরুর দিকে উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় আসেন তিনি, এসেই যুক্ত হতে থাকেন বই সম্পর্কিত বিভিন্ন সংগঠন কিংবা ক্লাবে। এরপর নিজ আগ্রহ থেকে শুরু করেন বই নিয়ে আলোচনা কিংবা সমালোচনা। নিজের নামে পরবর্তীতে একটা ফেসবুক পেইজ ও খোলেন তিনি । যেখানে তিনি কোনো বই পড়ার পরে সে বইটি নিয়ে তার ভালোলাগা কিংবা খারাপ লাগার অনুভূতিগুলো জানান ভিডিওর মাধ্যমে। এছাড়াও চেষ্টা করেন কাছের সকল মানুষদের বই পড়ার অভ্যাস কিভাবে গড়ে তোলা যায় তার ব্যাবস্থা করতে।
বলছি বুক রিভিউয়ার হাসনাত আবদুল্লাহ'র কথা। বই নিয়ে কাজ করে যিনি এরইমধ্যে বইপ্রেমীদের কাছে বেশ পরিচিতি পেয়েছেন। নাম হাসনাত আবদুল্লাহ হলেও পেইজের সুবাদে 'বুকিশ হাসনাত' নামেই এখন বেশ পরিচিত।
"Bookish Hasnat" ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে তিনি তার কাজগুলো হাজার হাজার বইপ্রেমী মানুষজনের কাছে পৌঁছে দেন।
বিজ্ঞাপন
সিরামিক ইন্জিনিয়ারিংয়ের মতো কাঠখোট্টা বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করার পাশাপাশি বই নিয়ে তার করা কাজগুলো বেশ গোছানো এবং মনোমুগ্ধকর। ভবিষ্যতে বই ছাড়া ও আরও নানা বিষয় নিয়ে শিক্ষামূলক ভিডিও কনটেন্ট বানানোর আগ্রহ রয়েছে এই তরুণের।
'অমর একুশে বইমেলা ২০২৪' এ তিনি কাজ করেছেন নবীন-প্রবীণ লেখক এবং তাদের বই নিয়ে। বিভিন্ন লেখকের স্বাক্ষাৎকারও নিয়েছেন, চেষ্টা করেছেন লেখকদের ভেতরের গল্প পাঠকের কাছে তুলে ধরতে।
বই নিয়েই কেন কাজ করছেন এ ধরনের প্রশ্নের জবাবে হাসনাত বলেন- বই আমার কাছে শান্তির জায়গা। মনে হয় বইয়ের আশেপাশে থাকলে আমার মাঝে প্রশান্তি বিরাজ করে। তাই ভালোলাগা থেকেই কাজ করছি। আমি বিশ্বাস করি পৃথিবী একদিন খুব সুন্দর হবে এবং সেই সুন্দর পৃথিবীর মানুষেরা সবাই বই পড়বে।
হাসনাত মনে করেন, পৃথিবীর সব বই-ই ভালো বই,পাঠক সে বইকে কীভাবে গ্রহণ করছেন তার ওপর নির্ভর করে বইয়ের মানদণ্ড। তার ইচ্ছা পৃথিবীর সকল মানুষ বইয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলুক। এতে করে তিনি যেমন নিজেকে বইয়ের মতো মেলে ধরতে পারবেন ঠিক তেমনই সবাই বইয়ের মতো উদার হবে, যাকে দেখলে মানুষের মাঝে বড় হবার স্বপ্ন কাজ করবে।